কাজকর্মে নতুন সুযোগ আসতে পারে। কর্ম সাফল্যে আনন্দ লাভ। ব্যবসায় উন্নতি। গবেষকদের পক্ষে শুভ। ... বিশদ
পুরো নাম, গদাইচন্দ্র দে। ১৬ বছর আগে কলকাতা পুলিসের গোয়েন্দা বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার পদ থেকে অবসর নিয়েছেন। এখন ৭৬ বছর বয়স। দিন কাটে চারটি ভিন্টেজ গাড়ি নিয়ে। নিজে চড়েন ছোট একটি গাড়ি। গদাইবাবু এককালে দাপিয়ে দুষ্কৃতী পাকড়াও করেছেন। এখনও গোঁফ আর চোখের আড়ালে লুকিয়ে আত্মবিশ্বাস। প্রশ্ন করা হল, ‘অমন একখানি আস্ত গাড়ি মাটির তলায় গেল কীভাবে?’ গদাই শুরু করলেন গল্প- ‘১৯৪১-’৪২ সালে যিনি গভর্নর ছিলেন, তিনি তাঁর স্ত্রীর অনুরোধে বাবার এই গাড়িটির দখল নিতে চেয়েছিলেন। বাবা হঠাৎ জানতে পেরে যান। তারপর মাটি চাপা দিয়ে লুকিয়ে রেখে দিতে বলেন।’ গদাইয়ের বাবা হরিমোহণ দে ১৯৩৮ সালে এই এডলার গাড়িটি আনিয়েছিলেন জার্মানি থেকে। কলেজ স্ট্রিটে বইয়ের দোকান তাঁদের। গাড়ি মাটির নীচ থেকে তুলে সদ্য যুবক গদাই ভেবেছিলেন, এ তো মাটির ডেলা ছাড়া আর কিছুই নয়। তবে ইঞ্জিনে কিছু হয়নি। উপরে ঢাকাও আছে। কিন্তু এখন যন্ত্রাংশ পাওয়া কঠিন। তারপর নিজেরাই মেরামত করেন।
পুলিসে চাকরি করার সময় এই লাল গাড়ি নিয়ে দু’একবার লালবাজারে গিয়েছিলেন গদাইবাবু। ‘ভিড় জমে যেত বুঝলেন। তখন আমি হেয়ার স্ট্রিট থানার সাব ইনসপেক্টর। সালটা ১৯৮৫-৮৬’- মনে করে বললেন গদাইবাবু। প্রশ্ন করা হল, ‘মাটি থেকে গাড়ি তোলার পর বাবা কি বললেন?’ উত্তর, ‘মাটির তলা থেকে গাড়ি তুলে বাবাকে বললাম, তুমি আসবে? বাবা বললেন, তুমি কেষ্টবাবুকে বলো। গাড়ি স্টার্ট হলে, চালিয়ে নিয়ে চলে এস। দেখি কেমন পারো? তারপর আমহার্স্ট স্ট্রিটে নিয়ে আসা হল। সেখানে সারানো হল। এরপর গাড়ি এল বাড়ি।’
গদাইবাবুর ছাদের নীচে ভিন্টেজ গাড়ির সমাহার। ভবানীপুর থানার ওসি থাকার সময় চোর ধরতে গিয়ে চোখে পড়েছিল একখানা ভিন্টেজ কার। দেখা মাত্রই সেই ‘স্ট্যান্ডার্ড লিটল নাইন’ গাড়িটি নিয়ে চলে আসেন। এছাড়াও রয়েছে মরিস ৮, অস্টিন। সাদা এডলার এখন লাল। আর শিবরাম চক্রবর্তীর ‘গদাইয়ের গাড়ি’ গল্পের গদাই এখন বলেন, ‘অবসর জীবন সুন্দরই কাটছে গাড়িগুলির সঙ্গে।’