বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
এদিন সুব্রতবাবু বলেন, আমরা সর্বধর্ম সমন্বয়ে বিশ্বাস করি। আগাগোড়া ওই রাজনীতিতেই বিশ্বাসী। আমার বাড়ির ঠাকুরঘরে জর্ডন, মক্কা ও গঙ্গার পবিত্র জলের সহাবস্থান রয়েছে। আজকের সমাজ জীবনেও ওই বিশ্বাস প্রতিষ্ঠিত হওয়া প্রয়োজন। সেই বিশ্বাসকে প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যেই এবারের নির্বাচনে আমরা লড়ছি। একটা দল শুধুমাত্র তার নিজের ধর্মকে বিশ্বাস করে। বাকি ধর্মের বিনাশ চায়। বাকি ধর্মকে অশ্রদ্ধা করে, ঘৃণা করে। এই লড়াই শুধু এখানকার নয়। এটা মানবজাতির লড়াই। কারণ বিজেপি শুধু রাম মন্দির করতে চায়। আমরা রাম, রহিম, যিশু তিনজনেরই ধর্মস্থান করতে চাই।
উল্লেখ্য, রবিবার বিকেলে সুব্রতবাবু বাঁকুড়ায় পা রাখেন। ওইদিন বাঁকুড়া জেলা তৃণমূল কার্যালয়ে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে দ্রুত ময়দানে নেমে প্রচার শুরুর আভাস দেন। সেইমতো এদিন সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ সুব্রতবাবু হোটেল থেকে বের হন। তাঁর সঙ্গে বাঁকুড়া জেলা তৃণমূল সভাপতি অরূপ খাঁ এবং বাঁকুড়া পুরসভার চেয়ারম্যান মহাপ্রসাদ সেনগুপ্ত সহ অন্যান্য তৃণমূল নেতানেত্রীরা ছিলেন। সুব্রতবাবুর গাড়ি মাচানতলায় পৌঁছনোর পর সাধারণ মানুষ তাঁকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান। ভিড়ের চাপে তাঁর গাড়ির গতি সেখানেই থমকে যায়। মাচানতলা থেকে পায়ে হেঁটে তিনি শহরের চকবাজার এলাকার মহামায়া মন্দিরে যান। সেখানে দেবীর পায়ে ফুল মালা অর্পণ করেন। সেখানে পুজোপাঠ সারার পর সুব্রতবাবু শহরের ভৈরবস্থানে মন্দিরে যান। ভৈরবস্থানে তিনি পুজো দেন। সেখানে বেশ কিছুক্ষণ থাকার পর তৃণমূল নেতৃত্ব দলীয় প্রার্থীকে নিয়ে শহরের স্কুলডাঙা মোড়ের গির্জায় যান। ততক্ষণে সুব্রতবাবুকে কেন্দ্র করে মানুষের উন্মাদনা আরও বেড়ে যায়। গির্জায় মোমবাতি প্রজ্বলনের মধ্য দিয়ে তিনি প্রার্থনা সারেন। গির্জায় প্রার্থনার পর তৃণমূল প্রার্থী মাচানতলার মসজিদে পৌঁছন।
মসজিদে গিয়ে তিনি প্রার্থনা করেন। মসজিদ থেকে তাঁর গাড়ি বাঁকুড়া শহর সংলগ্ন এক্তেশ্বর মন্দিরের উদ্দেশে রওনা দেয়। এক্তেশ্বর শিব মন্দিরে দেবাদিদেবকে প্রণাম করে সুব্রতবাবু কিছুটা রাস্তা টোটোয় সওয়ার হন। পরে তিনি ফের বাঁকুড়া শহরে ঢোকেন। শহরের লক্ষ্যাতোড়া মহাশ্মশানে যান। ওই মহাশ্মশানের একাধিক কালীমন্দিরে তিনি ভক্তি ভরে প্রণাম করেন। সেখান থেকে তৃণমূল নেতারা সুব্রতবাবুকে বাঁকুড়া শহরের ১১ নম্বর ওয়ার্ডে নিয়ে যান। দুর্গাপুর বাইপাস সংলগ্ন বিধাননগর এলাকায় একটি বাড়ি সুব্রতবাবু ঘুরে দেখেন। রবিবারই তিনি সাংবাদিকদের জানান, বাঁকুড়া শহর বা আশেপাশের এলাকায় একটি সাদামাটা বাড়ির খোঁজ তিনি করছেন। আপাতত ভাড়া বাড়িতে থেকে সুব্রতবাবু নির্বাচনের প্রচারপর্ব সারবেন বলে জানিয়েছেন।
অন্যদিকে, এদিন বাঁকুড়ার কর্মিসভা থেকে সুব্রতবাবু বলেন, আমি কোনওদিন জাতপাত নিয়ে রাজনীতি করার শিক্ষা পাইনি। জয় পরাজয় যাই হোক না কেনও, আমি বাঁকুড়াকে ভালোবাসি। বাঁকুড়ার মানুষকে ভালোবাসি। মানুষ যদি কাজ দেখে ভোট দেন তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল ছাড়া আর কারও জেতার কথা নয়। ২০০৯সালে হেরে যাওয়ার পরেও আমি বাঁকুড়ায় পানীয় জল, রাস্তা সহ অন্যান্য ক্ষেত্রে প্রকল্প রূপায়ণ করেছি। একজন হেরে যাওয়া লোক যদি এত কাজ করতে পারে, তাহলে জেতার পর কী করতে পারে তা আপনারা সহজেই অনুমান করতে পারছেন।
এদিকে, বিজেপির রাজ্য সহ সভাপতি সুভাষ সরকার বলেন, সর্বধর্মে বিশ্বাস করার বিষয়টি এখন তৃণমূল নেতাদের ফলাও করে বলতে হচ্ছে। কারণ ওঁদের কাজে বিষয়টি প্রকাশ পাচ্ছে না। আমরা কোনও ধর্ম নিয়ে রাজনীতি বা ছেলেখেলা করি না। সর্বধর্মের বিকাশ আমাদের মূলমন্ত্র।