একাধিক সূত্রে অর্থপ্রাপ্তি ও ঋণশোধে মানসিক ভাব মুক্তি। নিজ বুদ্ধি ও দক্ষতায় কর্মোন্নতি ও সুনাম। ... বিশদ
খোকাদা নাটকটি লিখেছেন ও পরিচালনা করেছেন পার্থসারথী রাহা। মূল চরিত্রে সুমন্ত রায়।
খোকাদা হল এক বিষণ্ণ চরিত্র। যে থিয়েটারকর্মী। একদিন লোডশেডিংয়ের কারণে থিয়েটার শুরু হতে দেরি হওয়ায় সে দর্শককে হলে বসিয়ে রাখার দায়িত্ব পায়। শুরু হয় তার আত্মকথন। ফেলে আসা জীবন, নানা টুকরো স্মৃতি উঠে আসতে থাকে সংলাপে। মাঝে মাঝে কিছু দৃশ্য জীবন্ত হয়ে ওঠে দর্শকের সামনে। নাটকের বিষণ্ণতাকে ধরেই আলোর পরিকল্পনা করেছেন পৃথ্বীশ। একটি কাঠের বাক্সে বসে থাকা খোকাদার পিছন থেকে একটি সাদা আলো এসে শ্যিলুটে তার অবয়বটির আউটলাইন ফুটিয়ে তোলে। আর পাশে রাখা একটি জ্বলন্ত মোমবাতির আলো পরিস্ফুট করে খোকাদার মুখের প্রোফাইল। এই হল মূল আলো। প্রায় গোটা অভিনয়টাই এই আলোর ওপর ভর করে চলে। মাঝে মাঝে কখনও পাশ থেকে চেরা আলো এসে পড়ে খোকাদার মুখে। কখনও সামনে থেকে স্বল্প সময়ের জন্য মৃদু আলোয় দেখা যায় খোকাদাকে। ব্যবহার করা হয়েছে টর্চের আলোও। খোকাদার স্মৃতিচারণে সময় যখন এগয় আর পিছয় তখন সামনে থেকে একটি ঘুর্ণায়মান পাখার ছায়া এসে পড়ে খোকাদার গায়ে, মুখে, মঞ্চে। পাখাটি কখনও ক্লক ওয়াইজ, কখনও অ্যান্টি ক্লক ওয়াইজ ঘোরে। ঘুর্ণনের গতি কখনও ধীরে, কখনও জোরে হয়। পৃথ্বীশ সময়ের এগনো, পিছনোকেই ধরতে চেয়েছেন এইভাবে। আলোকে কথা বলিয়েছেন তিনি। বাংলার রঙ্গমঞ্চ যে আরও এক শক্তিশালী আলোক পরিকল্পককে পেয়ে গিয়েছে, যিনি শুধুই আলো দিয়ে মঞ্চ ভরাতে রাজি নন। আলোর সঙ্গে ছায়াকেও যে সমান গুরুত্বপূর্ণ ভাবেন তিনি তারই পরিচয় রেখেছেন এই নাটকে।
অশোকনগর প্রতিবিম্বের এই নাটকটি যথেষ্ট সাহসী প্রযোজনা। প্রায় একক অভিনয়। মুম্বই নাটইস ও দেবদাস দেখার পর অভিনেতা সুমন্ত রায়ের প্রতি যে সীমাহীন প্রত্যাশা তৈরি হয়েছিল তা অতিক্রম করতে পারেননি তিনি। পার্থসারথীর ভাবনা প্রশংসাযোগ্য। তবে দু’ একটি হালকা মুহূর্ত রাখা উচিত ছিল নাটকে। এই নাটকটি অন্তরঙ্গ অভিনয় ছাড়াও প্রসেনিয়মে করা যেতে পারে বলেই মনে হয়েছে প্রতিবেদকের।
নিজস্ব প্রতিনিধি