সাংগঠনিক কর্মে বড় সাফল্য পেতে পারেন। উপস্থিত বুদ্ধি আর সাহসের জোরে কার্যোদ্ধার। বিদ্যায় সাফল্য। ... বিশদ
এই প্রাণরূপী ঈশ্বরকে কেমন করে পাওয়া যায়? ইনি সূক্ষ্মাদপিসূক্ষ্ম, ইনি মহাস্থির। এমন স্থির যা পৃথিবীর কোন কিছুর দ্বারা তুলনা হয় না। স্থিরপ্রাণই চঞ্চলপ্রাণের উৎসস্থল। স্থিরপ্রাণ অব্যক্ত এবং চঞ্চলপ্রাণ প্রকাশমান। প্রাণের চঞ্চল অবস্থাই যেহেতু প্রকাশমান এবং জীবের বর্তমান অস্তিত্ব, অতএব যদি কোন প্রকারে স্থির হতে পারে তবেই তাঁকে পাওয়া যাবে। কারণ চঞ্চলতাই জীব এবং স্থিরত্বই শিব। এছাড়া আর কোন পথ নেই। আবার তাঁকে পাওয়া যাবে বললেও ঠিক হয় না। যেমন লবণকে জলে মেশালে আর লবণ থাকে না, তখন উহা জলে পরিণত হয়। ঠিক তেমনি জীব সাধনা করে যখন মহাস্থির হয় অর্থাৎ ভগবানকে পায়, তখন সে আর জীব থাকে না, তখন সে নিজেই শিব হয়। অর্থাৎ ভগবানকে পাওয়া যায় না, নিজেকে ভগবান্ হতে হয়। নদীর ধর্ম তার উৎসস্থলরূপ সমুদ্রকে পাওয়া। যখন সে সমুদ্রকে পায় তখন সে নিজেই সমুদ্র হয়ে যায়। তখন নদীর নাম-রূপ সবকিছু হারিয়ে যায় অর্থাৎ আর নদীত্ব থাকে না। তেমনি জীবের ধর্মও তার উৎস্থলরূপ মহাস্থির প্রাণকে পাওয়া। যখন সে তাঁকে পায় তখন তার সমস্ত চঞ্চলতার অবসান হয়ে, নাম-রূপ সবকিছু হারিয়ে মহাস্থিরে রূপান্তরিত হয়। কারণ স্থিরপ্রাণই বর্তমান চঞ্চলপ্রাণের উৎসস্থল; স্থিরপ্রাণই ব্রহ্ম। তিনি ঘটস্থ হলে অর্থাৎ দেহস্থ হলে আত্মা পদবাচ্য। সেই স্থির আত্মাই যখন শ্বাস-প্রশ্বাসরূপে জীবদেহে চঞ্চলতা প্রাপ্ত হন, তখন তিনি প্রাণ পদবাচ্য। সেই প্রাণই আবার ইন্দ্রিয় সংযোগে থাকলে জীবাত্মা পদবাচ্য। অতএব এই প্রাণই ঈশ্বর এবং এই চঞ্চল প্রাণের অতীতাবস্থারূপ স্থিরাবস্থা যাহা তাহাই পরমেশ্বর। অতএব প্রাণই আত্মা বা পরমাত্মা। তিনি সর্বব্যাপী, সুতরাং তিনি এই দেহের মধ্যেও আছেন।
বাচস্পতি অশোককুমার চট্টোপাধ্যায়ের ‘প্রাণময়ং জগৎ’ থেকে