চাকরিজীবীদের কর্মোন্নতি ও পদোন্নতির সঙ্গে বেতন বৃদ্ধির যোগ। যানবাহন চালনায় সতর্ক হন। ... বিশদ
রাত দু’টোয় পুলিস আচমকা হানা দেয় সেই গোপন সুড়ঙ্গে। লালবাজার ও বিহার পুলিসের স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের (এসটিএফ) যৌথ অভিযানে তারাপুরে হদিশ মিলল অস্ত্র ভাণ্ডারের। এসটিএফের অভিযানে গ্রেপ্তার করা হয়েছে জামাইবাবু ও শ্যালককে। ধৃতদের নাম যথাক্রমে মহম্মদ মনজির হোসেন (২৭) ও মহম্মদ নাসিম (৩৮)। তারা দু’জনেই বেআইনি অস্ত্র কারবারের আঁতুড়ঘর মুঙ্গেরের বাসিন্দা। ধৃতদের ট্রানজিট রিমান্ডে কলকাতা নিয়ে আসা হচ্ছে।
গত শনিবার শিয়ালদহের বৈঠকখানা বাজার এলাকা থেকে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে এসটিএফ। ধৃতের নাম মহম্মদ ইসরাইল খান। তার সঙ্গের ব্যাগ থেকে মেলে ৩টি ওয়ান শটার, দু’টি পিস্তল ও ৯০ রাউন্ড কার্তুজ। সেই অস্ত্র বাজেয়াপ্ত করে এসটিএফ। অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বিহারের যোগসূত্র পান গোয়েন্দারা। ২০১৪ সালে সিঁথি এলাকায় ডাকাতি কেসের দাগী অপরাধী ইসরাইল জেরায় জানায়, বিহার থেকে অস্ত্র ঢুকত শহরে। সে-ই ছিল অস্ত্র কারবারিদের চেইনের ‘সেকেন্ড হ্যান্ড’। বিহার থেকে অস্ত্র নিয়ে শহরের এক মিডলম্যানের হাতে ডেলিভারি দেওয়াই ছিল ইসরাইলের কাজ।
সেই তথ্য পেয়ে বুধবার গভীর রাতে বিহারের তারাপুর থানা এলাকার মিল্কি খানপুর মৌজায় হানা দেয় লালবাজারের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স। সেখানে আগে থেকে প্রস্তুত ছিল বিহার পুলিসের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স ও তারাপুর থানার পুলিস। মহম্মদ মনজির হোসেনের বাড়িটিকে ঘিরে ফেলে পুলিস। আপাতভাবে প্লাস্টার করা দেওয়ালের বাড়ি। মাথায় টিনের ছাদ। হুড়মুড়িয়ে সেখানে ঢুকতেই পুলিস দেখে খাটের পিছন দিয়ে বাঁশের সিঁড়ি নেমে গিয়েছে এক গোপন সুড়ঙ্গে। সেই সুড়ঙ্গে প্রবেশ করতেই দেখা যায় অস্ত্রের ভাণ্ডার। দুই অভিযুক্তকে অকুস্থল থেকেই হাতেনাতে গ্রেপ্তার করা হয়।
কলকাতা পুলিসের অতিরিক্ত পুলিস কমিশনার (৫) সোলোমন নেশাকুমার জানিয়েছেন, ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হয়েছে ৭ এমএম পিস্তলের ছ’টি বডি ও বাট, একটি লেদ মেশিন, একটি ড্রিল মেশিন, একটি পালিশ মেশিন। এছাড়াও প্রচুর পরিমাণে আগ্নেয়াস্ত্র তৈরির কাঁচামাল বাজেয়াপ্ত হয়েছে। ধৃতদের প্রাথমিকভাবে জেরা করে পুলিস জেনেছে, বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা, পশ্চিমবঙ্গ সহ পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব ভারতের বিভিন্ন জেলা থেকে সেখানে আগ্নেয়াস্ত্রের বরাত আসত নিয়মিত। কারখানায় অস্ত্র তৈরির পর তা নানা হাত ঘুরে পৌঁছে যেত বিভিন্ন রাজ্যে। কীভাবে এই কারবার চলত, অন্য কোথাও তাদের অস্ত্রভাণ্ডার রয়েছে কি না, তা এখন এসটিএফের নজরে। কলকাতায় এনে ধৃতদের জেরা করে এই অস্ত্রচক্রের অন্যদের খোঁজ পেতে চায় পুলিস।