শরীর ভালো যাবে না। সাংসারিক কলহবৃদ্ধি। প্রেমে সফলতা। শত্রুর সঙ্গে সন্তোষজনক সমঝোতা। সন্তানের সাফল্যে মানসিক ... বিশদ
ঠিক সন্ধে সাড়ে ছ’টা। আধো অন্ধকার প্রেক্ষাগৃহ তখন কানায় কানায় পূর্ণ! দর্শকাসনে ছোট আর বড়পর্দার বহু পরিচিত মুখ। মঞ্চ তখন বহু নক্ষত্র সমাবেশে আলোকময়। স্বনামধন্য নাট্যব্যক্তিত্ব রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত, বিভাস চক্রবর্তী, গৌতম হালদার, সেঁজুতি মুখোপাধ্যায়, অভিনেতা শুভাশিস মুখোপাধ্যায়, ঈষিতা মুখোপাধ্যায়, দুই বাচিকশিল্পী বিজয়লক্ষ্মী বর্মন ও ব্রততী বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অবশ্যই যাঁকে ঘিরে এই উজ্জ্বল-সন্ধ্যার আয়োজন সেই দেবশঙ্কর হালদার।
অনুষ্ঠানের সূচনায় ‘যে ধ্রুবপদ দিয়েছ বাঁধি’ গেয়ে শোনালেন শিল্পী রুমা জানা। এরপর একে একে বিশিষ্ট অতিথিদের বক্তব্যে উঠে এল ব্যক্তি দেবশঙ্কর এবং অভিনেতা দেবশঙ্করের চরিত্রের জানা-অজানা নানা দিক। শোভন গুপ্ত জানালেন, প্রায় বছর তিনেক আগে প্রথম এই ধরনের ভাবনা এসেছিল তাঁর মনে। মধ্যমগ্রামের এক মঞ্চে সেদিন শো ছিল দেবশঙ্করের। সেখানেই তিনি তাঁকে এই প্রস্তাবটি দেন। তারপর বহু অধ্যাবসায়, বহু কথপোকথন এই সবকিছুর মধ্যে দিয়ে ধাপে ধাপে এগিয়ে অবশেষে আজকের এই দিনটি এল। সাতশো পাতার এই বইটি মূলত গবেষণাধর্মী। স্বনামধন্য ব্যক্তিত্বদের কলমে ১৫০টি লেখা আর শতাধিক ছবি রয়েছে গ্রন্থটিতে। বাংলা থিয়েটারের ইতিহাসে এই আকর গ্রন্থটি একটি মূল্যবান দলিল, বিশেষত আগামী প্রজন্মের কাছে, যারা ভবিষ্যতে এই বিষয়টি নিয়ে গবেষণা করতে চায়, জানালেন গৌতম হালদার।
বক্তব্যের স্বল্প পরিসরে বিজয়লক্ষ্মী বর্মন শোনালেন, ব্যক্তি দেবশঙ্করের আন্তরিকতা এবং সহমর্মিতার গল্প। ব্রততীর কথায়, এমন একজন দেবশঙ্করের জন্যে মানুষ সারাজীবন অপেক্ষায় থাকতে পারে! দেবশঙ্করের পিতা অভয় হালদারের সঙ্গে একমঞ্চে অভিনয় করেছেন নাট্যব্যক্তিত্ব বিভাস চক্রবর্তী। সেই স্মৃতিচারণে আবেগ বিহ্বল তিনি। অদ্ভুত এক অনুভূতিতে মন ছুঁয়ে যায়, বর্ষীয়ান শিল্পী রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্তের কথাগুলি। বলেন, ‘আজ আমার ৮৪ বছর বয়স। আকাশের তারা হয়ে যাবার সময় হয়ে এসেছে। তারা হয়ে গিয়েও আমি দূর থেকে দেখব, কেউ তো আছেন বাংলা নাটককে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্যে।’
আর দেবশঙ্কর, তাঁর কথায় নিজের সম্পর্কে এত ভালো ভালো কথা সামনে বসে শোনা সত্যি বিড়ম্বনা। তবু বইটি সবাই পড়লে তাঁর ভালো লাগবে। সার্থক হবে এদের এই উদ্যোগ। অনুষ্ঠানের শেষ পর্ব, ‘দেবশঙ্কর এবং দেবশঙ্কর’ সেখানে শুধুই একরাশ মুগ্ধতা! কীভাবে ব্যক্তিমানুষ দেবশঙ্কর বহু নাটকের বহু চরিত্র হয়ে ওঠেন ভাবতে সত্যিই বিস্ময় জাগে!