আমরা মেয়েরা

বাঁধা গতের বাইরে চাকরির সুযোগ: ডিজিটাল মার্কেটিং

চলতি বিষয় না পড়লে চাকরি বা আয়ের সুযোগ কেমন? তা নিয়েই চলছে এই বিভাগ। মতামত জানালেন বিশেষজ্ঞরা। 
 
ধুনিক প্রজন্মের বড়ই বদনাম। তারা নাকি সারাক্ষণ শুধু মোবাইলে মুখ গুঁ‌জে থাকে। টেক দুনিয়ায় বন্দি তাদের জগৎ। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটা কিন্তু মস্ত বড় গুণ। কারণ আগামীতে পৃথিবীর গতিবিধিও টেক পথেই হাঁটবে। তাই ব্যবসা থেকে চাকরি সবই হয়ে উঠবে টেক নির্ভর। আর সেই কারণেই  আজকের আলোচনার বিষয় ডিজিটাল মার্কেটিং। এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞ সনাতন বড়ুয়া বলেন, ডিজিটাল মার্কেটিং আসলে একটা কোনও পেশা নয়। এটা একটা বড় ছাতা, যার তলায় নানা ধরনের পেশা ঢুকে রয়েছে। এবং প্রতিটি ক্ষেত্রেই রোজগারের প্রচুর সুযোগ। কিন্তু এর জন্য চাই সঠিক পড়াশোনা এবং পথ নির্বাচন।

বিষয়ের খুঁটিনাটি
আধুনিক সময়ে নিজস্ব ব্যবসা বাড়িয়ে নিয়ে যেতে এই মাধ্যমটি অনবদ্য, জানালেন সনাতনবাবু। তাঁর কথায়, ‘নিজের প্রোডাক্ট বিক্রি করার জন্যই শুধু নয়, সে বিষয়ে লোককে জানানোর জন্যও ডিজিটাল মার্কেটিং এখন সবচেয়ে ভালো উপায়। তবে এই মার্কেটিং বা বিক্রির জন্য কিছু পদ্ধতি মেনে চলতে হবে। আর সেই নিয়মগুলো নিয়ে প্রচুর পড়াশোনা করে তবেই এগতে হবে।’ কীভাবে করবেন এই পড়াশোনা। আর কোন কোন বিষয়ই বা রাখবেন পড়াশোনার গণ্ডিতে? সনাতনবাবু বললেন, কোনও কিছু বিক্রি করতে গেলে তার বিজ্ঞাপন করতে হয়। ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম বা সমাজ মাধ্যমে যে বিজ্ঞাপন করা হয় সেটাই ডিজিটাল মার্কেটিং। এই বিজ্ঞাপন করার আগে সে বিষয়ে পড়াশোনা করে নিতে হয়। তারপর বিষয়টা নিয়ে একটা কনটেন্ট বা লেখা তৈরি করতে হয়। তারপর সেই লেখা কিছু ছবি সহ বেশ আকর্ষণীয় করে দর্শকের কাছে উপস্থাপন করাকেই পোশাকি ভাষায় বলা হয় ডিজিটাল মার্কেটিং।

কনটেন্ট-এর নানারকম
 এক্ষেত্রে ভাষা বিষয়ে সচেতন হতে হবে। কথ্য ভাষায় কনটেন্ট লিখলে তা সকলের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে। একদম সাধারণ মানুষও যাতে বিষয়টা বুঝতে পারে এবং সে বিষয়ে আগ্রহী হয় সেটা কনটেন্টের মাধ্যমে করতে হবে। সেই কারণেই ভাষাটা খুবই সরল হওয়া দরকার। 
 দ্বিতীয়ত, বিষয়টা আধুনিক হতে হবে। একইসঙ্গে অন্য ধরনেরও হতে হবে। সাধারণ বিষয় নিয়েও কীভাবে একেবারে ভিন্ন ধাঁচের কনটেন্ট তৈরি করা যায় সে বিষয়ে পড়াশোনা করতে হবে।
 ডিজিটাল মার্কেটিং-এর একটা বড় অংশ এসইও বা সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন। অর্থাৎ এমন কনটেন্ট তৈরি করতে হবে যাতে গুগুল সার্চ-এ বিষয়টা দিলে আপনার কনটেন্টটা সামনের সারিতে আসে। এই বিষয়টা কীভাবে করা যায় তার জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ প্রয়োজন। 
 নিজের প্রোডাক্টের কেমন বিজ্ঞাপন করলে তা অনলাইন দর্শকের কাছে সহজে পৌঁছবে এবং আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে সেটা ঠিক মতো খেয়াল করুন। তা নিয়ে পড়াশোনা করে তবেই বিজ্ঞাপন তৈরি করতে হবে।

পাঁচটি ভাগ
ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের কিছু শাখা রয়েছে। মূলত পাঁচটি ভাগে ভাঙা যেতে পারে। 
 ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং: এখন নেট জগতে ‘ইনফ্লুয়েন্সার’ শব্দটি খুবই প্রচলিত। সমাজ মাধ্যমে এঁদের নিজস্ব পেজ ও হ্যান্ডেল থাকে। সেখানে প্রচুর ফলোয়ারও থাকে। ফলে এরা যখন কোনও বিষয়ে ভালো-মন্দ বিচার করে তখন একটা বিপুল সংখ্যক লোকের কাছে (ফলোয়ার) তা পৌঁছে যায় এবং তারা সেই বিষয়টাকে গুরুত্ব দিতে শুরু করে। ফলে এই ধরনের ইনফ্লুয়েন্সার দিয়ে অনেকেই নিজেদের জিনিসের বিজ্ঞাপন করাতে চান।
 কনটেন্ট মার্কেটি: এই বিষয়ে আগেও বলেছি, আবারও বলছি। নিজের জিনিসটা সম্বন্ধে সমস্ত খুঁটিনাটি খুবই আকর্ষণীয় করে ডিজিটাল দর্শকের সামনে তুলে ধরার নামই কনটেন্ট মার্কেটিং। বিজ্ঞাপনি ভাষা, চমক ইত্যাদি প্রচুর পরিমাণে রাখলে ভালো হয়। ভাষার সারল্য এবং রস বজায় রাখা দরকার। একই সঙ্গে অল্প কথায় অনেক কিছু বলে ফেলার দক্ষতাও চাই। 
 ইমেল মার্কেটিং: সমাজ মাধ্যমের প্রচণ্ড জনপ্রিয়তা ও দাপট থাকলেও নিজের প্রোডাক্ট বেচার জন্য যথেষ্ট প্রয়োজনীয় একটি প্ল্যাটফর্ম হল ইমেল। অনেক বিজ্ঞাপনদাতাই ইমেলের মাধ্যমে ক্লায়েন্টের কাছে পৌঁছতে চান। সেক্ষেত্রে আপনাকে খুব বাছবিচার করে ক্লায়েন্ট লিস্ট তৈরি করতে হবে। আপনার জিনিসটা কী এবং তা কোন ধরনের মানুষের কাছে জনপ্রিয় হবে সেটা আগে জেনে তবেই ক্লায়েন্ট লিস্ট তৈরি করুন। তারপর সেই লিস্ট অনুযায়ী নিজের প্রোডাক্ট বিষয়ে ইমেল মাধ্যমে বিজ্ঞাপন ছড়িয়ে দিন।
 মোবাইল মার্কেটিং: এখন স্মার্ট ফোনের কল্যাণে আমরা সবাই স্মার্ট। ফোনেই সমাজ মাধ্যমের সঙ্গে সারাক্ষণ যুক্ত থাকি। ফলে এই যুগে মোবাইল মার্কেটিং খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মোবাইলে দেখার যোগ্য করে নিজের কনটেন্ট সাজাতে হবে। রিলস বানানো, টিজার বানানো এই সবই শিখতে হবে। এগুলো কীভাবে কত তাড়াতাড়ি, বেশি সংখ্যক লোকের কাছে পৌঁছে দেওয়া যায় সেটাও আয়ত্বে আনতে হবে।
 অ্যানালিটিক মার্কেটিং: ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের একটা বড় গুণ হল তার জনপ্রিয়তা সহজেই মাপা যায়। অর্থাৎ আপনি একটা জিনিসের বিজ্ঞাপন করলেন, সেটা আদৌ লোকে পছন্দ করছে কি না, সেটা সেই বিজ্ঞাপনের ভিউ, লাইক ও শেয়ারের সংখ্যাই আপনাকে বলে দেবে। এবার ধরুন জিনিসটা লোকে খুব একটা দেখছে না, তখন সেটাকে বদলে ফেলতে হবে। অথবা না বদলালেও তার সময়টা হয়তো পাল্টে দিলেন, এইভাবে আপনাকে বাছবিচার করে এগতে হবে। এগুলো খুবই মনোযোগ দিয়ে বুঝেশুনে করতে হবে। 

কাজের সুযোগ
কলকাতায় অনেক ধরনের কোর্স রয়েছে ডিজিটাল মার্কেটিং সংক্রান্ত। প্রতিটি কোর্সের ধরন বুঝে আপনার পছন্দ অনুযায়ী কোর্স নির্বাচন করুন। এই কোর্স করার পর নিজস্ব ব্যবসা তো শুরু করতে পারেনই, তাছাড়াও বিভিন্ন কোম্পানির সঙ্গে যুক্ত হয়ে রোজগার করতে পারেন। ভাষা যদি আপনার স্ট্রং পয়েন্ট হয় তাহলে কনটেন্ট ক্রিয়েশন বা লেখার কাজ করতে পারেন। গ্রাফিক বা বিজ্ঞাপনের ভিস্যুয়াল তৈরি করার ক্ষমতা থাকলে সেদিকে যেতে পারেন। আবার অনেকে বিষয়গুলো নিয়ে পড়াশোনা করে এসইও-র কাজ করতে চান, সেটাও সম্ভব।
মোটমাট কীভাবে নিজের রোজগারের পথ সুগম করবেন সেটা সম্পূর্ণই আপনার হাতে। কিন্তু তার আগে বিষয়টা ভালো করে শিখতে হবে।
কমলিনী চক্রবর্তী
3d ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

একাধিক সূত্র থেকে আয় ও সঞ্চয় বৃদ্ধির যোগ। কাজকর্মে উন্নতি হবে। মানসিক চঞ্চলতা ও ভুল...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৪.৯৬ টাকা৮৬.৭০ টাকা
পাউন্ড১০৪.৮৮ টাকা১০৮.৫৯ টাকা
ইউরো৮৬.৮৭ টাকা৯০.২১ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা