কলকাতা

ভাগ্নের পুজোয় সূক্ষ্মদেহে আসেন শ্রীরামকৃষ্ণ

নিজস্ব প্রতিনিধি, আরামবাগ: ঠাকুর রামকৃষ্ণের ভাগ্নে হৃদয়রাম মুখোপাধ্যায় ১৮৬৮ সালে তাঁর সিহড় গ্রামের বাড়িতে দুর্গাপুজো করেন। সেই পুজোয় ঠাকুর রামকৃষ্ণ সূক্ষদেহে উপস্থিত ছিলেন। ঠাকুর নিজ মুখে তাঁর ভাবশরীরে উপস্থিত থাকার কথা জানিয়েছিলেন। পরম্পরা মেনে মন্দিরে দেবীদুর্গার পটচিত্রে পুজো হয়। গ্ৰামবাসীদের বিশ্বাস, ঠাকুর সূক্ষ্মদেহে এই পুজোয় এখনও উপস্থিত থাকেন।
ঠাকুর রামকৃষ্ণের সাধনজীবনে হৃদয় ছিলেন তাঁর মামার প্রধান সেবক ও সহায়ক। হৃদয়রাম প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর পর নিজের বাড়িতে দুর্গাপুজো করার সিদ্ধান্ত নেন। শ্রীরামকৃষ্ণ সেই পুজোর সম্মতিও দিয়েছিলেন। যদিও সেই পুজোয় যাওয়া নিয়ে ঠাকুর রামকৃষ্ণ উভয় সঙ্কটে পড়েছিলেন। রানি রাসমণির জামাতা মথুরবাবু শ্রীরামকৃষ্ণকে জানবাজারের পুজো ছেড়ে কোথাও যেতে দিতে রাজি ছিলেন না। তিনি অবশ্য হৃদয়রামের দুর্গাপুজোয় আর্থিক সহায়তা করার ব্যাবস্থা করে দিয়েছিলেন। হতাশ ভাগ্নেকে শ্রীরামকৃষ্ণ আশ্বস্ত করে বলেছিলেন, তুই শুধু শুধু দুঃখ করছিস কেন? আমি প্রতিদিনই তোর পুজোয় উপস্থিত থাকব। তবে স্থূল দেহে নয়, সূক্ষ্ম শরীরে। যখনই সূক্ষ্ম শরীরে আমি তোর পূজা দেখতে যাব, তখন আমাকে আর কেউ দেখতে পাবে না, কিন্তু তুই স্পষ্টই দেখতে পাবি। সেইসঙ্গে পুজো সংক্রান্ত ব্যাপারে উপদেশ দিয়ে বলেছিলেন, তুই অপর একজন ব্রাহ্মণকে তন্ত্রধারক রেখে নিজে আপনার ভাবে পুজো করিস এবং একেবারে উপবাস না করে মধ্যাহ্নে দুধ, গঙ্গাজল ও মিছরির শরবত পান করিস। ওইভাবে পুজো করলে মা জগদম্বা তোর পুজো নিশ্চয়ই গ্রহণ করবেন। হৃদয়রাম মামার নির্দেশ ও উপদেশ মতো পুজোর আয়োজন করেন। ষষ্ঠীর দিন দেবীর বোধন, অধিবাসাদি সম্পন্ন হয়। সপ্তমীর রাত্রে মা দুর্গাকে আরতি করার সময় তিনি বিস্ময়ে শ্রীরামকৃষ্ণকে সূক্ষ্ম শরীরে দেবী প্রতিমার পাশে ভাবাবিষ্ট হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেন। পরবর্তীকালে হৃদয়রাম বলতেন, দুর্গাপুজোর অবশিষ্ট প্রতিদিনই ওই একই সময়ে এবং সন্ধি পুজোকালে তিনি দেবী প্রতিমার পাশে তাঁর মামাকে জ্যোতির্ময় শরীরে দেখতে পেতেন। বিজয়া দশমীর কিছুকাল পরেই হৃদয়রাম দক্ষিণেশ্বরে ফেরেন। তিনি শ্রীরামকৃষ্ণকে সক্ষ্মদেহে দেখার কথা বলে। ঠাকুর তাঁকে বলেছিলেন, আরতি ও সন্ধিপুজোর সময় তোর পুজো দেখবার জন্য বাস্তবিকই প্রাণ ব্যাকুল হয়ে উঠত এবং তারই ফলে আমার ভাব হয়ে গিয়েছিল। তখনই আমি অনুভব করতাম, যেন জ্যোতির্ময় শরীরে তোর চণ্ডীমণ্ডপে উপস্থিত হয়েছি। পরিবারের সদস্যরা জানান ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ হৃদয়কে ভাবাবিষ্ট হয়ে বলেছিলেন, পরপর তিন বছর পুজো করার জন্য। ঠাকুরের নির্দেশ মেনেই তিনবছর প্রতিমা পুজো হয়। পরবর্তীতে পটচিত্রে দেবী দুর্গার পুজো শুরু হয়। হৃদয়রামের নাতি নবতিপর বিশ্বনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, আমার দাদুর সেই পুজো এখনও প্রথা ও রীতি মেনে হয়ে চলেছে। ঠাকুরের নির্দেশমতো তিনবারের পর প্রতিমা পুজো আর হয়নি। পটচিত্রে দেবী দুর্গার আরাধনা শুরু হয়। ১৮৯৯ সালে প্রায় ৫৯ বছর বয়সে দাদু সিহড় গ্ৰামে পরলোক গমন করেন। তাঁর মৃত্যুর পরেও ঠাকুরের নির্দেশিত নিয়মনীতি মেনেই পুজোর সব আচার পালন করা হয়। বিশ্বনাথবাবুর ছেলে দেবদুলাল মুখোপাধ্যায় বলেন, যে মাটির বাড়িতে ঠাকুর এসে থাকতেন সেই বাড়ি আজও আছে। বাঁকুড়া জেলার কোতলপুর ব্লকের জয়রামবাটি সংলগ্ন ইতিহাস প্রসিদ্ধ এই পুজোয় দূরদূরান্ত থেকে রামকৃষ্ণ ভক্তরা আসেন। স্থানীয় গ্ৰামবাসী নয়ন চট্টোপাধ্যায় বলেন, আমরা বিশ্বাস করি সূক্ষ্ম দেহে ঠাকুর এই পুজোয় এখনও উপস্থিত থাকেন।
12Months ago
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

ধর্মকর্মে সক্রিয় অংশগ্রহণে মানসিক তৃপ্তি ও সামাজিক সুনাম। পেশাদার শিল্পীদের শুভ সময়।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.১৫ টাকা৮৪.৮৯ টাকা
পাউন্ড১০৮.২৫ টাকা১১১.৮০ টাকা
ইউরো৯০.৭১ টাকা৯৩.৮৮ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা