কলকাতা

মুখগহ্বর যেন ব্যাঙ্কের ভল্ট, ২৮ বছর ধরে জিভের তলায় জলপাইয়ের বীজ

শ্যামলেন্দু গোস্বামী, বারাসত: শ্রীকৃষ্ণ হাঁ করে বিশ্বরূপ দর্শন করিয়েছিলেন যশোদাকে। জাদুগররা আস্ত তলোয়ার পর্যন্ত ঢুকিয়ে দেন মুখের মধ্যে। মুখগহ্বর সাধারণ জায়গা নয়। তবে সে তো পুরাণ কথা। বা ম্যাজিক। জয়দেব বিশ্বাস বাস্তবে যা করেছেন তার কি কোনও নজির আছে? 
তিনি নিজের মুখগহ্বরকে কৌটো বানিয়ে নিয়েছেন। সে কৌটোর বয়স ২৮ বছর। তাতে রাখা জলপাইয়ের একটি আস্ত বীজ। তিনি ঘুমোন সে বীজ মুখে নিয়ে। দাঁত মাজেন যখন, তখনও থাকে সেটি। খাবার খাওয়ার সময়ও বের করেন না। এভাবে একটি চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত করে নিয়েছেন বীজের সঙ্গে। এই করতে করতে মানুষটির বয়স হল ৭২ বছর। জলপাইয়ের বীজ আর বৃদ্ধ জয়দেববাবুর মুখগহ্বরের এই শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান চোখ কপালে তোলে সবার। মুখে বীজ রাখার কারণটি অবশ্য বেশ মর্মস্পর্শী। 
আজ থেকে ২৮ বছর আগের ভাইফোঁটার দিন। বোন অগ্নিবীণা ফোঁটা দিলেন দাদা জয়দেবকে। দুপুরে খাওয়াদাওয়া। দাদা জলপাইয়ের চাটনি ভালোবাসে। বোন যত্ন করে বানালো। চাটনি খাওয়ার সময় ঠাট্টা করে অগ্নিবীণা শুধু বলেছিলেন, ‘জলপাইয়ের চাটনি তোর যখন অতই পছন্দ, তখন বীজটা ফেলিস না। মুখেই রেখে দে।’ জয়দেব বললেন, ‘বেশ। রেখে দিলাম।’ অগ্নিবীণা তখন ঠাট্টার সুরেই জিজ্ঞেস করেন, ‘কতদিন রাখতে পারবি।’ জয়দেব বোনের ঠাট্টা ধরতে পারেননি। সিরিয়াস মুডেই বলেন, ‘আমরণ।’ ব্যাস, সেই যে শপথ নিলেন ৪৪ বছরের দাদা। তা ২৮ বছরেও ভাঙেনি। তবে রাখতে রাখতে জিভের তলায় একটি গর্তের মতো হয়ে গিয়েছে। এখন সে গর্তে সেঁটে থাকে জলপাইয়ের বীজ।
জয়দেব বিশ্বাস কাজ করতেন বিদ্যুৎ দপ্তরে। নিজের বোন ছিল না। পড়শি অগ্নিবীণা দেবকে বোন পাতিয়েছিলেন। রাখি 
পরতেন। ফোঁটা নিতেন। ২৮ বছর আগের সেই ভাইফোঁটার মেনুতে ছিল ভাত, মাছ, মাংস, মিষ্টি। আর ছিল জয়দেবের প্রিয় জলপাইয়ের চাটনি। ২০১২ সালের ২৪ জানুয়ারি অগ্নিবীণার মৃত্যু হয়। তার আগে মাঝেমধ্যে দাদার মুখে জিনিসটি রয়েছে কি না দেখে যেতেন। প্রিয় বোনের মৃত্যু হল। কিন্তু বীজটি মুখ থেকে ফেললেন না দাদা। 
‘মুখে নিয়ে আপনি ২৪ ঘন্টা থাকেন, কষ্ট হয় না? লোকে মজা করে না?’ প্রশ্নের উত্তরে জয়দেববাবু বলেন, ‘বোনের স্মৃতি আগলেই তো সবাই বাঁচতে চায়। এখন এসব আমার অভ্যাস হয়ে গিয়েছে। একসময় কেউ বলেছে আমি পাগল। কেউ বলত ন্যাকামো করছি। তবে আমি কারও কথা শুনিনি। কারও যদি বীজ নিয়ে কোনও সন্দেহ থাকে তাঁকে বলব, যে কোনও সময় বাড়িতে এসে দেখে যান।’ গুপি মজুমদার নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘বোনকে এভাবে সম্মান জানানো অবাক করে। নজিরবিহীন ঘটনা।’ অনেকে প্রশ্ন তোলেন। বলেন, ‘একটি বীজ মুখের মধ্যে থাকা লালায় সর্বদা ভিজেও অবিকৃত রয়েছে কীভাবে?’ কৃষি বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, ‘জলপাইয়ের বীজ খুব শক্ত। তাই সহজে নষ্ট হয় না। তা এভাবে থাকা অস্বাভাবিক কিছু নয়।’ এদিকে জয়দেববাবুর এই বেনজির কাণ্ডে অবাক চিকিৎসক সমাজও। বারাসতের ডাঃ বিবর্তন সাহা বলেন, ‘বিষয়টি শুনেই অবাক লাগছে। ২৮ বছর ধরে মুখের ভিতরে কিছু থাকলে ক্ষতি হওয়াটাই স্বাভাবিক। উনি এটাকে মুখে রেখে কাজ করছেন কী করে তা ঠিক বুঝতে পারছি না।’
5h 5m ago
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

পরিবারের কারও শরীর স্বাস্থ্য নিয়ে চিন্তা বৃদ্ধির যোগ। জরুরি কাজকর্ম সর্বপ্রথম করে ফেলার চেষ্টা করুন।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.৬৩ টাকা৮৫.৩৭ টাকা
পাউন্ড১০৫.১৭ টাকা১০৮.৯০ টাকা
ইউরো৮৭.৫১ টাকা৯০.৮৯ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা