সাংগঠনিক কর্মে বড় সাফল্য পেতে পারেন। উপস্থিত বুদ্ধি আর সাহসের জোরে কার্যোদ্ধার। বিদ্যায় সাফল্য। ... বিশদ
বিংশ শতকের শুরুর দিকে যখন নির্বাক চলচ্চিত্রের মাধ্যমে উপমহাদেশে চলচ্চিত্র শিল্পের উৎপত্তি ঘটে, তখনও নারী চরিত্রগুলো ছিল খানিক আলংকারিক। ক্রমে ক্রমে সবাক ছবি এল। কিন্তু সে জমানাতেও নারীর ভূমিকা সেভাবে ব্যতিক্রমী হল কি? বরং আরও অনেক কিছুর মতোই নারীও সেখানে হয়ে রইল সৌন্দর্যের উপাদান। কেননা পুরুষতান্ত্রিক সমাজের চিন্তাভাবনার ছাপ পড়ত চলচ্চিত্রেও। আর দর্শকদের কথা ভেবে চলচ্চিত্র নির্মাতারা নারীদের কোথাও একটা সীমাবদ্ধ করে রেখেছিলেন কিছু নির্দিষ্ট বিভাগে। সেজন্যই ছবিতে বারবার প্রতিফলিত হতো মমতাময়ী মা, দায়িত্বজ্ঞানসম্পন্না স্ত্রী কিংবা অভিমানী প্রেমিকার ভাবমূর্তি। তখনকার চলচ্চিত্রে নারী পরিসর বলতে মূলত এটুকুই। কেউ কেউ আবার নারীকে চিত্রিত করেছেন অতিমানবী হিসাবে। কিন্তু সামাজিক ও পারিবারিক ভূমিকার বাইরে আমরা নারীকে ‘মানুষ’ হিসেবে দেখাতে এবং দেখতে শুরু করার শিক্ষা পেয়েছি অনেকটা পরে। আগে মনে করা হতো, নারী চরিত্রটি যেন পুরুষদের পছন্দসই হয়। সময় এগিয়েছে ঠিকই, কিছু কিছু ক্ষেত্রে এখনও বহু পরিচালক চেষ্টা করেন নারী চরিত্রটিকে পুরুষ দর্শকের ‘দৃষ্টিনন্দন’ করে তুলতে। এই দেখার অভ্যাস থেকে দর্শকও তাই পুরোপুরি বেরতে পারে না। সেখানেও মহিলা চরিত্র ঘিরে থেকে যায় একইরকম প্রত্যাশা।
ভারতীয় চলচ্চিত্রে সেসময় সাধারণত দু’ধরনের নারীকে দেখি আমরা। একদিকে শান্ত, স্নিগ্ধ, মহিয়সী নারী যার কোনও দোষ ত্রুটি চোখেই পড়ে না। আর একদিকে দেখি রূঢ় ও অসুন্দর, লোভী, কুচক্রী নারী, যাদের দোষের শেষ নেই! এই চরিত্রগুলোয় একধরনের অতিনাটকীয়তা চোখে পড়ে। এই সাদা-কালোর বাইরে যেন কিছু নেই। দোষেগুণে মিলিয়ে মানুষ। নারীর বেলায় নিক্তি মেপে শুধুই গুণ অথবা দোষের হিসেব। দোষ-গুণ মিলিয়ে ধূসরে দেখা যাবে না কেন— এ প্রশ্নটাই জাগে না।
গত দশ বছর ধরে বিভিন্ন বিষয়ের উপরে শর্ট ফিল্ম তৈরি করে চলেছে ‘প্রয়াসম ভিস্যুয়াল বেসিকস’ (পিভিবি)। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটির আরও নানা সামাজিক ক্রিয়াকর্মের মধ্যে এটি অন্যতম। এই ছবিগুলির বিষয় হিসেবে কখনও উঠে এসেছে পরিবার, নারী-পুরুষ সম্পর্ক, সমলিঙ্গ সম্পর্ক, কখনও শিক্ষামূলক বার্তা, কখনও আবার রহস্য গল্পও। নয় নয় করে এতদিনে ৭৪টি শর্ট ফিল্ম তৈরি করে ফেলেছে তারা। সেগুলি প্রদর্শিত ও প্রশংসিত হয়েছে দেশ-বিদেশের বহু জায়গায়। এই বছর তারা তৈরি করেছে নতুন ১০টি শর্ট ফিল্মের সংগ্রহ— ‘দশকথা’।
