বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
মূলত দু’টি কারণে প্রধান শিক্ষক হওয়ার পরীক্ষায় বসেছেন প্রার্থীরা। সহ-শিক্ষকরা বসেছেন উচ্চতর সম্মান, দায়িত্ব এবং কিছুটা হলেও বেশি বেতনের আশায়। আর ইতিমধ্যেই যাঁরা প্রধান শিক্ষক, তাঁরা এই পরীক্ষায় বসেছেন পছন্দের স্কুলে বা পছন্দের এলাকায় যাওয়ার চেষ্টায়। অনেক স্কুলে প্রধান শিক্ষকরা এতটাই অপরিহার্য, যে তাঁদের পরিচালন সমিতি হয়তো ছাড়তেই চাইছে না। আবার কোনও স্কুলে সহকারী শিক্ষকের সঙ্গে প্রধান শিক্ষক বা ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের সম্পর্ক ভালো নয়। তাই কোনও বাধা আসতে পারে, এই আশঙ্কায় কেউ কেউ প্রকৃত ঘটনা চেপে গিয়েছেন।
গার্ডেনরিচ-মেটিয়াবুরুজ অঞ্চলের একটি স্কুলের সহশিক্ষিকা ইন্টারভিউয়ে যোগ দিতে গিয়েছিলেন অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে। ই-মেলে কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছিলেন, তিনি এতটাই অসুস্থ যে, ২০ জুন স্কুলে উপস্থিত থাকতে পারবেন না। ওই দিন স্কুলে ফলপ্রকাশ ছিল। তিনি শ্রেণী শিক্ষিকা। কিন্তু অন্য একজনকে তিনি দায়িত্বভার গ্রহণের কথা বলে রেখেছিলেন। পরে জানা যায়, তিনি ওইদিন প্রধান শিক্ষক নিয়োগের ইন্টারভিউয়ে উপস্থিত হতে গিয়েছিলেন। লিখিত পরীক্ষা এবং ইন্টারভিউয়ে সফল হওয়ার পর তিনি কাউন্সেলিংয়েও অংশ নেন এবং ঘটনাচক্রে তাঁর নিজের স্কুলই বেছে নেন।
এই ঘটনা জানাজানির পর তাঁর প্রতিযোগীরা নড়েচড়ে বসেন। হাবড়ার এক শিক্ষক বিষয়টি নিয়ে পর্ষদ এবং কমিশনে লিখিত অভিযোগ জানান। তাঁর দাবি, ওই শিক্ষিকা তথ্য গোপন করে ইন্টারভিউয়ে অংশগ্রহণ করেছেন। তাই তাঁকে যেন নিয়োগপত্র দেওয়া না হয়। ওই শিক্ষিকা সুযোগ না পেলে অভিযোগকারীর কাছে সুযোগ আসতে পারে। আর এটাকেই ভিত্তি করে তিনি মামলাও করছেন। হাইকোর্টে রিট পিটিশন করে দাবি করবেন, ওই শিক্ষিকা এ ধরনের তথ্য গোপন করায় তাঁর সুযোগ হাতছাড়া হয়েছে। অন্যক্ষেত্রে ঘটনাগুলি এতদূর না এগলেও অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ হয়েছে। যেমন, কেউ কেউ মেডিক্যাল লিভ নিয়ে লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়েছেন। কোনও প্রধান শিক্ষক নাকি স্রেফ স্কুলের কাজ করতে বিকাশ ভবনে যাবেন বলেও ইন্টারভিউয়ে এসেছেন। যদিও এই সংক্রান্ত লিখিত অভিযোগের কাগজপত্র বর্তমানের হাতে আসেনি।
এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান সৌমিত্র সরকার বলেন, এখনও অভিযোগ হাতে পাইনি। তা খতিয়ে দেখে মন্তব্য করতে পারব। এদিকে, এদিনই উচ্চ প্রাথমিকে কর্ম ও শারীরশিক্ষার শিক্ষক নিয়োগ পদে নিয়োগের জন্য ১০ শতাংশ সংরক্ষিত পদে পার্শ্বশিক্ষকদের ইন্টারভিউয়ে ডাকার জন্য বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে কমিশন। ৩১ জুলাই এই ইন্টারভিউ হবে কমিশনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে। আদালত যে উচ্চ প্রাথমিকের প্রার্থীদের ভেরিফিকেশন করানোর নির্দেশ দিয়েছিল, সে ব্যাপারেও বিজ্ঞপ্তি করেছে কমিশন। ৩০ এবং ৩১ জুলাই সেই ভেরিফিকেশন বা তথ্য যাচাইয়ের কাজগুলি হবে। তবে, শারীরশিক্ষা এবং কর্মশিক্ষায় পার্শ্বশিক্ষকদের ইন্টারভিউয়ে ডাকায় কিছু প্রার্থী ক্ষুব্ধ। তাঁদের দাবি, শারীরশিক্ষা এবং কর্মশিক্ষায় তো পার্শ্বশিক্ষক নিয়োগ করা হয়নি। তাহলে তাঁরা কেন সংরক্ষণের সুযোগ পাবেন? প্রসঙ্গত, কলকাতা প্রেস ক্লাবের সামনে মাসখানেক অনশনে বসা প্রার্থীদের একাংশেরও সেই দাবি ছিল। অর্থাৎ, শারীরশিক্ষা এবং কর্মশিক্ষায় পার্শ্বশিক্ষকদের সংরক্ষণ দেওয়া যাবে না।