বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র বলেন, আমরা ম্যাসাঞ্জোর ড্যামের আধুনিকীকরণ করছি। স্বয়ংক্রিয় গেটের মাধ্যমে সুপরিকল্পিতভাবে জল ছাড়ার ব্যবস্থা হবে। এতে কৃষকরা যেমন পর্যাপ্ত সেচের জল পাবে তেমনি আচমকা বন্যার প্রবণতা কমবে। ঝাড়খণ্ডের কৃষকরাও এর সুবিধা ভোগ করবে। আমাদের মুখ্যমন্ত্রী সবসময় কৃষকদের কথা চিন্তা করার বার্তা দিয়েছেন। তাঁর সেই বার্তা অনু্যায়ীই এই পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
গত বছর ম্যাসাঞ্জোর ড্যামের সংস্কার নিয়ে রাজ্যের সঙ্গে ঝাড়খণ্ডের তীব্র চাপানউতোর হয়। ড্যামের রঙ নীল সাদা করা নিয়ে ম্যাসাঞ্জোর গিয়ে তোপ দেগেছিলেন ওই রাজ্যের বিজেপি মন্ত্রী লুইস মারাণ্ডি। বিক্ষোভ দেখিয়ে কাজ বন্ধ করে দিয়েছিলেন বিজেপি কর্মকর্তারাও। পরে বীরভূম জেলা প্রশাসন ও সেচ দপ্তরের শীর্ষ কর্তারা দুমকার জেলাশাসকের সঙ্গে কথা বলে জটিলতা কাটান। যদিও ম্যাসাঞ্জোর সংস্কার নিয়ে রাজ্য যে পিছিয়ে আসছে না এই প্রকল্প অনুমোদন দিয়ে তার স্পষ্ট বার্তা দিল।
প্রসঙ্গত, ম্যাসাঞ্জোর ড্যামটি ঝাড়খণ্ডের মধ্যে হলেও এর রক্ষণাবেক্ষণ ও জল ছাড়ার পুরো বিষয়টি রাজ্য সরকারে অধীনে। জলাধারে ২১টি বড় ফ্লাড গেট ছাড়াও সেচের জল পরিষেবা দেওয়ার জন্য পৃথক তিনটি গেট রয়েছে। তারমধ্যে একটি গেট দিয়ে ক্যানেলের মাধ্যমে ঝাড়খণ্ডে কৃষিকার্যের জল দেওয়া হয়। অন্য দু’টি গেটের ছাড়া জল পশ্চিমবঙ্গে আসে। এতদিন ম্যানুয়াল সিস্টেমে গেটগুলি ওঠা নামা করানো হলেও এবার বসতে চলেছে অত্যাধুনিক সুপারভাইজারি কন্ট্রোল অ্যান্ড ডেটা অ্যাকুইজিশন(এসসিএডিএ) সিস্টেম। এর মাধ্যমে আশপাশের এলাকার আবহাওয়া, ড্যামে জলের চাপ, জলস্তর সহ নানা সূচকের তুলনামূলক বিশ্লেষণ করে কম্পিউটার সিগন্যালিংয়ের মাধ্যমে গেটগুলি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ওঠা নামা করবে। সেচ দপ্তরের দাবি, একমাত্র তিস্তা ব্যারেজে এই সিস্টেম বসানো হয়েছে। এখনও পর্যন্ত রাজ্যের কোনও ড্যামে এই সিস্টেম লাগু হয়নি। ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে এই অত্যাধুনিক সিস্টেমটি চালু হলে সবদিক দিয়েই সুবিধা হবে বলে দপ্তরের আধিকারিকদের দাবি।
লোকসভা ভোটের আগে ভিন রাজ্যে এই তৎপরতা রাজনৈতিকভাবেও যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। ঝাড়খণ্ডের সরকারে রয়েছে বিজেপি। সেখানেও কৃষকরা নানা ইস্যুতে ক্ষুব্ধ। ম্যাসাঞ্জোর ড্যাম সংস্কার নিয়ে বির্তকের সময়ে ঝাড়খণ্ডের বিজেপি দাবি তুলেছিল বাংলা জল নিয়ে ওই রাজ্যের সঙ্গে বঞ্চনা করছে। যদিও আন্দোলনে তারা সেই রাজ্যের বিরোধী দল ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চাকে পাশে পায়নি। এই অবস্থায় নিজের রাজ্যের পাশাপাশি অত্যাধুনিক সিস্টেম বসিয়ে ঝাড়খণ্ডের কৃষকদের অধিক জল পৌঁছে দিয়ে নিজেদের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে চাইছে তৃণমূল। ইতিমধ্যে অসম, ঝাড়খণ্ড সহ পার্শ্ববর্তী রাজ্যে নিজেদের সংগঠন বাড়ানোর উপর জোর দিয়েছে তৃণমূল। তাই ম্যাসাঞ্জোর সংস্কারের উদ্যোগও তৃণমূল সুপ্রিমোকে বাড়তি সুবিধা দেবে বলেই ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা।