আজ ব্যবসাদিক্ষেত্রে শুভ অগ্রগতি হতে পারে। কর্মস্থলে জটিলতা কমবে। অর্থাগম যোগ আছে। ... বিশদ
মেয়র: ভোটের খবর কী?
ওয়ার্ডের কর্মী: দারুণ।
মেয়র: এখন আপনারা কোথায়?
কর্মী: বুথের ভিতরে ও বাইরে সর্বত্র আমরাই। দাদা, চিন্তা নেই ...
মেয়র: লিড....
কর্মী: পুরভোটের দ্বিগুণ হবে এবার।
শুক্রবার ওয়াররুম থেকে এভাবেই জলপাইগুড়ি আসনের তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ ভোটযুদ্ধের ময়দান তদারকি করেন শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব। কখনও তিনি দলের নেতা-কর্মীদেরকে বুথে মাটি কামড়ে পড়ে থাকার নির্দেশ দেন। কখনও কখনও আবার বিরোধীদের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ করেন। আবার কখনও নেতা-কর্মীদের জলখাবার ও মধ্যাহ্নভোজের ব্যাপারে খোঁজ নেন। এমনকী গৌতম দফায় দফায় ফোন করে ভোটের গতিপ্রকৃতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানান। সবশেষে মেয়র বলেন, হার বুঝতে পেরে পদ্ম শিবির কিছু জায়গায় গোলমাল পাকানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছে। ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি সহ জলপাইগুড়িতে দলের ফলাফল ভালো হবে।
শিলিগুড়ি শহরের সংযোজিত ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার হলেও সংশ্লিষ্ট এলাকার ভোটার নন মেয়র। তাই দার্জিলিং-জলপাইগুড়ি জেলার সীমানা সূর্যনগরে একটি আবাসনের তিন তলায় খোলেন ওয়াররুম। আবাসনটি ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল নেতা বাবলু পালের। সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ নিজের কলেজপাড়ার বাড়ি থেকে সূর্যনগরের ওই রুমে আসেন মেয়র। তাঁর পরনে সাদা শার্ট ও কালো প্যান্ট। তিন তলার ঘরে সোফায় বসেন। সামনে টিভি। চলছে নিউজ চ্যানেল। তাঁর হাতে সংবাদপত্র। তাঁর দু’পাশে দুই তৃণমূল নেতা-সুপ্রকাশ রায় ও বিপ্লব সরকার। পাশের ঘরে কম্পিউটারে অভিযোগ নথিভুক্ত করে কমিশনে নালিশ করছেন আরও চার জন। তাঁরা দলের লিগ্যাল সেলের সদস্য।
নিউজ চ্যানেলে নজর রাখার পাশাপাশি মেয়র কখনও তৃণমূলের শিলিগুড়ি টাউন-৩ কমিটির সভাপতি দুলাল দত্ত, ডাবগ্রামের নেতা দেবাশিস প্রামাণিক, আবার কখনও রঞ্জন শীলশর্মা সহ ১৪টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলার ও নেতাদের ফোন করেন। প্রথমেই ডাবগ্রামের দু’টি জায়গাই ইভিএম বিভ্রাটের ঘটনা নিয়ে কমিশনে অভিযোগ করেন। আবার ডাবগ্রামের ১৬২, ১৬৩, ১৬৫ ও ১৬৬ নম্বর বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে বুথ জ্যাম করার অভিযোগ ওঠে। সঙ্গে সঙ্গে কমিশনে জানায় গৌতমের টিম।
সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত গৌতমের বেলা এভাবেই গড়ায়। এরপর সকলের সঙ্গে লুচি ও সব্জি টিফিন করেন। প্রাতঃরাশের পর আবার সক্রিয়। মাঝেমধ্যে কয়েকজন অল্প বয়সি যুবক ঘরে ঢুকে ফিসফিস করে তাঁকে কিছু তথ্য দেন। যাঁরা তৃণমূলের অন্দরে ‘ভোটপর্যটক’ বা ‘গুপ্তচর’ হিসেবে পরিচিত। তাঁদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মেয়র দলের এক নেতাকে সতর্ক করেন। বলেন, বুথ ছেড়ে যাওয়া যাবে না। সেখানে দাঁড়িয়ে কর্মীদের কুলপি মালাই খাওয়ান ও ভোট করান।
কিছুক্ষণ পর বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে এক কাউন্সিলার কিছু রিপোর্ট পেশ করেন মেয়রের কাছে। কিছু বাঙালি এলাকায় বিজেপির কর্মীরা জটলা পাকিয়ে গোলমাল করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ। সঙ্গে সঙ্গে মেয়রের টিম কমিশন ও পুলিসের কাছে অভিযোগ জানায়। এরপর কাটা ফল ও ডাবের জল খান মেয়র। একই সঙ্গে তিনি জলপাইগুড়ির বাকি ছ’টি বিধানসভা কেন্দ্র, কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ার লোকসভা কেন্দ্রের গতিবিধির খোঁজ খবর নেন। প্রদত্ত ভোটের হার নিয়ে দলের রাজ্য নেতৃত্বের কাছে ঘণ্টায় ঘণ্টায় রিপোর্ট পাঠান। দুপুরে সকলের সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজ সারেন। মেনুতে ভাত, মুগডাল, তিন রকম মাছ, মাংস ও চাটনি ছিল। সবশেষে মেয়র বলেন, এখান থেকে ২০টির মতো অভিযোগ কমিশনে জানানো হয়েছে। নিজস্ব চিত্র