অমৃতকথা

দীপাবলি

সংস্কৃতের ‘ক’, ‘ত’, ‘প’, ‘দ’ প্রাকৃতে ‘অ’ হয়ে যায়। তাই ‘দীপ’ হয়ে যায় ‘দীয়’। দীপ মানে আগুনের শিখা অথবা কোন একটা ছোট পাত্রে আগুন জ্বলছে। প্রদীপ মানে কোন একটা বড় পাত্রে শিখা জ্বলছে, দীপক মানে ছোট কী বড় দূর থেকে ঠিক বোঝা যছে না কিন্তু গরম লাগছে। যেমন দীপক রাগ যা শুনে শরীর গরম হয়ে যাচ্ছে। হেমন্ত ঋতুর গোড়াতে প্রচুর কীট-পতঙ্গ জন্মায় যারা ফসলের ক্ষতি করে। কীট-পতঙ্গের স্বাভাবিক ধর্ম হচ্ছে আগুন দেখলেই তার দিকে ছুটে যায়। এই কীট-পতঙ্গরা ফসল নষ্ট করে দেয় বলে চতুর্দশী রাত্রিতে প্রদীপ জ্বালিয়ে দেওয়া হত। তারা সেদিকে ছুটে এসে পুড়ে মরত। এতে ফসল তাদের হাত থেকে বেঁচে যেত। চতুর্দশী তিথি সবচেয়ে বেশী অন্ধকার। এতে যদি আলো জ্বালা হয় তাহলে সব পোকা আলোর কাছে এসে পুড়ে মরে যাবে, শস্য বেঁচে যাবে। এটাই হ’ল মুখ্য জিনিস, আসল জিনিস। এই যে জিনিসটা এটা করাবার জন্যে তাই দু’টো দিক আছে। একটা দিক ছিল প্রাচীনকালে তন্ত্রের সাধনা। তন্ত্রের সাধনা হ’ল অন্ধকারে আলোকের আহ্বান। অন্ধকারের ভেতরে আমি আলো খুঁজব। অন্ধকারে নিমজ্জিত মানুষের মধ্যে আলোর প্রভা জ্বেলে দেবো। দীপজ্ঞান এনে দেবো ভেতরে বাইরে। তা সেইজন্যে বলা হচ্ছে তন্ত্রে, এই তিথিতে প্রাচীনকালের বৌদ্ধতন্ত্রে তারা শক্তির পূজা করত। তোমরা আবার এই রকম ভেবো না যে সবই আমাদের দেশের জিনিস, সবই বেদে আছে। তা নয়। এই তারাতন্ত্র চীন থেকে এসেছিল, এনেছিলেন মহর্ষি বশিষ্ঠ। তা সেইজন্যে তান্ত্রিকদের কাছে অমানিশার অন্ধকারের গুরুত্ব আছে। বাঙলায় এই তারা দেবীরই রূপ হয় শ্যামা। কালিকা শক্তি ও তারা শক্তি বৌদ্ধতন্ত্র ছেড়ে যখন পৌরাণিক তন্ত্র নিল তখন তারা তারা শক্তিকেও কালী বলতে শুরু করল আর শ্যামাকেও কালী বলতে শুরু করল। পাঁজিতে লেখা আছে শ্যামা পূজা। তোমরা বল কালী পূজা। এইসব এক করে দেওয়া হ’ল। এই তন্ত্রের মহানিশাতে সাধারণতঃ এটা করতে হয়, তার প্রাক্‌কালীন ব্যবস্থা হিসেবে চতুর্দশীতে চৌদ্দোটা প্রদীপ জ্বালানো হত। এর অর্থ দাঁড়াচ্ছে, আমি এবার পরের দিন ভাল করে আলো জ্বালব, অন্ধকারে আলোকসম্পাত করব। এই রকম আইডিয়া ছিল। আবার হিন্দু পৌরাণিক গল্প—সে তো তোমরা জান। একবার শ্রীকৃষ্ণ দ্বারকার বাইরে গেছলেন। সেই সময় নরকাসুর নামে একজন অনার্য সর্দার দ্বারকা আক্রমণ করেছিল। যুদ্ধে নরকাসুরের মৃত্যু হয়েছিল। সেদিন ছিল চতুর্দশী তিথি। এই নরক চতুর্দশী তিথিতে চৌদ্দটা প্রদীপ জ্বেলে উৎসব করেছিল আর পরের দিন অমাবস্যাতে সত্যভামার পুজো করা হয়েছিল। সত্যভামাকে আখ্যা দেওয়া হয়েছিল মহালক্ষ্মী দেবী। সেই জন্যে পশ্চিম ভারতের লোকেরা নরক চতুর্দশী বলে, বাঙলার লোকেরা বলে ভূত চতুর্দশী। বাঙলায় তন্ত্র সাধনা হত কার? সেই বৌদ্ধ তারা দেবীর। কালিকারও নয়, শ্যামারও নয়। আর তারা দেবীর তিনটি নাম ছিল—ভ্রামরী তারা, তিব্বতে নাম নীল সরস্বতী বা বজ্রতারা আর বাঙালীস্তানে উগ্রতারা। তারার বিভিন্ন প্রকারভেদ হয়েছে। চীনের প্রাচীন গুহাতে তারা দেবীর অজস্র মন্দির রয়েছে।  
শ্রীআনন্দমূর্ত্তির ‘আনন্দ বচনামৃতম্‌’ (২৩-২৫ খণ্ড) থেকে
21d ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

ব্যবসা ও পেশায় ধনাগম ভাগ্য আজ অতি উত্তম। বেকারদের কর্ম লাভ হতে পারে। শরীর স্বাস্থ্য...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.৫৯ টাকা৮৫.৩৩ টাকা
পাউন্ড১০৫.০৬ টাকা১০৮.৭৯ টাকা
ইউরো৮৭.৪৫ টাকা৯০.৮১ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা