কাজকর্মে নতুন সুযোগ আসতে পারে। কর্ম সাফল্যে আনন্দ লাভ। ব্যবসায় উন্নতি। গবেষকদের পক্ষে শুভ। ... বিশদ
বারাসত পুরসভার ২৯ নম্বর ওয়ার্ডে বাড়ি কৌশিক মণ্ডলের। তার বাবা সুশীল মণ্ডল পেশায় রাজমিস্ত্রি। তিন বছর আগে বারাসতের রামকৃষ্ণপল্লি এলাকায় সাইবার কাফে খোলে সে। আধার, ভোটার, প্যান কার্ড, জন্ম শংসাপত্র সহ অনলাইনে বিভিন্ন কাজ করত কৌশিক। তদন্তে নেমে পুলিস জানতে পারে, এই কাজের সূত্র ধরেই সমীর দাসের সঙ্গে যোগাযোগ হয় কৌশিকের। মোটা টাকার ‘টোপ’ দিয়ে এই অসাধু চক্রে কৌশিককে নামায় সমীর। মেডিক্যাল ভিসা নিয়ে এদেশে আসা বাংলাদেশিরা ছিল সমীর দাসের ‘ক্লায়েন্ট’। একমাসের ভিসা থাকলেও এদেশে চিকিৎসার জন্য তার বেশি সময় লেগে যেত। ভিসার মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যাওয়া বাংলাদেশিদের নিজের আত্মীয়ের ঠিকানার জাল নথি দিয়ে এদেশের পরিচয়পত্র বানিয়ে দেওয়াই ছিল সমীরের কারবার। ওইসব বাংলাদেশিকে সমীর পাঠাত কৌশিকের কাছে। সমীর ফোন করে কৌশিককে জানিয়ে দিত—‘বাংলাদেশি ক্লায়েন্ট পাঠাচ্ছি, আধার, প্যান, ভোটার কার্ড করে দিতে হবে!’ সেই অনুযায়ী মোটা টাকার বিনিময়ে কৌশিক সাইবার কাফেতে বসে জাল নথি, ভুয়ো ঠিকানা দিয়ে বাংলাদেশি ক্লায়েন্টদের এদেশের পরিচয়পত্র বানিয়ে দিত। সব জেনেও কৌশিক এই কাজ করত বলে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। সমীরের মোবাইল ঘেঁটে কৌশিকের সঙ্গে এ সংক্রান্ত কিছু ‘চ্যাট’ দেখেছে পুলিস। বুধবার রাত ১০টা নাগাদ পুলিস হানা দেয় কৌশিকের সাইবার কাফেতে। সেখান থেকেই কৌশিককে নিয়ে আসা হয় থানায়। ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদের পর কৌশিক মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করে পুলিস। তাকে জেরা করেই এই চক্রের সঙ্গে যুক্ত বারাসতের বাসিন্দা চন্দন চক্রবর্তীকে পাকাড়াও করে পুলিস। এই চক্রের সঙ্গে যুক্ত বারাসতের কয়েকজনের নাম ইতিমধ্যেই হাতে এসেছে পুলিসের। কিন্তু তারা বেপাত্তা, ফোন বন্ধ। পুলিস নিশ্চিত এই চক্রের মূল মাথা গা-ঢাকা দিয়েছে। তবে, এই মাথাকে ধরতে জাল পেতেছে পুলিস।
এ প্রসঙ্গে বারাসত পুলিস জেলার সুপার প্রতীক্ষা ঝাড়খড়িয়া বলেন, ধৃত সমীর বাংলাদেশিদের পাঠাত কৌশিকের কাছে। কৌশিকের সঙ্গে সমীরের এই সংক্রান্ত কথা হতো। পাশাপাশি ফোনে কথা হতো চন্দনের সঙ্গেও। চক্রের মূল মাথাকে এবার গ্রেপ্তার করা হবে। এ নিয়ে কৌশিকের বাবা সুশীল মণ্ডল বলেন, ছেলে স্থানীয় এক যুবকের সঙ্গে সাইবার কাফের ব্যবসা খুলেছিল। অনলাইনে কাজকর্ম করত বলেই জানি। পুলিস ছেলেকে গ্রেপ্তার করেছে, তবে কী কারণ জানি না।