বিনোদন

‘সাজানো বাগান’ রেখেই বিদায়
মনোজ মিত্র (১৯৩৮-২০২৪)

মাটির দাওয়া থেকে অকেজো শরীরটাকে কোনওক্রমে টেনে নিয়ে চলেছেন এক বৃদ্ধ। তাঁর ‘খাঁচায় দম নেই, হাঁটুতে বল নেই’, কিন্তু প্রাণাধিক প্রিয় বাগানটার জন্য একবুক মায়া আছে। আর তা কাটিয়ে স্বর্গে যেতেও রাজি নন তিনি। বক্স অফিসে ঝড় তোলা ‘বাঞ্ছারামের বাগান’ সিনেমার এই ‘বাঞ্ছা’ চরিত্রে প্রাণ প্রতিষ্ঠাকারী মনোজ মিত্র মঙ্গলবার পৃথিবীর রঙ্গমঞ্চের মায়া কাটিয়ে পাড়ি দিলেন সুদূর নক্ষত্রলোকে। মঞ্চই ছিল তাঁর প্রাণ। মনোজবাবুর নাটক ‘সাজানো বাগান’ অবলম্বনেই তপন সিংহ বানিয়েছিলেন ‘বাঞ্ছারামের বাগান’। জীবনের প্রথম সিনেমায় এক বৃদ্ধের চরিত্র তাঁকে জনপ্রিয় করে তোলে। ঠিক তেমনই নাট্যমঞ্চেও প্রথম সাড়া ফেলেছিলেন অশীতিপর এক বৃদ্ধের ভূমিকায় অভিনয় করে। নটসূর্য অহীন্দ্র চৌধুরী আশ্চর্য হয়েছিলেন যখন তিনি শোনেন, ওই বৃদ্ধের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন ২১ বছরের এক ছোকরা— মনোজ মিত্র। সেই নাটক ‘মৃত্যুর চোখে জল’, তাঁরই লেখা। বাংলা চলচ্চিত্রে ভিলেনের ভূমিকায় মনোজ মিত্রকে কখনও ভোলা সম্ভব নয়। উৎপল দত্তের পরে সিরিও কমিক ভিলেন চরিত্র তিনি পর্দায় দারুণভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। ‘শত্র‌‌‌ু’, ‘পূজা’, ‘রাখি পূর্ণিমা’ তেমনই কয়েকটি ছবি। 
শখের থিয়েটার দল থেকে শুরু করে বহুরূপীর মতো খ্যাতনামা গ্রুপ, সবারই পছন্দ মনোজ মিত্রের নাটক। কারণ, বিষয়ের সারল্য। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অভিনীত হয়েছে তাঁর লেখা নাটক। হাবিব তনবির করেছেন ‘রাজদর্শন’এর হিন্দি রূপান্তর ‘নন্দ রাজা মস্ত হ্যায়’। রাজিন্দার নাথের পরিচালনায় ‘দম্পতি’র হিন্দি রূপান্তর ‘সাঁইয়া বেইমান’। এছাড়া ‘খেল খিলাড়ি খেল’, ‘বাগিয়া বাঞ্ছারাম কি’, ‘কিস্সা হেকিম সাহাব’ প্রভৃতি। রতন থিয়াম, ওয়ামান কেন্দ্রের মতো ভারত বিখ্যাত পরিচালকরা কাজ করেছেন মনোজ মিত্রের নাটক নিয়ে। বহুরূপীর মতো ঐতিহ্যবাহী দল তাঁর লেখা ‘চাক ভাঙা মধু’, ‘রাজদর্শন’, ‘নরক গুলজার’ প্রভৃতি প্রযোজনা করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় বন্ধু তথা চলচ্চিত্র পরিচালক পার্থপ্রতিম চৌধুরীর সঙ্গে গড়ে তোলেন নাটকের দল ‘সুন্দরম’। তবে নাটকের প্রতি তাঁর আকর্ষণ আরও আগে। ১৯৩৮ সালের ২২ ডিসেম্বর অধুনা বাংলাদেশের সাতক্ষীরা জেলার ধুলিহার গ্রামে তাঁর জন্ম। বাবা অশোককুমার মিত্রের ছিল বদলির চাকরি। তাই ছোটবেলায় বাড়িতেই পড়াশোনা শুরু। দুর্গাপুজোর সময় তাঁদের বাড়ির উঠোনে যাত্রা হতো। সেই যাত্রা দেখেই অভিনয়ের প্রতি ঝোঁক। দেশভাগের পর বসিরহাটে এসে পাকাপাকি বসবাস শুরু করে মিত্র পরিবার। সেখানেই প্রথম স্কুল। তারপর স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে দর্শনশাস্ত্রে স্নাতক হয়ে ভর্তি হন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে। করেন ডক্টরেট। কর্মজীবন শুরু হয় সিউড়ির বিদ্যাসাগর কলেজে অধ্যাপনা করে। তারপর রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক বিভাগে অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন। ১৯৮৫ সালে সেরা নাট্যকার হিসেবে সঙ্গীত নাটক অ্যাকাডেমি পুরস্কার পান। পরের বছর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে সম্মানিত করে। ২০১২ সালে পান দীনবন্ধু পুরস্কার। ‘বাঞ্ছারামের বাগান’ ছবিতে অভিনয় করে ১৯৮০ সালে সেরা অভিনেতার জন্য ফিল্মফেয়ার পুরস্কারও পেয়েছিলেন। তপন সিংহ ছাড়াও তিনি অভিনয় করেছেন সত্যজিৎ রায়, বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত, গৌতম ঘোষ, বাসু চট্টোপাধ্যায়, তরুণ মজুমদার, শক্তি সামন্ত, অঞ্জন চৌধুরী সহ আরও অনেক পরিচালকের ছবিতে। বাংলা নাট্যমঞ্চ এবং ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি এক শক্তিশালী অভিনেতাকে হারাল।
1d ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

বিজ্ঞান গবেষণা ও ব্যবসায় আজকের দিনটি শুভ। বেকাররা চাকরি প্রাপ্তির সুখবর পেতে পারেন।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.৫৮ টাকা৮৫.৩২ টাকা
পাউন্ড১০৫.৮০ টাকা১০৯.৫৪ টাকা
ইউরো৮৮.০৩ টাকা৯১.৪০ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা