কাজকর্মে নতুন সুযোগ আসতে পারে। কর্ম সাফল্যে আনন্দ লাভ। ব্যবসায় উন্নতি। গবেষকদের পক্ষে শুভ। ... বিশদ
১ ফেব্রুয়ারি সাধারণ বাজেট পেশ করবেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। জোট সরকারের প্রথম পূর্ণাঙ্গ বাজেট। এবং খুব স্বাভাবিকভাবেই আগের দুই ইনিংসে বিজেপির যা দাপট ছিল, তা এই দফায় থাকার সম্ভাবনা খুব একটা দেখা যাচ্ছে না। একে শরিকদের চাপ, তার উপর সঙ্ঘ। ইতিমধ্যেই নির্মলার সঙ্গে দেখা করে সঙ্ঘের এক দফা বার্তা পৌঁছে দিয়ে এসেছেন কৃষিমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান। সাফ বলেছেন, গ্রামমুখী বাজেট হলে ভালো হয়। মানে পরিষ্কার, ১০০ দিনের কাজকে অবহেলা করা যাবে না। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, সরকারিভাবে বিএমএসও কিন্তু এক দাবিই তুলেছে। ১০০ দিনের কাজকে ২০০ দিনে নিয়ে যাওয়া, মজুরি বৃদ্ধি এবং কৃষি ও কৃষিভিত্তিক শিল্পে আর্থিক ত্রাণের ব্যবস্থা। অর্থাৎ, গ্রামীণ অর্থনীতির দিকে নজর। এখানেই কিন্তু শেষ নয়। তাদের আরও দাবি, দ্রুত জিএসটি রিফান্ডের ব্যবস্থা করতে হবে এবং ইপিএসের আওতায় থাকা পেনশনভোগীদের ন্যূনতম পেনশন পাঁচ হাজার টাকায় নিয়ে যেতে হবে। তালিকায় রয়েছে অষ্টম পে কমিশন সংক্রান্ত পদক্ষেপ করার বিষয়টিও। কিন্তু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক অবশ্যই ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়কে করছাড়ের আওতায় নিয়ে আসা এবং পেনশনভোগীদের আয়কেও সম্পূর্ণভাবে করমুক্ত করার দাবি। বণিক মহলের একাংশ ইতিমধ্যেই আয়করে ছাড়ের সীমা ১৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে। এ ব্যাপারে সরকার কতটা গুরুত্ব দেবে, সে বিষয়ে সন্দেহ থাকলেও সঙ্ঘের ১০ লক্ষ টাকা আয়কর ছাড়ের পরামর্শ যে একেবারে উড়িয়ে দিতে পারবে না, তাতে সংশয় নেই।
কিন্তু কেন সাধারণ মানুষ থেকে শিল্পমহল আয়করে রেহাই চাইছে? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বছরের পর বছর পেরিয়ে গেলেও ধুঁকতে থাকা অর্থনীতিকে অক্সিজেন জোগাতে পারছে না মোদি সরকার। বিপুল বাজার দর, চড়া ইএমআই, কমতে থাকা সঞ্চয়—সংসার খরচ চালাতে গিয়েই ফুরিয়ে যাচ্ছে সাধারণ মানুষ। ভোগ্যপণ্যের জন্য খরচ করা আর মধ্যবিত্তের সাধ্যে কুলোচ্ছে না। তার ফলে বাজারে পণ্যের চাহিদা কমছে। বন্ধ হচ্ছে উৎপাদন। ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়করে ছাড় মিললে মধ্যবিত্তের হাতে টাকা থাকবে। সংসারের বাইরেও খরচের সাহস পাবে তারা। ঘুরবে অর্থনীতি। জিডিপি বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে এই পদক্ষেপ। এমনিতেই আর্থিক বৃদ্ধির পূর্বাভাস ৬.৪ শতাংশে নামিয়ে এনেছে খোদ ভারত সরকার। চলতি অর্থবর্ষে শিল্পোৎপাদনও যে অনেকটা মার খেয়েছে, তাও বলছে কেন্দ্রীয় তথ্য। লক্ষ লক্ষ বেকার বাড়ছে দেশে। এই পরিস্থিতিতে মধ্যবিত্তের জন্য তো বটেই, সার্বিকভাবে অর্থনীতির জন্যও আশার আলো দেখাতে পারে আয়করে ছাড়। মার্চেন্টস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল শুভাশিস রায়ের কথায়, ‘গত ১০ বছর ধরে চাকরিজীবীরা আশা করে আছেন, আয়করের বোঝা কমবে। কিন্তু প্রতিবার বাজেটের পর তাঁরা হতাশ হয়েছেন। মধ্যবিত্তকে সুরাহা দিতেই আয়করে ছাড় জরুরি। তাতে দিনের শেষে শিল্প সংস্থাগুলিও লাভবান হবে।’