সাংগঠনিক কর্মে বড় সাফল্য পেতে পারেন। উপস্থিত বুদ্ধি আর সাহসের জোরে কার্যোদ্ধার। বিদ্যায় সাফল্য। ... বিশদ
কাঁধের জয়েন্টের অত্যন্ত যন্ত্রনাদায়ক সমস্যা ‘ফ্রোজেন শোল্ডার’। তানিয়ে গবেষণার জন্য সেই হোমিওপ্যাথিই এবার সেরার শিরোপা পেল অ্যালোপ্যাথি তথা মডার্ন মেডিসিনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শাখার চিকিৎসক সম্মেলনের মঞ্চে। বাত সংক্রান্ত চিকিৎসা শাখা রিউম্যাটোলজি’র চিকিৎসকদের রাজ্য সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ক’দিন আগেই। সেখানে সেরা ই-পোস্টারের জন্য পুরষ্কৃত হলেন বাংলার এক সরকারি হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র ডাক্তার।
১৮ ও ১৯ ফেব্রুয়ারি শহরের এক পাঁচতারা হোটেলে ইন্ডিয়ান রিউম্যাটোলজি অ্যাসোসিয়েশন-এর রাজ্য শাখার এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেখানেই সেরা ই-পোস্টারের জন্য সম্মানিত হন ট্যাংরার ডি এন দে হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক তথা পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেনি (পিজিটি) ডাঃ ইন্দ্রাণী হালদার।
দেখা যাক ঠিক কী কারণে সম্মানিত হলেন বাংলার অন্যতম সরকারি হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজের এই তরুণ চিকিৎসক। মডার্ন মেডিসিন শাস্ত্রে ফ্রোজেন শোল্ডারের ভালো নাম হল ‘অ্যাডহ্যাসিভ ক্যাপসুলাইটিস’। কাঁধের জয়েন্টের এই সমস্যায় প্রচণ্ড ব্যথা হতে থাকে। জয়েন্ট স্টিফ বা আড়ষ্ট হয়ে যায়। সময়ে চিকিৎসা না করালে এমন শক্ত হয়ে যায়, কাঁধ নাড়ানো পর্যন্ত যায় না। সাধারণভাবে পুরুষদের থেকে মহিলারা এই সমস্যায় বেশি ভোগেন। সুগার থাকলে সমস্যায় পড়ার আশঙ্কাও বেশি। ফি বছর বিশ্বজুড়ে অসংখ্য খেলোয়াড় ও বিভিন্ন পেশাজীবী এই সমস্যা নিয়ে এমন বিপদে পড়েন, জীবনের কয়েক মাস এমনকী সম্পূর্ণ নিরাময়ে কয়েকবছর পর্যন্ত চলে যায়।
সালফার, রাসটক্স এবং ব্রায়োনিয়া অ্যালবা নিয়ে চলে এই গবেষণা। ডি এন দে হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজের ৬০ জন রোগীকে দুটি গোষ্ঠীতে ভাগ করে কাজ শুরু হয়। একটি ভাগে থাকা রোগীদের দেওয়া হয় প্লাসিবো (জানুন জল)। অন্য অংশের রোগীরা পান এই তিন হোমিওপ্যাথিক ওষুধ।
দেখা যায়, ব্যথা বেদনার আন্তর্জাতিক সূচক অক্সফোর্ড শোল্ডার স্কোর (ওএসএস) এবং শোল্ডার পেন অ্যান্ড ডিজএবিলিটি ইনডেক্স—দুই ক্ষেত্রেই উল্লেখযোগ্য লাভ পেয়েছেন হোমিওপ্যাথিক ওষুধ পাওয়া রোগীরা। ব্যথাবেদনা যথেষ্টই কমেছে। শারীরিকভাবেও আগের থেকে অনেক বেশি ফিট আছেন। ইন্দ্রানী বলেন, সবচেয়ে ভালো লেগেছে নামজাদা সব অ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসকরা খোলা মনে আমাদের গবেষণাটি গ্রহণ করেছেন। প্রশংসা করেছেন। গবেষণাপত্র হিসেবে প্রথম সারির জার্নালে প্রকাশের জন্য পাঠানো উচিত বলে জানিয়েওছেন।
ইন্ডিয়ান রিউম্যাটোলজি অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য সম্পাদক এবং বিখ্যাত রিউম্যাটোলজিস্ট ডাক্তার পরাশর ঘোষ বলেন, 'আমরা গবেষণার গুণ দেখেছি। হোমিওপ্যাথি না এলোপ্যাথি এইভাবে দেখিনি। আমাদের বিশিষ্ট বিচারকরা সবদিক বিচার করে এই সম্মান দিয়েছেন'।