বিভিন্ন দশকের চলচ্চিত্রে নারীদের ইতিবাচক ভূমিকা কিংবা সংকীর্ণ উপস্থাপনার বাইরে গিয়ে এই ছবিগুলি তৈরি করার লক্ষ্য নিয়েছে পিভিবি। গত এক দশকে চলচ্চিত্র শিল্পের উপর কাজ করতে গিয়ে পিভিবি-র তৈরি সিনেমায় নারী উপস্থাপনার বিষয়টি নিয়ে একটা আলোচনার জায়গা শুরু হয়। সেই সূত্রেই ওঁরা বেছে নেন গত ৮ মার্চ দিনটিকে। নারীসত্তার নিরপেক্ষ উদ্যাপন করতে এই আয়োজন। শিশুকন্যা থেকে মহিলা হয়ে ওঠার প্রতিটি পর্বকে এই বিশেষ দিন উদ্যাপন করে। একজন তরুণী থেকে মা অথবা সাধারণ এক মহিলা থেকে পেশাগত জীবনে অসাধারণ হয়ে ওঠার মধ্যে প্রতিটি মহিলার জীবনে কিছু না কিছু লড়াইয়ের কাহিনি থাকে। সেই লড়াইকে কুর্নিশ জানাতেই বেছে নেওয়া নারীদিবসকে। মহিলাদের আর্থিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক অস্তিত্বের সবটাই শামিল এই যাত্রায়।
এই আলোচনায় যোগ দিয়েছিলেন ‘দশকথা’-রই কয়েকজন প্রধান চরিত্র। সেই কথোপকথনেই উঠে আসে সিনেমায় মহিলাদের উপস্থাপনের বিষয়টি। প্রথম শর্ট ফিল্ম ‘অ্যামেরিকার গন্ধ’-এ অভিনয় করেছেন মীরা দাস। তিনি জানালেন, ছবিতে যে ভূমিকায় অভিনয় করেছেন, তার সঙ্গে বাস্তবে কোথাও যেন মিল খুঁজে পান। তাঁর কথায়, ‘আমি ষাটোর্ধ্ব মা। আমার ছেলে বিদেশ থেকে আসবে। শুনেই তার জন্য আমি ঘর গোছাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ি। কিন্তু সে আমাকে একবারটিও জিজ্ঞেস করে না, মা তুমি কি ওইসময় ফ্রি থাকবে? মায়েরও যে আলাদা একটা জগৎ থাকতে পারে তা আমার ছেলের ভাবনাতেই আসে না। আমরা মায়েরা, অন্তত কিছুটা সময় নিজেদের মতো করে কাটাব না কেন? সেটা ছেলেমেয়েরা দেখলে তবে তো বুঝবে। এই বার্তাটা আমাদের ছবি দেখে মানুষ যেন বোঝে।’
এই সিরিজের দ্বিতীয় ছবি, ‘ভাঙাবাড়ি’র সহ-পরিচালক স্নেহাশিস মুখোপাধ্যায় মনে করেন, প্রতিটি ফিল্মে মহিলা চরিত্রগুলোর যথাযথভাবে প্রতিফলন ঘটানোর চেষ্টা করা হয়েছে। মাথায় রাখা হয়েছে বলিষ্ঠ নারীচরিত্র এবং তাদের ইতিবাচক ভূমিকার কথা। এই ক্ষেত্রে গণমাধ্যমেরও শক্তিশালী ভূমিকা রয়েছে। স্নেহাশিসের মতে, এধরনের স্বল্প দৈর্ঘ্যের ছবি নিয়ে যত বেশি মানুষের কাছে পৌঁছনো যাবে, ততটাই বাড়বে সচেতনতা। অর্থাৎ দরকার নির্দিষ্ট প্ল্যাটফর্ম, যেখানে মানুষ সিনেমাগুলো দেখতে পাবে। সে বৈদ্যুতিন মাধ্যম হোক বা পাড়ায় পাড়ায় স্ক্রিনিং। এই ছবির অভিনেতা শ্রাবণী মৈত্র জানালেন, তাঁর চরিত্রটি খুবই বাস্তবধর্মী। গল্পে তিনি যে পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছেন, বাস্তবে যদি কখনও তিনি এমন পরিস্থিতিতে পড়েন, তাহলে ছবিতে যে পদক্ষেপ করেছেন, তেমনটাই করবেন বাস্তবে।
দশকথার তৃতীয় ছবি ‘সোনালী দিন’-এ অভিনয় করেছেন শ্রদ্ধাঞ্জলী কুণ্ডু। তিনি জানালেন ছবিতে তাঁর ভূমিকার কথা। ‘আমার চরিত্রে তুলে ধরা হয়েছে একজন কেরিয়ারমনস্ক মহিলার দিনযাপন। খুব সিরিয়াস, নিজের পড়াশোনা নিয়ে সে ব্যস্ত। বয়ফ্রেন্ডের জন্যও সময় নেই। চোখে উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশ পাড়ি দেওয়ার হাতছানি। সে মনে করে আগে নিজের পায়ে দাঁড়ানো জরুরি, তারপর বয়ফ্রেন্ড বা অন্য কিছু। এই ভূমিকায় অভিনয় করতে খুবই ভালো লেগেছে। বাস্তবে আমি এরকমই। পড়াশোনা শেষ করে এখন কর্পোরেট সেক্টরে চাকরি শুরু করেছি। আমার দৃঢ় ধারণা, ঘর হোক বা বাইরে— মহিলারা সমান তালে দায়িত্ব সামাল দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। পরনির্ভরশীলতার শিকল ভাঙাই যে নারী প্রকৃত ক্ষমতায়ন তা আমাদের বোঝা প্রয়োজন। আমি কখনও ভাবিনি যে, মেয়ে মানেই যেটুকু লেখাপড়া হচ্ছে হোক, তারপর বিয়ে-থা, সংসার ইত্যাদি। নিজেকে ঠিকমতো গুছিয়ে নিয়ে এগনোটা এখন সব মেয়েরই খুব দরকার,’ একটানা বলে যান শ্রদ্ধাঞ্জলী। তাঁর কথায় হাততালির ঝড় বুঝিয়ে দেয় এযুগের মেয়েদের আকাঙ্ক্ষা এখন আকাশ ছোঁয়ারই।
চতুর্থ ছবি ‘তকমা’-র অরূপ ঘোষ জানালেন, এই ছোট ছোট ছবিগুলিতে চিত্রনাট্য সংক্ষিপ্ত ঠিকই, কিন্তু স্বল্প পরিসরে গল্পের নিপুণ বর্ণনা পাবেন দর্শক। স্বল্প দৈর্ঘ্যের এই ছবি নিয়ে বলতে গিয়ে তিনি জোর দিলেন পারিবারিক দায়দায়িত্ব ও সম্পর্কের উপরে। তাঁর কথায়, ‘আমরা বড়রা ছেলেমেয়েদের যেন সবসময় ভরসা জোগাতে থাকি যে তুই পারবি, তোকে দিয়েই হবে। এইভাবে আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে তুলতে চেষ্টা করা যায়, হাল না ছাড়ার বার্তা দেওয়া যায়।’ এই ছবির অন্য অভিনেতা বৃন্দা মুখোপাধ্যায় জানালেন, গল্পে মেয়েটির ভূমিকার মাধ্যমে সদর্থক বার্তা দেওয়া হয়েছে। এটি যে কোনও মেয়ের কাছেই অনুপ্রেরণা হয়ে উঠতে পারে। বিশেষ করে হিংসা, নির্যাতন, নানাভাবে হেনস্থার শিকার হওয়া মহিলাদের কাছে এটা একটা শিক্ষণীয় ব্যাপার যে কীভাবে আবার উঠে দাঁড়ানো যায়, বাস্তবে ফিরে আসতে হয় লড়াই করে।
