নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: ধর্মীয় বিভাজন, কালো টাকা এবং হিন্দুত্ব। ২০১৪ সালে ক্ষমতা দখলের নির্বাচনে এই ছিল বিজেপির প্রধান তিন প্রচারের অভিমুখ। এই প্রচারের জোরেই ২০১৪ এবং ২০১৯ দুই বারই অনায়াসে লোকসভায় জয় এসেছে বলে মনে করছে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব। কিন্তু ২০২৪ সালে এই তিনটি অস্ত্রকে যথাযথভাবে ব্যবহার করা হয়নি বলে ধারণা গেরুয়া শিবিরের। সেই কারণেই আসেনি গরিষ্ঠতা। এবার এই ঩তিন এজেন্ডাকেই যে কোনও নির্বাচনের পাখির চোখ করা হবে বলে স্থির হয়েছে। 
লোকসভা ভোটের প্রচার পর্বে বিরোধীদের উত্থাপিত মূল্যবৃদ্ধি এবং বেকারত্বের ইস্যুতে দিশাহারা মোদি সরকার হঠাৎ ব্ল্যাক মানি সংক্রান্ত শ্বেতপত্র সংসদে পেশ করেছিল। লক্ষ্য ছিল, বিরোধীদের চাপে ফেলে দেওয়া। টাকা পাচার সংক্রান্ত আইনকে আরও কঠোর করা থেকে শুরু করে একঝাঁক নতুন অভিযানের সিদ্ধন্ত নেওয়া হয়েছিল সেই শ্বেতপত্রে। এবার ব্ল্যাক মানি ইস্যুকে আবার জোরদারভাবে প্রচার ও অভিযানের ভরকেন্দ্র করা হচ্ছে। স্থির হয়েছে, কালো টাকা উদ্ধার সংক্রান্ত একটি জাতীয় নীতি গ্রহণ করা হবে। অর্থমন্ত্রকের নেতৃত্বে একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটিও হবে। সেই কমিটি সুপারিশ করবে যে, কোন কোন টাকা এবং আয় অথবা সঞ্চয়কে কালো টাকা বলা হবে। এই অভিযানেরই প্রথম ধাপ হিসেবে বিদেশে সম্পত্তি থাকলে মোটা টাকা জরিমানা করার কথা বলা হয়েছে। জরিমানার অঙ্ক হবে সর্বাধিক ১০ লক্ষ টাকা।
প্রশ্ন হল কাকে বলে বিদেশে সম্পত্তি থাকা? তারও তালিকা দিয়েছে আয়কর দপ্তর। আয়কর রিটার্নে বিদেশে যে কোনও ধরনের আর্থিক লেনদেন এবং সম্পত্তি কিংবা লগ্নি উল্লেখ করতে হবে। বিমার চুক্তি, বিদেশি স্টক মার্কেটে শেয়ার ক্রয়, কোনও ট্রাস্টে যুক্ত হওয়া কিংবা অংশিদারিত্বকেও বিদেশে থাকা সম্পদ হিসেবেই গ্রাহ্য করা হবে। আয়করের রিটার্নে এর কোনও একটিরও যদি উল্লেখ না থাকে, তাহলেই সেটি কালো টাকা হবে। ব্ল্যাক মানি নিয়ে পুনরায় অর্থমন্ত্রক সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে। কমিটি এবং জাতীয় নীতি গঠনের পর কালো টাকা সংক্রান্ত আই঩নের সংশোধনী বিল আনার কথাও ভাবা হয়েছে। সেন্ট্রাল বোর্ড অব ডাইরেক্ট ট্যাক্সেসকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে অঘোষিত আয় বলতে কী কী বলা হবে, তার নতুন তালিকা তৈরি করতে। অর্থাৎ মোদি সরকার আবার ব্ল্যাক মানি ইস্যুকে বিরোধীদের বিরুদ্ধে সফল অস্ত্র হিসেবে বিবেচনা করছে।