জলপথ পরিবহণ কর্মে বিশেষ শুভ। হস্তশিল্পী, হিসাব-শাস্ত্রবিদ প্রমুখের কর্মে উন্নতি ও সুনাম। মানসিক অস্থিরতা থাকবে। ... বিশদ
জুনেইদ খান, খুশি কাপুর
আশুতোষ রানা, গ্রুষা কাপুর
প্রেম-ভালোবাসা বড় মনের মতো জিনিস। মনের মানুষকে আগলে রাখা, তাকে বিশ্বাস করা, তার ভালো-মন্দ সবটুকু আপন করে নেওয়া – সে বড় সহনশীলতার কাজ। আর তা না হলে, শুধু একজন মানুষের সঙ্গে বছরের পর বছর কাটিয়ে দেওয়া সহজ নয়। প্রেমকে আমরা যতটা মন ফুরুফুরে অনুভূতি ধরে নিই না কেন, প্রেমে থেকে যাওয়া সহজ তো নয়।
প্রেমে পড়া যত সহজ, প্রেমে থেকে যাওয়া ততটাই কঠিন। আজকের এই ডিজিটাল দুনিয়ায়, সে এক বিষম বস্তু! হাতের মোবাইলে ইন্টারনেট। সারা দুনিয়া মুঠোয় বন্দি। কয়েক ক্লিকেই পছন্দের জিনিস চলে আসে দোরগোড়ায়। মানুষের কাছে বিকল্পের লিস্টও তাই লম্বা। এতে লাভ যেমন হয়েছে, ক্ষতির পরিমাণও কম নয়। সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে নিজের পছন্দের মানুষকে খুঁজে নেওয়ার বিকল্পও বেড়েছে। এক মানুষে মন বসে না বেশিদিন। মনে হয়, এর চেয়েও ভালো কিছু প্রাপ্য বুঝি। এক মানুষকে মন দিলেও প্রলোভনের হাতছানিতে অনেক।
অদ্বৈত চন্দনের ছবি ‘লাভিয়াপ্পা’ এই বিষয়টিকেই প্রাধান্য দেয়। ২০২২ সালে প্রদীপ রঙ্গনাথন পরিচালিত তামিল ছবি ‘লাভ টুডে’ গল্পের মূল নির্যাস থেকেই তৈরি এই ছবি। আপাতদৃষ্টিতে তাকে রোম্যান্টিক-কমেডি হিসেবে দেগে দিলেও, এই গল্প এক গম্ভীর বিষয় নিয়ে কথা বলে, যা শুধু ‘জেন জি’ কেন, আজকাল প্রায় সব বয়সের মানুষের জীবনেই সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গৌরব সচদেব (জুনেইদ খান), আর বানি শর্মা (খুশি কাপুর) ভালোবাসে একে-অপরকে। মনে করে তারা দু’জন, দু’জনকে খুব ভালো করে চেনে, কেউ কারও থেকে কোনও কথা লুকিয়ে রাখে না। একেবারে নিখুঁত জুটি। কিন্তু বানির বাবা অতুল শর্মা এই সম্পর্কের কথা জেনে যাওয়ায় মুশকিল হল। সে এই বিয়েতে একটাই শর্ত দিল। একে অপরের ফোন বদল করতে হবে ২৪ ঘণ্টার জন্য! এ তো প্রায় অসম্ভব কাজ। কী এমন থাকে ফোনে যা কোনও সম্পর্ককে প্রশ্নের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিতে পারে? ২০২৫-এ এই ছবির বিষয় বেশ জরুরি ও বাস্তব। তবে চিত্রনাট্যে একসঙ্গে চ্যাটিং, সেক্সটিং, ডেটিং অ্যাপ, অনলাইন নিগ্রহ, ডিপফেক— এত কিছু ঠেসে দেওয়া হয়েছে যে খানিক দমবন্ধ লাগে। এত কথা বলতে গিয়ে ছবির দৈর্ঘ্যও বেড়েছে, যার কোনও প্রয়োজন ছিল না।
বিষয় যেখানে জটিল, সেখানে অভিনয় হওয়া উচিত আরও পোক্ত। জুনেইদ খানের ‘হিরো সুলভ’ ক্যারিশমা না থাকলেও অভিনয়টা মন দিয়ে করেছেন। খুশি কাপুর তাঁর আগের ছবি থেকে অনেক উন্নত, তবে এখনও অনেক পথ চলা বাকি। এই ছবির মূল তন্ত্রী বাঁধা আশুতোষ রানা ও গ্রুষা কাপুরের অভিনয়ে।
মানুষের সম্পর্ক আজকাল বড় ঠুনকো। অল্পেই চিড় ধরে। ছেড়ে যেতে কতক্ষণ? একে-অপরের হাত ধরে থাকাটাই তো আসল ভালোবাসা। সেটাই হয়তো শেখাল এই ছবি।