অর্থপ্রাপ্তির ক্ষেত্রটি বেশ অনুকূল। ব্যবসা, পেশা প্রভৃতি সব কর্মেই কমবেশি উন্নতি ও প্রসারের যোগ। ধর্ম ... বিশদ
হ্যাপি বার্থডে...
ও তাই! আজ আমার জন্মদিন (হাসি)! থ্যাঙ্ক ইউ...।
‘খাদান’ এবারের জন্মদিনটা স্পেশাল করে দিল তো!
বাংলা সিনেমার ব্যবসার গ্রাফটা বদলেছে মনে হচ্ছে?
আপনার হিসেব সেকথাই তো বলছে, নাকি?
এখন যা ট্রেন্ড প্রতিদিন প্রায় এক কোটি টাকার ব্যবসা করছে।
এত পরিশ্রমের পর এবার স্বস্তি হচ্ছে তো?
রিলিফ লাগছে না। বরং টেনশন বেড়ে গেল। পরের ছবিটা এর থেকেও বড় কী করে করব, সেটা টেনশন! এই ছবিটা করতে তিন বছর লাগল। পরের ছবিটা করতে আরও তিন বছর লাগলে সমস্যা হয়ে যাবে (হাসি)। আসলে প্রত্যাশা বেড়ে গেল। আমিই আমার প্রতিযোগী। ‘খাদান’ আমার জীবনে নিজের সঙ্গে এমন একটা প্রতিযোগিতা তৈরি করে দিল, সেটা কীভাবে ভাঙব, তা নিয়ে চিন্তায় পড়ে গিয়েছি।
পরের বছর কি ‘খাদান ২’ আসবে?
পরের বছরই হবে না। ২০২৬-তে প্ল্যান করছি।
‘খাদান’ বাংলা কমার্শিয়াল ছবির কোন কোন অভাব পূর্ণ করল?
আমার মনে হয়, ঠিকঠাক মেনস্ট্রিম ছবি দেখার খিদে তৈরি হয়েছিল দর্শকের। আমার মধ্যে এই ধরনের ছবি করার যতটা খিদে ছিল, দর্শকের মধ্যে দেখার খিদেও ছিল। সেই দুটো কোথাও মিলে গিয়ে এক হয়ে গিয়েছে। এরপর হচ্ছে কানেকশন। ‘খাদান’ নিয়ে আমরা যে বেঙ্গল ট্যুর করলাম, সেখানে ছবিটা নিয়ে মানুষকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছি।
সাফল্যটা কীভাবে দেখছেন?
দারুণ প্রশ্ন। এটার উত্তর দিতে চাই। সাউথ সিটিতে যেমন প্রতিদিন দর্শককে নাচতে দেখছি। তেমনই মুর্শিদাবাদের হলে গিয়েও দর্শক নাচছেন, সেটা দেখছি। লোকে বলত, বাংলা কমার্শিয়াল সিনেমা চলে না। কলকাতার বাইরে শুধু হিন্দি ছবি চলে। যে কোনও সিঙ্গল স্ক্রিনে খবর নিতে পারেন, প্রতিদিন খাদান রেকর্ড করছে। গ্রামবাংলা জুড়ে যে উত্তেজনা, সেটা আনন্দের। এমন চাহিদা তৈরি হয়েছে, মাটিতে বসে লোকে ছবি দেখছে।
কোন দায়িত্বটা সবথেকে বেশি এনজয় করলেন?
যদি সত্যি কথা জিজ্ঞেস করেন, ছবিটা জুড়ে ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টরের টুপিটা পরে সবথেকে বেশি আনন্দ পেয়েছি। এটা আমার স্বপ্নের প্রজেক্ট। প্রতিটা লোকেশন আমার বাজেটের মধ্যে কীভাবে মাউন্টিং করব, অন্য ভাষার ৫০০ কোটির ছবির সঙ্গে লড়াই করব, সেটা আমার চ্যালেঞ্জ। আমার দর্শক যেন কোথাও মনে না করেন, আমরা পিছিয়ে রয়েছি। হিন্দি, ইংরেজি, বাংলার আরও নানা ছবির মধ্যে আমরা হল বাড়ানোর জন্য লড়ছি। ২০২৪-এই আমি বাংলা মেনস্ট্রিম ছবি রিলিজ করব, এই সিদ্ধান্তটা নেওয়াটাও চ্যালেঞ্জের ছিল। ‘প্রজাপতি ২’ অ্যানাউন্স করা হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু আমার মনে হয়েছিল, ফ্যামিলি ড্রামা থেকে অন্তত এক বছরের বিরতি চাই।
সব চ্যালেঞ্জেই তো উতরে গিয়েছেন?
‘খাদান’-এর সাফল্য আমার কাছে কতটা তৃপ্তির, সেটা বলে বোঝাতে পারব না। কারণ এই ছবিটাতে অনেকগুলো ঝুঁকি নিয়ে নিয়েছিলাম। অনেকগুলো সম্পর্ক ‘খাদান’-এর সঙ্গে জুড়ে ছিল। যদি এই সিনেমাটা না চলত, অনেকগুলো মানুষকে বোঝাতেই আমার এক বছর লেগে যেত।
২০২৪-এর সেরা প্রাপ্তি এই ছবিটাই?
দেখুন, অভিনেতা হিসেবে নিজেকে বরাবর ভাঙতে চাই। ভেঙেওছি। এবছর ‘টেক্কা’ও খুব পরীক্ষামূলক ছবি ছিল। নিজের কমফর্ট জোন থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। সেই সাহস আমি সব সময় দেখিয়েওছি। এই চ্যালেঞ্জটা নিজেকে ছুড়ে দিতে ভালোই লাগে। আমি প্রসেসটা এনজয় করি।
নতুনদের সুযোগ দেওয়াটাও তো ঝুঁকির ছিল?
এই ঝুঁকি তো নিতেই হবে। পার্থ, সুমিত গাঙ্গুলি, রাজা দত্ত, এরা এখন কাজ পায় না, হারিয়েই গিয়েছে। কেউ যাত্রা করছে, কেউ মাচা করে সংসার চালাচ্ছে। তাদের তুলে নিয়ে আসা, তাদের উপর ভরসা করা, সেটাও গুরুত্বপূর্ণ।
শেষ প্রশ্ন, ‘বাঙালি কাঁকড়ার জাত’ সেই প্রবাদটা এই জার্নিতে মনে পড়ছে?
(হা হা হা) ভালো বলেছেন। এবারেও যদি আমার সঙ্গে কেউ সহযোগিতা না করেন, তাহলে আর কখন করবেন? একটা ছবি তো চলছে। ‘পুষ্পা’, ‘কেজিএফ’-এর সঙ্গে ‘টনিক’ দিয়ে তো লড়াই করতে পারব না। ‘খাদান’ দিয়েই লড়াই করতে হবে, সেটা প্রমাণ হল আজ। দেখুন, আমি ভিক্ষে চাই না। ছবিটা ইন্ডাস্ট্রির লোকেদের ইমপ্রেস করার জন্য বানাইনি। ছবিটা বানিয়েছি দর্শকের জন্য। তাঁরা রমরমিয়ে দেখছেন। আমি খুশি। আমার লড়াইটা আমার একার তো। যিনি সঙ্গে এলেন, ভালো কথা। যিনি এলেন না, তাঁকে নিয়ে আমার দুঃখ নেই। সবাইকে শুভেচ্ছা। সকলের ছবি ভালো চলুক। কিন্তু যে ছবিটা চলছে, সেটাকেও চলতে দেওয়া হোক।