‘বরফচাপা’ এই সিরিজের পঞ্চম ছবি। ছবির চরিত্রাভিনেতা অনুশ্রী মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘এখানে আমার চরিত্রটি বেশ অন্য রকমের। মানে পাঁচটা সাধারণ চরিত্রের থেকে আলাদা। নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের একটি মেয়ের গল্প। এখানে মেয়েটির অবিবাহিত ও বিবাহিত জীবন চিত্রিত হয়েছে, যেখানে কখনও মনে হবে না যে, কোথাও অতিনাটকীয়তা রয়েছে। পুরোটাই বাস্তবধর্মী। প্রায়শই আমাদের চারপাশে এরকম ঘটনা ঘটে থাকে।’
ষষ্ঠ ছবি ‘দীপাবলি’-র শুভাশিস মণ্ডল জানালেন তাঁর অভিজ্ঞতার কথা। তাঁর কথায়, ‘অভিনয়ের আগে আমি একাধিকবার স্ক্রিপ্ট পড়েছি। গল্পে মহিলাদের ভূমিকা অথবা তাঁদের যেভাবে উপস্থাপিত করা হয়েছে তাতে মনে হয়েছে চরিত্রগুলো যথেষ্ট দৃঢ়, কোথাও আত্মবিশ্বাসের অভাব রয়েছে, এমন নয়। বাস্তবের মাটিতে পা রাখা সব চরিত্র। আমরা রোজকার জীবনে যা দেখি, যা ঘটে চলে তাই এখানে উপস্থাপিত হচ্ছে। এখন কোথাও কোথাও একটু সচেতন পরিবারে আমরা দেখি ছেলেদের মতোই মেয়েদের যত্ন ও গুরুত্ব দেওয়ার অভ্যাস তৈরি হচ্ছে। এখানেও তেমনই গল্পে ফুটে ওঠে।’
দশকথা-র সপ্তম ছবির নাম ‘৮ই মার্চ’। এ ছবির অভিনেতা সুদেষ্ণা বসাক বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত। তিনি বললেন, ‘এখানে চারজন মহিলার গল্প বেশ উপভোগ্য। স্ক্রিপ্ট নিয়ে আলোচনায় বুঝেছিলাম এই মহিলারা কেউ আপাতভাবে মুষড়ে পড়া গোত্রের নয়। বরং প্রত্যেকেই প্রাণবন্ত। অনেক ফিল্ম বা শর্ট ফিল্মে মহিলাদের তেমন কোনও ইতিবাচক ভূমিকায় দেখা যায় না। এখানে কেউ শুধু বঞ্চিত বা নিপীড়িত নয়। দৃশ্যায়নে ফুটে ওঠে মহিলাদের প্রতি সম্মান, অগাধ ভালোবাসা। স্ক্রিপ্টে কোথাও খুঁজে পাইনি যে, মহিলাদের করুণা করা হচ্ছে। এখানে মহিলাদের একদিকে আমরা দেখি শান্ত, নম্র এবং অপরদিকে দেখি তাঁদের দৃঢ়তা।’
ওই দিনের আলাপচারিতায় সঙ্গে ছিলেন দশকথা-র অষ্টম ছবি ‘আস্তরণ’ শর্ট ফিল্মের অভিনেতা স্বাতী বন্দ্যোপাধ্যায় দাস। তাঁর বক্তব্য, ‘নারী হিসেবে হেনস্থা বা নির্যাতনের সঙ্গে আমরা যেন কোনওভাবেই আপস না করি। পুরুষ নারী যেই হোন, অন্যায় দেখে যেন কখনও দর্শক হয়ে চুপ করে না থাকি। আমার সামনে একটি মেয়ে হেনস্থার শিকার হচ্ছে অথচ আমি নীরব, এমনটা ঠিক নয়। ঘটনাটির সঙ্গে আমি সরাসরি যুক্ত না থাকলেও প্রতিবাদ করতে কোনও অসুবিধা নেই। এই বোধটা থাকতে হবে। এখানেই আমার গল্পটি অসম্ভব ভালো লেগেছে। যার জন্য আমি চরিত্রটাকেও ঠিকভাবে ফুটিয়ে তুলতে পেরেছি।’
