এই একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়ে আপাতদৃষ্টিতে নারীর সঙ্গে পুরুষের পার্থক্যের সীমারেখা প্রায় ঘুচেই গিয়েছে বলা যায়। এখন পুরুষদের সঙ্গে নারীরাও সমানতালে সবকিছুই করছে। সে কঠিন বিজ্ঞান গবেষণা থেকে শুরু করে টোটো চালানো পর্যন্ত প্রায় সবকিছুই। একসময় যে নাইট শিফটে কাজ শুধুমাত্র পুরুষদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল এখন সেখানেও মেয়েদের মৌরুসিপাট্টা। সে খবরের কাগজের অফিস থেকে শুরু করে কল সেন্টার এবং আইটি সেক্টরেও। সবকিছুতেই যখন পার্থক্য ঘুচে গিয়েছে তখন প্রফেশনাল হেলথ্‌ হ্যাজার্ডসের ক্ষেত্রেও যে বিভেদরেখা বিলীয়মান হবে তা তো বলাই বাহুল্য।
একসময়ে রাতজেগে কাজ করার ফলে পুরুষেদর যেসব শারীরিক সমস্যা দেখা দিত এখন মহিলাদের ক্ষেত্রেও তা প্রযোজ্য। আমাদের চালু ধারণা মহিলাদের হার্ট সংক্রান্ত সমস্যা পুরুষদের থেকে কমই হয়। অন্তত একটা বয়স পর্যন্ত। কিন্তু সাম্প্রতিক একট সমীক্ষায় নাকি দেখা গিয়েছে যে যেসব মহিলা নাইট শিফটে প্রায়শই কাজ করেন তাদের হার্টের সমস্যা দেখা দেওয়ার সম্ভবনা অন্যদের তুলনায় প্রায় ১৫-২০ শতাংশ বেশি।
কী কী সমস্যা হতে পারে
 পরিপাক সংক্রান্ত সমস্যা
 হজমের গোলমাল
 হৃদযন্ত্রের গোলযোগ
 হরমোনের সমস্যা
 রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া
আসলে নিয়মিত বা অনিয়মিত নাইট শিফট করলে সব মানুষেরই জৈবিক ঘড়িটি ভারসাম্য হারায়। ঘুম ঠিকঠাক নিয়ম মেনে না হওয়ার ফলে জটিলতা আরও বাড়ে। মহিলাদের হৃদযন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
নিয়ন্ত্রিত জীবন যাপন করুন
নাইট শিফট করতে না হয় এমন চাকরি করাটাই সবথেকে সহজ সমাধান। কিন্তু এই বাজারে এত বাছাবাছি করার সুযোগ আর ক’জনের থাকে! তাই অন্যভাবে সমস্যায় রাশ টানা যায় কিনা সেটা দেখা যাক।
 দিনের বেলা তিনবার খাওয়াদাওয়া করুন এবং নিয়ম মেনে। এতে পরিপাকতন্ত্রের ক্রিয়া ভালো থাকবে।
 রাত জেগে কাজ করলেও ব্যায়াম করতে যেন ভুল না হয়। এতে কোলেস্টোরেল নিয়ন্ত্রণে থাকবে এবং হৃদযন্ত্রের বারোটা বাজার ঝুঁকি কমাবে।
 কাজ করার ফাঁকে প্রতি দু’ ঘণ্টা অন্তর ১০-১৫ মিনিটের একটা ব্রেক নিন এবং কার্ডিও এক্সারসাইজ করুন। যদি তা করার সুযোগ না থাকে তবে সিঁড়ি দিয়ে পাঁচবার ওঠানামা করুন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন এই নিয়মগুলি মেনে চললে হৃদযন্ত্রের গোলযোগের ঝুঁকি অনেক কমবে।
স্বস্তিনাথ শাস্ত্রী