দেশ

বারামতী ফেরায় না শারদকে, কাকার ইমেজেই কুঁকড়ে দোর্দন্ডপ্রতাপ অজিত

সমৃদ্ধ দত্ত, বারামতী: নন স্টপ বুকিং। অ্যাকাউন্টস ডিপার্টমেন্ট। ট্রাফিক স্টাফ। পাস কাউন্টারস। রিজার্ভেশন। কাস্টমার কেয়ার সেন্টার। গ্রিভ্যান্স সেল। নেমপ্লেট লেখা আলাদা আলাদা কর্পোরেট ধাঁচের চেম্বার। সবুজ ঘাসের লনে কংক্রিটের বেঞ্চ। সর্বদাই সাহায্য করার জন্য ইউনিফর্ম পরা কর্মী। চারদিকে মহারাষ্ট্র পুলিশের আউটপোস্ট। এটাই নাকি বাসস্ট্যান্ড। 
এখন বাজে দুটো পাঁচ। তিনটে পর্যন্ত লাঞ্চ আওয়ার। তিনতলায় একটি জায়গা করে দেওয়া হয়েছে যেখানে কর্মী অফিসারা লাঞ্চ করবেন। সেখানে যাওয়ার সময় তিনটি ফ্লোরের সব আলো নিভিয়ে দেওয়া হল। সব ফ্যান বন্ধ। সব এসির সুইচ অফফ। এটা নিছক একটি সমবায় ব্যাঙ্ক। যার অ্যাসেট ৪৮০০ কোটি টাকা। 
শহরের সামান্য বাইরে মহারাষ্ট্র ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনের রাস্তার ডানদিকে সারিবদ্ধ কিছু ছোট ছোট প্লেন দেখা যায়। এটা চাটার্ড বিমান ল্যান্ডিং ও টেক অফের রানওয়ে এবং হ্যাঙ্গার। একরের পর একর জুড়ে অসংখ্য ভবন, পার্ক, খেলার মাঠ, ক্ষুদ্র ইনডোর স্টেডিয়াম ঘেরা কর্মযজ্ঞের নাম বিদ্যাপ্রতিষ্ঠান। কিন্ডারগার্টেন থেকে বায়োটেকনোলজি। ইঞ্জিনিয়ারিং থেকে মেডিক্যাল কলেজ সবই এই  ক্যাম্পাসে। 
এটা হল একটি ব্লকের সদর জনপদ বারামতী। ভারতে এরকম কোনও ব্লক শহর কি পাওয়া যাবে যেখানে প্রবেশ করলে স্বচ্ছলতা এবং দৈনিক কর্মব্যস্ততার এমন উজ্জ্বল তরঙ্গ টের পাওয়া যায়? ওয়ান ওয়ে ছাড়া রাস্তা খুব কম। মার্কেটগুলিতে প্রবেশ করলে দেখা যাচ্ছে প্রতিটি দোকানে পণ্যের স্টক উপচে পড়ছে। স্কুটার-বাইক আর গাড়িতে গাড়িতে ছয়লাপ প্রতিটি মার্কেটের পার্কিং। সবথেকে বড় যে বিষয়টি চোখে পড়ছে তা হল, নারীদের ক্ষমতায়ন। সর্বত্র নারীকর্মীদের প্রবল উপস্থিতি। নারীরা যাতে বেশি করে বাইরের কাজে যুক্ত হতে পারেন, সেই লক্ষ্যে বারামতীতে চালু রয়েছে কমিউনিটি কিচেন। দুপুরের খাবার সেইসব কমিউনিটি কিচেন থেকে সাপ্লাই করা হয় সরকারি-বেসরকারি অফিস কিংবা মার্কেট অথবা ব্যাঙ্কে। এইসব কিচেনও চালান নারীরা। 