এই সিরিজের নবম ছবি ‘মেটামরফোসিস’। স্বল্প দৈর্ঘ্যের এই ছবিতে গল্প রয়েছে তিন বান্ধবীর। ‘জীবন যেমন নিজের ক্ষেত্র অনুযায়ী পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে এবং মেনে নিয়ে চলে, তেমনই চলছিল তাদের। হঠাৎ একদিন কলেজ রিইউনিয়নে তিনজনের দেখা। গল্প-কথায় তাদের বন্ধ মনের আগল খুলে যায়। তিন বান্ধবীর অবদমিত ইচ্ছেগুলো মুক্তির আকাঙ্ক্ষায় ডানা মেলে দেয় রঙিন প্রজাপতিতে। হোক তা ক্ষণিকের, সেই মুহূর্তটাই তো সত্যি!’ বলছিলেন ছবির অভিনেতা নন্দিতা চট্টোপাধ্যায়। তাঁর প্রশ্ন, ‘বয়স হওয়া মানেই কি বুড়ো হয়ে যাওয়া? মনের কি বয়স হয়? ইচ্ছেপূরণের কি কোনও বিশেষ সময় থাকে?’ একটা বিশেষ বয়সে পৌঁছে গেলেই তবে কেন মেয়েদের আনন্দ-ফূর্তিতে বাধা পড়ে? প্রশ্নগুলো তুলেছে মেটামরফোসিস।
শেষ ছবি ‘ছোপ’। এই শর্ট ফিল্ম-এর অভিনেতা তন্নিষ্ঠা মুখোপাধ্যায়ের মতে, ‘এই ছবির প্রত্যেকটি চরিত্রকেই মনে হবে রক্তমাংসের মানুষ। মনে হবে এদের সঙ্গে পথ চলতে আমার দেখা বা কথা হয়। কোনও চরিত্রের উপর ‘ভুল’ বা ‘ঠিক’ লেবেল বসানো হয়নি। বরং প্রত্যেকের মনে ধূসর রংটি রয়েছে। তবে সেটা চরিত্রগুলোকে নেগেটিভ করে তোলেনি। এরা কেউই লোভী বা কুচক্রী নয়। মানবচরিত্রের যে কোনও দিককে স্বাভাবিকভাবে তুলে ধরা হয়েছে ছবিতে। শিক্ষিত আধুনিক বুদ্ধিমতী সেইসব নারীকে পুরুষতান্ত্রিক সমাজ অভিমান আর প্রেমের গোলাপি আতসকাচের নীচে রেখে দেখতে চাইলেও ওই নারীরা তাঁদের সীমা জানেন।’ আলোচনা থেকে স্পষ্ট, শর্ট ফিল্মগুলোয় মহিলাদের উপস্থাপনা পুরোপুরি বাস্তবমুখী। এই দৃঢ়চেতা মহিলাদের দেখে অনেকেই একটু ভালোভাবে বেঁচে থাকার রসদ পাবেন। ইতিবাচক বার্তা দেওয়ার ক্ষেত্রে মহিলাদের ভূমিকা যে কোনও অংশে কম নয়, বোঝা যাবে তা-ও। এই নারী চরিত্রেরা লাস্যময়ী হয়ে বক্তৃতা দিয়ে নারীমুক্তির কথা বলে না। নারীর বঞ্চনা, শরীরে ও মননের গভীর শূন্যতা, তীব্র দুঃখবোধের বাস্তবিক প্রকাশ দর্শকমন ছোঁবে সহজেই, এটাই আশা নির্মাতাদের। আগামী ১৪ আগস্ট সত্যজিৎ রায় ফিল্ম ইনস্টিটিউটে প্রদর্শিত হবে ‘দশকথা’।