অলকাভ নিয়োগী, বিধাননগর: ‘স্মার্টসিটি’ নিউটাউন। ২০২৩ সালে দেশের ১০০টি শহরের মধ্যে ‘স্মার্টসিটি অব দি ইয়ার’-এর তকমাও পেয়েছে এই শহর। কিন্তু আসন পুনর্বিন্যাসের জেরে সেই স্মার্ট শহরের একটা বড় অংশ গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনে চলে গিয়েছে! গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে সেখানে ভোটও হয়েছে। কেন তাঁরা এখনও পঞ্চায়েত এলাকার ভোটার, সেই প্রশ্ন তুলে নিউটাউনের প্রায় ১২ হাজার নাগরিক ভোট বয়কটের ডাক দিয়েছিলেন। তবে লোকসভা নির্বাচনে তাঁরা ভোট বয়কট করতে চান না। ভোট দিয়েই গণতান্ত্রিক উপায়ে স্মার্টসিটির মর্যাদা ফিরে পেতে চান তাঁরা। আবাসিকদের দাবি, স্মার্টসিটির বাইরে রাখতে হবে পঞ্চায়েতকে। কলকাতার পাশে সেজে উঠেছে নিউটাউন শহর। আগে এই শহরের মধ্যে গ্রাম পঞ্চায়েতের দু’টি আসন ছিল। কিন্তু, জনসংখ্যা বৃদ্ধির জন্য গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে আসন পুনর্বিন্যাস করতে হয়। তার জেরে পঞ্চায়েতের আসন সংখ্যা দুই থেকে বেড়ে আট হয়। নিউটাউনের বিশ্ববাংলা গেট সংলগ্ন অ্যাকশন এরিয়া-১ থেকে বিস্তীর্ণ এলাকা গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনে পড়ে যায়। তারপরই শুরু হয়েছিল প্রতিবাদ। গ্রাম ও শহর নিয়ে দেদার মিম শেয়ার হয় সামাজিক মাধ্যমে। নিউটাউনের বাসিন্দাদের দাবি ছিল, সম্পত্তি কর, বাসিন্দা সার্টিফিকেট, মিউটেশন সহ যাবতীয় পরিষেবা নিউটাউন কলকাতা ডেভেলপমেন্ট অথরিটি তথা এনকেডিএ দিয়ে থাকে। তাহলে গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্ভুক্ত করে ভোট করানোর প্রয়োজনীয়তা কী?
নিউটাউনের প্রায় ১৬ হাজার বাসিন্দা গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্ভুক্ত হয়েছিলেন। তার মধ্যে ১২ হাজার নাগরিক ভোট বয়কটের পক্ষে স্বাক্ষর করেন। অর্থাৎ, সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ প্রতিবাদ করেছিলেন। পঞ্চায়েত ভোটের দু’দিন আগে নিউটাউন শহরে ভোট বয়কটের পোস্টার পড়েছিল। পরে ভোটে গণ্ডগোলও হয়। শেষমেশ অবশ্য গ্রাম পঞ্চায়েত হয়েই রয়ে গিয়েছে এই শহর। এখনও বদল হয়নি! এর মধ্যেই লোকসভা ভোট দোরগোড়ায়। দিল্লি দখলের ভোট। গ্রাম থেকে শহর—সব জায়গার মানুষই লোকসভা ভোট দেন। তাই পঞ্চায়েতের ভোটের মতো বয়কটের পথে না হেঁটে গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করেই নিজেদের পুরনো দাবিতে অনড় থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। এ ব্যাপারে নিউটাউন ফোরাম অ্যান্ড নিউজ সংগঠনের চেয়ারম্যান সমরেশ দাস বলেন, ‘স্মার্টসিটির মধ্যে পঞ্চায়েত এলাকা ঢুকবে কেন? তাই সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ ভোট বয়কট করেছিলেন। তবে লোকসভায় আমরা সবাই ভোট দেব। ভোটের পর নতুন সাংসদ সহ প্রশাসনের সর্বস্তরে আমরা আমাদের দাবির বিষয়টি জানাব। আমরা চাই না, এখানে কোনও অশান্তি হোক। তাই আমরা চাই, গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে শান্তিপূর্ণভাবেই স্মার্টসিটির মর্যাদা ফিরে পাক নিউটাউন।’