শেয়ার প্রভৃতি ক্ষেত্র থেকে অর্থ লাভের যোগ। ডাক্তার, মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভ, হস্তশিল্পী প্রভৃতিদের পক্ষে দিনটি শুভ। ... বিশদ
বইমেলায় লোকে বই কিনতে আসে। কেউ হাঁস দেখতে আসে নাকি? উত্তর, হ্যাঁ। কারণ, ৪৮তম কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলায় নজর কেড়েছে এক রাজহাঁস যুগল। হাসো এবং হাসি। বইমেলার ম্যাসকট তারা। এই প্রথম। তাই বিদ্যার দেবী সরস্বতীর বাহনকেই বেছে নেওয়া হয়েছে এই ‘পদে’।
সিস্টার নিবেদিতা ইউনিভার্সিটির ছাত্রছাত্রীদের হাতে তৈরি তারা। দেখে যাতে মানুষের মনে প্রশান্তি আসে, প্রাণ খুলে হাসতে পারে, তাই এই নামকরণ। থিম কান্ট্রি জার্মানির পতাকার রঙে তাদের জামাকাপড়। ভিতরে রয়েছে ব্যাটারিচালিত ফ্যান। কারণ, সেই ‘জোব্বা’ একবার গায়ে গলিয়ে নিলে ভিতরটা অগ্নিকুণ্ডের শামিল। তাই যতক্ষণ সেই ব্যাটারি সচল, হাসো-হাসিও হাসবে। তারপর ব্যাটারি বদল করে ফের শুরু হবে চক্কর। এটাই ছিল ম্যাসকটের সূচি। সেইমতোই সেজে উঠেছে বইমেলা প্রাঙ্গণ। প্রায় প্রতিটি ব্যানারে রয়েছে তাদের ছবি। গিল্ড অফিসের সামনে তাদের লোগো ঘিরে ছবি তোলার হিড়িকও চোখে পড়ার মতো। কিন্তু সরাসরি ‘দর্শন’ না পেয়ে উসখুস করছিল রিমঝিমের মতো অনেকেই। জাগো বাংলা, পত্রভারতী, দে’জ পাবলিশিং, শিশু সাহিত্য সংসদের স্টলে বই কিনতে ঢুকেও অনেকে উঁকিঝুঁকি মারছিলেন। গড়িয়াহাটের উজ্জ্বল তো বন্ধুকে বলেই ফেললেন, ‘আমি চট করে বইগুলো দেখে আসি একবার। ওরা এলে ফোন করিস কিন্তু।’
১টা, ২টো, ৩টে, ৪টে—সেই অপেক্ষার প্রহর ক্রমশ বাড়ছিল। গিল্ড অফিস সূত্রে জানা গেল, হঠাৎ গরম পড়ে যাওয়াতেই হাসো-হাসির সূচিতে সামান্য বদল করা হয়েছে। বিকেলেই স্বমহিমায় হাজির হবে তারা। অবশেষে বিকেল পাঁচটায় ৪ নম্বর গেট থেকে সেকেন্ড লেন ধরে গিল্ড অফিসের সামনে হাত ধরাধরি করে হাজির দুই হাঁস। একেবারে গদাইলস্করি চাল। সঙ্গে ৫-৬ জনের নিরাপত্তা বেষ্টনী। ভিড় ঘিরে ধরল তাদের। সঙ্গে ছবি-ভিডিও তোলার হুড়োহুড়ি। পাঠক-দর্শকদের দিকে হাত নেড়ে তারা চলল ৬ নম্বর গেটের দিকে। বইয়ের প্যাকেট হাতে পিছু নিল সেই জটলাও। ষোলোকলা পূর্ণ তাদের।
কিন্তু তার দেড় ঘণ্টা আগেই স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে রিমঝিমের। দুপুর সাড়ে ৩টেতেও হাসো-হাসিকে স্বচক্ষে দেখতে না পেয়ে মুষড়ে পড়েছে সে। কারণ এবার যে বাড়ি ফেরার পালা...। মাথায় হাত বুলিয়ে বাবা বলেছেন, ‘আজ চল মা। ট্রেনে ভিড় বেড়ে যাবে। ওরা হয়তো ঘুমাচ্ছে। আর একদিন আসব। আর একটু বেলা করে।’