শেয়ার প্রভৃতি ক্ষেত্র থেকে অর্থ লাভের যোগ। ডাক্তার, মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভ, হস্তশিল্পী প্রভৃতিদের পক্ষে দিনটি শুভ। ... বিশদ
পুরীর স্বর্গদ্বারের কাছ থেকে রহস্যজনকভাবে অন্তর্হিত হন দক্ষিণ কলকাতার গড়িয়াহাট এলাকার এক ব্যবসায়ী। তাঁর নাম কৌশিক লাহিড়ী (৫১)। অপহৃতের স্ত্রীর অভিযোগের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই উত্তর ২৪ পরগনার হাবড়া থানা এলাকা থেকে ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করল কলকাতা পুলিস। রবীন্দ্র সরোবর থানা ও লালবাজারের গুণ্ডাদমন শাখার আধিকারিকদের বিশেষ দল ঘটনার সঙ্গে যুক্ত তিন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে। ধৃতদের নাম চারুর আহমেদ বৈদ্য (৩৪) ওরফে চিরু, মিঠুন বৈদ্য (২৩) ও চিত্তরঞ্জন রায়।
লালবাজার সূত্রে খবর, রবীন্দ্র সরোবর থানা এলাকার গড়িয়াহাট রোডের বাসিন্দা কৌশিকবাবু। তিনি একটি ঋণদানকারী সংস্থায় কর্মরত। গত ২২ জানুয়ারি তিনি পুরীতে যান। ২৬ তারিখ পুরী থেকে অপহৃত হন তিনি। প্রাথমিকভাবে পুলিসি তদন্তে জানা যায়, কয়েকজন কৌশিকবাবুকে ‘ফলো’ করছিলেন। পুরী থেকে একটি আই-টেন গাড়িতে তাঁকে জোর করে তুলে নেওয়া হয়। এরপর থেকে তাঁর ফোন বন্ধ হয়ে যায়। অপহরণের পরের দিনই ব্যবসায়ীর স্ত্রী শুচিস্মিতা লাহিড়ীর কাছে একটি অপরিচিত নম্বর থেকে ফোন আসে। ক্ষতিপূরণ হিসাবে মোটা টাকা চাওয়া হয়। স্বাভাবিকভাবেই স্বামীর প্রাণনাশের হুমকি ফোন পেয়ে ভয় পেয়ে যান গৃহবধূ। অপহরণকারীদের মোবাইল নম্বরে প্রাথমিকভাবে ৫০ হাজার টাকা অনলাইন পেমেন্ট করেন শুচিস্মিতা। বাকি ১৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা দ্রুত পাঠানোর দাবি করে অপহরণকারীরা।
পরিস্থিতি বেগতিক দেখে ২৮ জানুয়ারি সন্ধ্যায় রবীন্দ্র সরোবর থানার দ্বারস্থ হন ব্যবসায়ীর স্ত্রী। লালবাজারের নির্দেশে দ্রুত স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম তৈরি হয়। ডেপুটি কমিশনার (দক্ষিণ-পূর্ব ডিভিশন) ভোলানাথ পান্ডে বলেন, দু’টি পৃথক টিম হয়। রবীন্দ্র সরোবর থানার ওসি গৌতম রুজের নেতৃত্বে রেইড টিম মোবাইল লোকেশনের সূত্র খুঁজতে শুরু করে। অন্যদিকে, লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগের গুন্ডাদমন শাখাও পৃথকভাবে তদন্ত শুরু করে। পুরী থেকে অপহরণ হলেও তদন্তকারীরা দেখেন, ‘মুক্তিপণ’এর ফোন আসা নম্বরের লাইভ লোকেশন রয়েছে হাবড়ার ধাপধাড়া গ্রামে। সেখানেই হানা দেয় রেইড টিম। সেখানেই চারুর আহমেদ বৈদ্যর বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয় ব্যবসায়ীকে। হাতেনাতে পাকড়াও করা হয় দুই ভাই চারুর ও মিঠুনকে।
পুলিস সূত্রের দাবি, ধৃতরা জেরায় জানায় আই-টেন গাড়িতে পুরী থেকে হাবড়া নিয়ে আসা হয়েছিল কৌশিকবাবুকে। কিন্তু, সেই গাড়ি হাবড়া থেকে উদ্ধার করতে পারেনি পুলিস। তাহলে গাড়িটি কার? সেখানেই তিন নম্বর অভিযুক্তের নাম ফাঁস করে ধৃতরা। বৃহস্পতিবার সকালে লেক এলাকার বাসিন্দা চিত্তরঞ্জন রায়কে গ্রেপ্তার করে গুণ্ডাদমন শাখার পুলিস। এরপরেই স্পষ্ট হয় অপহরণের মোটিভ। চিত্তরঞ্জনের দাবি, কৌশিকবাবুর থেকে প্রায় ১০ লক্ষ পেত সে। কিন্তু, সেই টাকা ফেরত দিতে টালবাহানার জেরেই অপহরণের ছক কষে চিত্তরঞ্জন।