ধর্মকর্মে সঞ্চীয় অংশগ্রহণে মানসিক তৃপ্তি ও সামাজিক সুনাম। পেশাদার শিল্পীদের শুভ সময়। ... বিশদ
আর জি কর কাণ্ডের পর কেন্দ্রীয় রেফারেল ব্যবস্থাসহ দশদফা দাবি তুলেছিলেন জুনিয়র ডাক্তাররা। মেডিক্যাল কলেজসহ অন্যান্য সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকদের সুরক্ষা সুনিশ্চিত করার দাবিও করেছিলেন তাঁরা। সেটা সুনিশ্চিত করতেই রাত্তিরের সাথী প্রকল্প চালু করে ১১৩ কোটি টাকার খরচে পর্যাপ্ত পরিকাঠামো গড়ে তুলছে রাজ্য। সোমবার নবান্নে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ জানান, ১৫ অক্টোবর থেকে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে এই রেফারেল ব্যবস্থা চালু হবে। সেটা ফলপ্রসূ হলে ১ নভেম্বর থেকে রাজ্যজুড়ে কার্যকর হবে এই নয়া ব্যবস্থাপনা।
কী এই নয়া রেফারেল ব্যবস্থা? কোন সময় কোন মেডিক্যাল কলেজ বা হাসপাতালে কত বেড ফাঁকা রয়েছে তা স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতেই জানা যাবে। সেটা খতিয়ে দেখে এবং যথাযথ কারণ দেখিয়ে তবেই একজন রোগীকে স্থানান্তরিত করতে হবে। এই অনলাইন পদ্ধতিতে রোগীর আত্মীয়ের কাছেও যাবে স্থানান্তরিত করার সমস্ত তথ্য।
প্রসঙ্গত, রাজ্যকে জুনিয়র ডাক্তারদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্টও। সেই সমস্ত পরিকাঠামো তৈরির ৯০ শতাংশ কাজ পরবর্তী তিন-চার দিনে শেষ করে, ১৫ অক্টোবর তা চালু করে দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন মুখ্যসচিব। আজ মঙ্গলবার আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে এবং তাঁদের ১০ দফা দাবি নিয়ে রাজ্যের সমস্ত মেডিক্যাল কলেজে সকাল ৯টা থেকে প্রতীকী অনশনের ডাক দিয়েছে ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডাক্তার ফ্রন্ট। বিকেল সাড়ে ৪টের সময় কলেজ স্কোয়ার থেকে ধর্মতলায় জুনিয়র ডাক্তারদের অনশন মঞ্চ পর্যন্ত মিছিলের ডাকও দিয়েছেন তাঁরা। কলেজ স্কোয়ার থেকে মেট্রো চ্যানেল পর্যন্ত এই মিছিলের জেরে ব্যাপক যানজটের সম্ভাবনা রয়েছে মধ্য কলকাতা। আজ পঞ্চমী। কলেজ স্কোয়ার সংলগ্ন এলাকার শহরের অন্যতম তিনটি বড় পুজো রয়েছে— কলেজ স্কোয়ার, মহম্মদ আলি পার্ক ও লেবুতলা পার্ক। সেখানে কাতারে কাতারে দর্শকরা ভিড় জমাবেন। সবমিলিয়ে দুর্ভোগের সাক্ষী হতে পারেন দর্শককূল।
এই পরিস্থিতিতে ‘রাত্তির সাথী’ প্রকল্পের অগ্রগতির হিসেব দিয়ে জুনিয়র ডাক্তারদের অনশন ছেড়ে মানুষকে পরিষেবা দেওয়ার কাজে ফিরে আসার আহ্বানও জানিয়েছেন মুখ্যসচিব। কারণ, সুপ্রিম কোর্টের গাইডলাইন মেনে রাজ্য সরকার ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়েই কাজ করছে। তিনি বলেন, ৭০৫১টির মধ্যে ৩১৮১টি সিসিটিভি ইতিমধ্যে লাগানো হয়ে গিয়েছে। অর্থাৎ ৪৫ শতাংশ। একইভাবে রেস্ট রুম তৈরির কাজ এগিয়েছে ৬২ শতাংশ, ওয়ার্ক রুমের কাজ ৬৫ শতাংশ, শেষ হয়েছে ৬১ শতাংশ অতিরিক্ত আলো লাগানোরও কাজ। ফলে পড়ুয়াদের উচিত, কাজের অগ্রগতির প্রশংসা করা এবং অবিলম্বে কাজে ফেরা। প্যানিক বাটনও চালু হবে ১ নভেম্বর।
অন্যদিকে, ধর্মতলায় রাস্তা আটকে ডাক্তারদের অবস্থান কর্মসূচির বিরুদ্ধে জনস্বার্থ মামলা দায়েরের আর্জি খারিজ করে দিল হাইকোর্ট। সোমবার এবিষয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন আইনজীবী জিষ্ণু চৌধুরী। তাঁর দাবি, ধর্মতলায় রাস্তা আটকে ওই অবস্থান কর্মসূচি চলছে। যানবাহন চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। রাস্তা ছেড়ে দিয়ে বা রাস্তার পাশে তাঁদের বসতে বলা হোক। তবে সুপ্রিম কোর্টে আর জি কর মামলা বিচারাধীন হওয়ায়, আবেদনে সাড়া দেয়নি হাইকোর্ট। এছাড়া ডাক্তাররা অনশন চালিয়ে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করে আরও একটি মামলা দায়ের হয়েছিল হাইকোর্টে। একই যুক্তিতে সেই মামলাটিও খারিজ করে দিয়েছে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।
এই অবস্থায় সোমবার সন্ধ্যায় জুনিয়র চিকিৎসকরা ফের নতুন দাবিতে বউবাজার থানার সামনে অবস্থান বিক্ষোভে বসেন। গভীর রাত পর্যন্ত বউবাজার থানা ঘেরাও করেন আন্দোলনকারীরা। ঘটনার সূত্রপাত বিকেলে। ধর্মতলার মেট্রো চ্যানেলে অনশন মঞ্চে পণ্যবাহী গাড়ি করে চৌকি আনছিলেন চিকিৎসকরা। সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউর উপরে বউবাজার থানা এলাকায় সেটি আটকায় পুলিস। এরপরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন আন্দোলনকারীরা। লালবাজারের দাবি, দুর্গাপুজো উপলক্ষ্যে শহরে সমস্ত পণ্যবাহী যানচলাচলে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। সেই কারণেই পণ্যবাহী গাড়িটিকে আটকানো হয়েছে। অনশন প্রসঙ্গে পুলিস কমিশনার মনোজ ভার্মা বলেন, ১৬৩ ধারা ভঙ্গ করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।