এই হল বারামতী। এই আশ্চর্য উন্নয়ন মডেল কার গাইডেন্সে হয়েছে? বারামতীর ফার্স্ট ফ্যামিলির গডফাদারের নির্দেশিকায়। শারদ পাওয়ার। বারামতীতে প্রবেশ করার পর মনে হবে যেন একটি জেলাসদরে পা রাখলাম। একটি ব্লকের এহেন অবিশ্বাস্য উন্নতির নাম হওয়ার উচিত বারামতী মডেল। এখানকার প্রতিটি চার লেন-ছ’লেনের হাইওয়ের দু’দিকে কাটআউটে শারদ পাওয়ারের ছবি। 
এহেন শারদ পাওয়ার ৮৩ বছর বয়সে এসে দেখছেন, তাঁর জীবনের শেষ ইনিংসে ফের এক পারিবারিক মহাভারত অপেক্ষা করে আছে। আপাতত বারামতী তাই পাওয়ার সাম্রাজ্যে কুরুক্ষেত্র। বারামতী সমবায় ব্যাঙ্কের ম্যানেজিং ডিরেক্টর রবীন্দ্র বাঁকর দুঃখিত কণ্ঠে বললেন, এখন আমাদের শ্যাম রাখি না, কুল রাখি অবস্থা। শারদ পাওয়ারের স্থান সবার আগে। কিন্তু অজিত দাদাও কম প্রভাবশালী নন। বারামতীর বিধায়ক অজিত পাওয়ারের বিরুদ্ধে শারদ পাওয়ার নিজের আর এক নাতিকে প্রার্থী করেছেন। তরুণ যুগেন্দ্র পাওয়ার। যিনি আবার অজিত পাওয়ারের আপন ভাইপো। বারামতী কাকে ভোট দেবে? সবাই তো পাওয়ার পরিবারের? বাঁকড়ে বললেন, আমাদের যে কী সাংঘাতিক ধর্মসঙ্কট  বুঝবেন না। আমাকেই দেখুন। আমার স্ত্রী শারদজির দলের সমর্থক। আমার দুর্বলতা আবার অজিত দাদার দিকে। এবার বলুন তো, কীভাবে বিচার করব যে কে জিতবে?
কাকার দল ভেঙে বিধায়ক, এমপি এবং নিবাচনী প্রতীক পর্যন্ত ছিনিয়ে নিয়েছেন অজিত পাওয়ার। কিন্তু শারদ পাওয়ার অন্য ধাতুতে তৈরি। ওই দল ভাঙার পর প্রথম যুদ্ধে অর্থাৎ লোকসভা ভোটে অজিত পাওয়ারকে চরম ধাক্কা দিয়েছেন তিনি। অজিত বারামতীতে যথেষ্ট জনপ্রিয়। হয়তো তিনিই এগিয়ে। কিন্তু আবেগ তাঁকে ব্যাকফুটে রাখছে। শারদ পাওয়ার এসে দাঁড়ালে বারামতী তাঁকে ফেরাতে পারে না। অতএব নিজের ভাইপোর সামনে দোর্দন্ডপ্রতাপ অজিত যথেষ্ট সঙ্কুচিত। অজিত পাওয়ারের কাছে জীবনপণ চ্যালেঞ্জ। এই ভোটে পরাস্ত হওয়া মানে রাজনৈতিকভাবে তিনি প্রায় নিঃস্ব হয়ে যাবেন। শারদ পাওয়ার নামক মিথ জীবনে যে কত মিরাকল ঘটিয়েছেন, তার ইয়ত্তা নেই। অতএব প্রেস্টিজ ফাইটে তিনি হারবেন এই পূর্বাভাস কেউ করবে না! 
1d ago
কলকাতা
রাজ্য
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

বিজ্ঞান গবেষণা ও ব্যবসায় আজকের দিনটি শুভ। বেকাররা চাকরি প্রাপ্তির সুখবর পেতে পারেন।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.৫৮ টাকা৮৫.৩২ টাকা
পাউন্ড১০৫.৮০ টাকা১০৯.৫৪ টাকা
ইউরো৮৮.০৩ টাকা৯১.৪০ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা