আমরা মেয়েরা

পরিচ্ছন্নতার অভ্যাস ছোট থেকেই

বাচ্চাকে হাইজিন শেখান একেবারে শৈশব থেকেই। কীভাবে গড়ে তুলবে এই সু-অভ্যাস? পরামর্শ দিলেন ডাঃ আশিস মিত্র।

হাইজিন বা পরিচ্ছন্নতার বোধ জীবনে খুবই জরুরি জিনিস। এবং একেবারে শিশু বয়স থেকেই এই বোধ বাচ্চার মধ্যে তৈরি করে দিতে হয়। নাহলে বড় বয়সে গিয়ে পরিচ্ছন্নতার অভাবে জীবনে অনেক সমস্যা দেখা দিতে পারে। অনেককেই রাস্তাঘাটে দেখা যায় প্রকাশ্যে থুতু ফেলছেন, বাসে বসে নাক খুঁটছেন, কান খোঁচাচ্ছেন, দাঁত খোঁচাচ্ছেন অবলীলায়। এই অভ্যাসগুলো প্রত্যেকটাই হাইজিন জ্ঞানের পরিপন্থী। ফলে ছোট থেকেই শিশুর এমনভাবে শেখাতে হবে যাতে তার এই ধরনের বদভ্যাসগুলো তৈরিই না হয়। কীভাবে তৈরি করবেন এই অভ্যাস? কবে থেকেই বা শিশুর মধ্যে হাইজিন সংক্রান্ত সচেতনতা গড়ে তুলবেন বাবা মা? বিষয়টি নিয়ে বিশদে আলোচনা করলেন ডাঃ আশিস মিত্র।

শুরু থেকে গড়ে তুলুন ভালো অভ্যাস
বাচ্চারা আজকাল একেবারে শৈশবেই স্কুলে চলে যায়। অনেক শিশু বোধবুদ্ধি হওয়ার আগেই স্কুলে ভর্তি হয়ে যায়। তখন থেকেই কিন্তু খেলার ছলে বাচ্চার হাইজিন সংক্রান্ত অভ্যাস তৈরি করে দিতে হবে মাকে। প্রথম দিকে গল্প বলে, খেলার মাধ্যমে কাজটা করতে হবে, নাহলে বাচ্চা ব্যাপারটা বুঝতেই পারবে না। কিন্তু পরে, বাচ্চার মোটামুটি চার পাঁচ বছর বয়স থেকেই তাকে আস্তে আস্তে পরিষ্কার থাকার প্রয়োজনীয়তা ও উপকারিতা সম্পর্কে বোঝাতে হবে। এবং সে ভুল করলে তাকে বারবার বলে শুধরে দিতে হবে। একটা সময় দেখবেন বাচ্চার কাছেও পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতাটাই অভ্যাসে দাঁড়িয়ে গিয়েছে। 

কীভাবে দেবেন পরিচ্ছন্নতার পাঠ?
পরিচ্ছন্নতার পাঠ দিতে গেলে নিজেকেও সেটা প্র্যাকটিস করতে হবে। আপনি বাচ্চাকে রীতিতে বাঁধলেন অথচ নিজে কোনও নিয়মই মানলেন না, তাহলে কিন্তু চলবে না। মনে রাখবেন, বাচ্চা বাবা-মা কিংবা বাড়ির গুরুজনদের দেখে সবচেয়ে বেশি শেখে। ফলে বাচ্চাকে পরিচ্ছন্ন থাকার নিয়ম শেখানোর আগে নিজেই তার সামনে উদাহারণ তৈরি করুন। কয়েকটা জিনিস একেবারে নিয়ম করে দিন বাড়িতে। বাইরে থেকে এসে হাত, পা ও মুখ ভালো করে সাবান দিয়ে ধুতে হবে। বাইরের জামাকাপড় ছেড়ে বাড়ির পোশাক পরে তবেই খাটে উঠবে বা অন্য কোনও কাজ করবে।  গ্রীষ্মকাল জুড়েই দিনে অন্তত দু’বার স্নান করা অবশ্যিক। বর্ষাকালেও দু’বার স্নান না করতে পারলে বিকেল বা সন্ধ্যার দিকে গা ধোয়ার অভ্যাস বজায় রাখতে হবে। শীতে একবার স্নান এবং অন্যান্যবার হাত পা মুখ ধোয়ার অভ্যাস রাখা দরকার।  সকালে ঘুম থেকে উঠে ভালো করে দাঁত মাজা ও ওই সঙ্গেই চোখ ধোয়া এবং নাকে জল টেনে তা ধুয়ে নেওয়ার অভ্যাস তৈরি করে দিন। তাহলে চোখ নাক মুখ পরিষ্কার থাকবে। তখন আর সারাদিনে নাক সুরসুর করবে না, ফলে নাকে হাত দিয়ে ময়লা পরিষ্কার করার প্রয়োজনও পড়বে না।  স্নানের সময় প্রতিদিন কান ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। ভেজা তোয়ালেতে খুব অল্প সাবান বুলিয়ে কান পরিষ্কার করে নিন, আবার তোয়ালে ভিজিয়ে ভালো করে নিংড়ে সেই সাবানটুকু মুছে দিতে হবে। তবে কানের খুব গভীরে যেন সাবান বা জল না যায়। একেবারে যেটুকু অংশ বাইরে থেকে দেখা যায়, তা এভাবে পরিষ্কার করে দিন।  বাইরে থেকে ঘরে ঢোকার সময় বাইরের চটিজুতো র‌্যাকে গুছিয়ে রেখে বাড়ির চটি পরে নিলে বাড়ি অহেতুক নোংরা হবে না।  বাড়ির পোশাক আর বাইরের পোশাক সম্পূর্ণ আলাদা রাখতে হবে এবং দু’টিই নিয়মিত কাচা-ধোয়া করে পরিষ্কার রাখতে হবে। বাচ্চা নিজের জামাকাপড় কাচবে না ঠিকই, কিন্তু নিজের কোন জামা কখন কাচতে দিতে হবে সে বিষয়ে একটা অভ্যাস তার মধ্যে তৈরি করে দিতে হবে মা-বাবা বা বাড়ির গুরুজনদের।

কিছু প্রস্তুতি ছোট থেকেই তৈরি করুন
প্রায়ই সর্দি কাশি হওয়া বাচ্চাদের অতি সাধারণ ব্যাপার। এই সময়ও বাচ্চারা স্কুলে যাওয়ার জন্য জেদ করে। বাবা মাও খুব একটা গা করেন না বিষয়টি নিয়ে। অথচ সর্দি-কাশিতে বাচ্চাকে স্কুলে পাঠানো কখনওই উচিত নয়। এই প্রস্তুতি বাচ্চাকে মনে মনে নেওয়াতে হবে। এছাড়াও সর্দি হলে বাচ্চার কাছে ডিসপোজেবল টিস্যু দিয়ে রাখতে হবে। যাতে সে ওই টিস্যুতে নাক মুছে সেটা ফেলে দিতে পারে। এই যে টিস্যুতে নাক মুছে সেটা ফেলে দিতে হবে এই অভ্যাসটাও বাচ্চাকে শেখাতে হবে তার পাঁচ বছর বয়স থেকেই। সর্দির সময় বাচ্চাকে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করতে শেখান। প্রতিবার নাক মোছার পর হাতে সামান্য স্যানিটাইজার দিয়ে নিতে বলুন বাচ্চাকে। প্রথম দিকে বাবা মা কিংবা বাড়ির অন্যদের কড়া নজরদারিতে বাচ্চাকে এই অভ্যাস করান। কাশি হলে এবং তার সঙ্গে কফ উঠলে তা ফেলার ক্ষেত্রে বাথরুমের বেসিন ব্যবহার করতে হবে। রাস্তাঘাটে যে তা ফেলা যাবে না, এটা বাচ্চাকে বারবার বোঝান। এবং থুতু ফেলার পর মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে। প্রয়োজনে একটু লিস্টারিন বা অন্য কোনও অ্যান্টিসেপ্টিক লিকুইড দিয়ে বাচ্চাকে বারবার গার্গেল করতে বলুন এই সময়। এই নিয়মগুলো ছোট থেকেই শিশুমনে গেঁথে দিতে হবে। তাহলেই তার হাইজিনের অভ্যাস আপনিই তৈরি হয়ে যাবে। কিন্তু এই যে নিয়মগুলো তৈরি করছেন, বা সে সম্পর্কে বাচ্চাকে সচেতন করছেন, তার আগে নিয়মগুলো নিজেদের অভ্যাস করতে হবে। যেমন খাওয়ার আগে হাত ধোয়া, বাইরে থেকে এসে আগে পোশাক ছেড়ে হাত মুখ ও পা ধুয়ে নেওয়া, দিনে দু’বার দাঁত মাজা ইত্যাদি। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকার নিয়মগুলো বাড়ির বড়রা যখন মেনে চলবেন তখন বাচ্চাও তা আপনিই শিখে যাবে। যে কোনও বিষয়ে বাচ্চার প্রথম পাঠ বাড়ি থেকেই শুরু হয়। ফলে নিজে সু-অভ্যাস করুন। বাচ্চা আপনার থেকে তা দেখেই শিখবে।    
2d ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

দীর্ঘমেয়াদি সঞ্চয় বা শেয়ার থেকে অর্থাগম যোগ। বিদ্যার্থীদের প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় শুভ ফল লাভ।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮২.৫৮ টাকা৮৪.৩২ টাকা
পাউন্ড১০৩.৮৩ টাকা১০৭.৩০ টাকা
ইউরো৮৭.৯০ টাকা৯১.০৪ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
30th     June,   2024
দিন পঞ্জিকা