রাজ্য

আজমিরেও মন্দির! মোদিতন্ত্রে হিন্দুত্বই এজেন্ডা, আরএসএসের নির্দেশে তৃতীয় ইনিংসে শুধুই মেরুকরণ

সমৃদ্ধ দত্ত, নয়াদিল্লি: ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর বাবরি সৌধ ভাঙার পর হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির দুই জনপ্রিয় মুখ উমা ভারতী এবং সাধ্বী ঋতাম্ভরা অযোধ্যা থেকে স্লোগান দিয়েছিলেন, ‘ইয়ে তো এক ঝাঁকি হ্যায়, কাশী-মথুরা বাকি হ্যায়।’ তাঁদের সেই স্লোগান প্রবল জনপ্রিয় হয় পরবর্তীকালে। এবং তাঁদের পূর্বাভাস সত্যি করে অযোধ্যার ধাঁচেই কাশীর বিশ্বনাথ মন্দির সংলগ্ন জ্ঞানবাপী মসজিদ এবং মথুরার কৃষ্ণজন্মভূমি লাগোয়া শাহি ইদগা বিতর্ক-বিবাদ গিয়েছে আদালতে। মধ্যপ্রদেশের ভোজশালায় দীর্ঘদিন ধরে চলছে এই একই বিবাদ। মসজিদ বনাম সরস্বতী মন্দিরের দাবি ও পাল্টা দাবিতে সেখানেও মতান্তর বিচারাধীন। উত্তরপ্রদেশের সম্ভালে কয়েকদিন আগে শুরু হয়েছে মসজিদ বনাম মন্দির বিতর্ক। আর এবার? বিতর্কের কেন্দ্রে ভারতের বিখ্যাত দরগা আজমির শরিফ। আজমির আদালতে রাজস্থানের হিন্দু সেনার পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়েছে যে, এই মইনউদ্দিন চিস্তির দরগাস্থলে প্রকৃতপক্ষে ছিল মহাদেবের মন্দির। জাতীয় রাজনীতিতে আলোড়ন সৃষ্টি হওয়ার কারণ? আদালতের পক্ষ থেকে সেই আবেদন গ্রহণ করে কেন্দ্রীয় সরকারকে নোটিস দেওয়া হয়েছে। জানতে চাওয়া হয়েছে তাদের বক্তব্য। একই নোটিস গিয়েছে পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ বিভাগেও (এএসআই)। আবার বক্তব্য পেশ করতে বলা হয়েছে দরগা কমিটিকেও। সুতরাং গোটা ঘটনাক্রমের সারমর্ম—এবার আজমির দরগাও প্রবেশ করল কাশী-মথুরার মতো ধর্মীয় বিবাদ ও মতান্তরের রাজনীতির অন্দরে। বিরোধীদের বক্তব্য, বিজেপি এবার সর্বশক্তি দিয়ে শুরু করছে ধর্মীয় জিগিরের রাজনীতি। আর সঙ্ঘের নির্দেশ। আরএসএস স্পষ্ট জানিয়েছে, মোদির তৃতীয় ইনিংসে হিন্দুত্বই হবে প্রধান ইস্যু। মেরুকরণই মূল এজেন্ডা। 
আজমির নিয়ে এই দাবির কারণ কী? হিন্দু সেনা সভাপতি বিষ্ণু গুপ্ত ১৯১১ সালে প্রকাশিত হরবিলাস সারদার লিখিত একটি বইকে ‘প্রামাণ্য নথি’ হিসেবে তুলে ধরেছেন। সেই বইতে বলা হয়েছে, দরগার নীচের গর্ভগৃহে যেখানে খাজা মইনউদ্দিন চিস্তি শায়িত আছেন, তার আশপাশেই ছিল মহাদেবের লিঙ্গ। অতীতে সেখানে নিয়ম করে চন্দন প্রলেপ দিয়ে বন্দনা করতেন হিন্দু ভক্তরা। তাঁর দাবি, ওখানে একটি মন্দিরও ছিল। যদিও সেই মন্দিরের উপস্থিতি বা ধ্বংসের কোনও উল্লেখ বইতে নেই। ব্রিটিশ ইতিহাসবিদ পি এম কুরিও তাঁর বইতে একটি মহাদেবের মন্দিরের কথা উল্লেখ করেছেন। তিনি আর এইচ আরভিনের একটি গবেষণা গ্রন্থকে উল্লেখ করে বলেছেন, কথিত আছে, একটি শিবলিঙ্গ ছিল জঙ্গলে ঢাকা অংশে। তার কাছেই স্বয়ং মইনউদ্দিন চিস্তি ৪০ দিন ধরে নাকি সাধনা করেছিলেন। সেই কারণে পরবর্তীকালে তাঁর দরগায় গোটা বিশ্ব
থেকেই হিন্দু-মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ আসে। বিষ্ণু গুপ্তের দাবি দরগাকে সঙ্কটমোচন মহাদেব মন্দির হিসেবে ঘোষণা করতে হবে। 
১১৯২ সালে তরাইনের দ্বিতীয় যুদ্ধের পর উত্তর ভারতের বিস্তীর্ণ অংশের মতোই আজমির এসেছিল মহম্মদ ঘোরীর হাতে। মনে করা হয়, সেই বছরই পারস্য থেকে সন্ত মইনউদ্দিন চিস্তি এসেছিলেন এখানে। মূত্যু পর্যন্ত (১২৩৬) ছিলেন আজমিরেই। দাস বংশের সম্রাট ইলতুৎমিসের সময় শুরু হয় দরগা নির্মাণ। সমাপ্ত করেন মুঘল সম্রাট হুমায়ুন। বার্ষিক ঊরস উৎসব বিখ্যাত এই দরগায়। মুসলিম সংগঠনগুলির প্রশ্ন, মোদিতন্ত্রে কি প্লেসেস অব ওয়রশিপ অ্যাক্ট (১৯৯১) বলে আর কিছু থাকবে না? সেখানে স্পষ্ট বলা আছে, যে ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট ভারতের সব প্রান্তে যেখানে যে ধর্মস্থান যেমনভাবে আছে, তেমনই থাকবে। বিবাদ বাড়ছে। ধর্ম-রাজনীতির মানচিত্রে এবার অন্তর্ভুক্ত আজমির দরগা! এবার কি মন্দির রাজনীতি-২?
কলকাতা
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

পরিবারের কারও শরীর স্বাস্থ্য নিয়ে চিন্তা বৃদ্ধির যোগ। জরুরি কাজকর্ম সর্বপ্রথম করে ফেলার চেষ্টা করুন।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.৬৩ টাকা৮৫.৩৭ টাকা
পাউন্ড১০৫.১৭ টাকা১০৮.৯০ টাকা
ইউরো৮৭.৫১ টাকা৯০.৮৯ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা