একাধিক সূত্রে অর্থপ্রাপ্তি ও ঋণশোধে মানসিক ভাব মুক্তি। নিজ বুদ্ধি ও দক্ষতায় কর্মোন্নতি ও সুনাম। ... বিশদ
ধারাবাহিক বিস্ফোরণের পরিপ্রেক্ষিতে এদিন সংসদে আপৎকালীন অধিবেশন ডাকা হয়। সেখানেই বক্তব্য রাখার সময় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রুয়ান বিজয়বর্ধনে জানান, গত ১৫ মার্চ ক্রাইস্টচার্চের দু’টি মসজিদে হামলা হয়েছিল। সেই ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছিলেন অন্তত ৫০ জন। সেই হামলার বদলা নিতেই শ্রীলঙ্কায় ধারাবাহিক আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ঘটানো হয় বলেই প্রাথমিক তদন্তের পর জানতে পেরেছেন গোয়েন্দারা। প্রতিরক্ষামন্ত্রী আরও জানান, হামলার কিছুদিন আগেই কয়েকজন সরকারি আধিকারিককে গোয়েন্দা দপ্তরের তরফে একটি গোপন মেমো পাঠানো হয়েছিল। কট্টরপন্থী এক মুসলিম সংগঠন সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্রাইস্টচার্চ হামলা নিয়ে যে সমস্ত বিদ্বেষমূলক পোস্ট করেছে, তারও উল্লেখ করা হয়েছিল ওই মেমোতে। কট্টরপন্থী সংগঠন ন্যাশনাল থোউহিথ জামাতকে নিষিদ্ধ করার দাবিও তোলেন রুয়ান বিজয়বর্ধনে। সংসদে বক্তব্য রাখার সময় প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমসিঙ্ঘে বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ শ্রীলঙ্কাতেও থাবা বসিয়েছে।’
ইস্টার রবিবারের সকালে ৮টা ৪৫ মিনিট নাগাদ একযোগে বিস্ফোরণ হয় তিনটি চার্চে। তীব্র বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে কলম্বোর সেন্ট অ্যান্টনি’স চার্চ, নেগোম্বোর সেন্ট সেবাস্তিয়ান’স চার্চ ও পশ্চিমের বাত্তিকালোয়া শহরের অন্য একটি চার্চ। বিস্ফোরণ ঘটে কলম্বোর সাংগ্রি-লা, সিনামোন গ্র্যান্ড ও কিংসবেরির মতো বিলাসবহুল পাঁচতারা হোটেলেও। হামলায় এখনও পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ৩২১ জন। এর মধ্যে রয়েছেন ১০ জন ভারতীয় সহ মোট ৩৮ জন বিদেশি নাগরিক। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, শ্রীলঙ্কার নাগরিকরাই এই আত্মঘাতী বিস্ফোরণের সঙ্গে যুক্ত হলেও কট্টরপন্থী সংগঠনের সঙ্গে বিদেশি জঙ্গি সংগঠনের যোগ রয়েছে। সরকারি আধিকারিকরা আঙুল তুললেও এনটিজের তরফে হামলার যুক্ত থাকার বিষয়ে কিছু বলা হয়নি। তবে মঙ্গলবার নিজেদের মুখপত্র ‘আমাক’-এ শ্রীলঙ্কায় আত্মঘাতী বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করে বিবৃতি দিয়েছে জঙ্গি সংগঠন আইএস। বলা হয়েছে, ‘আইএস সদস্যরা এই হামলা চালিয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ তাদের সহযোগী রাষ্ট্রের নাগরিকদের এবং শ্রীলঙ্কার খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষকে লক্ষ্য করেই এই হামলা।’ আইএস দাবি করলেও হামলায় এই জঙ্গিগোষ্ঠীর সত্যিই যোগ রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখছেন গোয়েন্দারা।
হামলার অন্তত ১০ দিন আগে পুলিসের তরফে সতর্কবার্তা দেওয়া হলেও এমন ভয়াবহভাবে আত্মঘাতী ধারাবাহিক বিস্ফোরণ হতে পারে, সেকথা কল্পনাও করেনি শ্রীলঙ্কা সরকার। মঙ্গলবার একথা জানিয়েছেন প্রতিরক্ষা সচিব হেমাসিরি ফার্নান্দো। পাশাপাশি তিনি আরও জানিয়েছেন, আগে থেকে গোয়েন্দাবার্তা পেলেও দেশের এত সংখ্যক গির্জার জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা কার্যত অসম্ভব। বিস্ফোরণের ঘটনার তদন্তে ইতিমধ্যে সহায়তা করছে এফবিআই। ইন্টারপোলও খুব শীঘ্রই শ্রীলঙ্কায় পৌঁছে তদন্ত শুরু করবে। বিস্ফোরণের পরিপ্রেক্ষিতে দেশজুড়ে হিংসার পরিবেশ ছড়িয়ে পড়তে পারে আশঙ্কা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমসিঙ্ঘে। হামলায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করার জন্য সরকারের তরফে সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি। প্রসঙ্গত, এলটিটিইর সঙ্গে তিন দশকের গৃহযুদ্ধের অবসান হওয়ার পর শ্রীলঙ্কায় এত ভয়াবহ হামলা ঘটেনি।