যে কোনও ব্যবসায় শুভ ফল লাভ। বিশেষ কোনও ভুল বোঝাবুঝিতে পারিবারিক ক্ষেত্রে চাপ। অর্থপ্রাপ্তি হবে। ... বিশদ
প্রশ্ন হল, এই পাঁচ রাজ্যের ভোটে আসলে বিজেপি জিতল, নাকি কংগ্রেস হারল? গত দু’মাস ধরে এই পাঁচ রাজ্যের ভোটের গতি প্রকৃতি নজর করলে দেখা যাবে, জোটের বড় শরিক কংগ্রেসের মধ্যে একটা জমিদারি ভাব। একথা এখন স্পষ্ট যে, গো-বলয়ে বিজেপির সঙ্গে সরাসরি লড়াইয়ে কংগ্রেস প্রায় হেরে ভূত। কিন্তু এই সারসত্যটা ভোটের আগে বুঝে যদি জোট শরিকদের সঙ্গে আসন সমঝোতা করে বিজেপির মুখোমুখি হওয়া যেত, তাহলে হয়তো এমনভাবে মুখ পুড়ত না কংগ্রেসের। কিন্তু সমাজবাদী পার্টির মতো শরিকদের আবেদন অগ্রাহ্য করে কংগ্রেস আসলে নিজেই নিজের বিপদ ডেকে এনেছে। তাই রাহুল-প্রিয়াঙ্কা-মল্লিকার্জুন খাড়্গেরা এই পরাজয়ে নিজেদের ব্যর্থতা এড়িয়ে যেতে পারেন না। এখনও সময় আছে। কংগ্রেসকে এটা বুঝতে হবে, শক্তিশালী ও প্রভূত ক্ষমতাশালী বিজেপি’র বিরুদ্ধে জোটবদ্ধ হয়েই তাদের লড়াই করতে হবে। ছাড়তে হবে দাদাগিরির মানসিকতা ও ছুঁৎমার্গ। কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ ব্যর্থতাই এই পরাজয়ের কারণ, ইন্ডিয়া জোটের নয়। তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নীতি মেনে আসন সমঝোতা করে ‘একের বিরুদ্ধে এক’ ফর্মুলায় ইন্ডিয়া জোটকে লড়াই করা দরকার। সুতরাং, এই ভোটের ফলাফল থেকে শিক্ষা নিয়ে শীত ঘুম থেকে বেরিয়ে আসতে হবে কংগ্রেসকে। ইগো ছেড়ে এখন মমতার দেখানো পথেই হাঁটা উচিত কংগ্রেসের।
একথা ঠিক যে, ইন্ডিয়া জোটে সবচেয়ে বড় দল কংগ্রেস। একমাত্র তাদেরই সব রাজ্যে কম-বেশি সংগঠন আছে। কিন্তু এর পাশাপাশি এটাও ঠিক, বাংলায় পরপর তিনবার বিজেপিকে হারিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল প্রমাণ করেছে বিজেপি অপরাজেয় নয়। পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা ভোটে জোট গড়ে যদি কংগ্রেস লড়াই করত তাহলে হয়তো এই দিনটা দেখতে হতো না। ভোটের মধ্যে জোট বৈঠক ডাকলে তার একটা প্রভাব পড়ত ভোটারদের মনে। সে পথে না হাঁটায় এই ব্যর্থতার দায় বর্তাচ্ছে কংগ্রেসের উপর। এরজন্য ক্ষুব্ধ জোট শরিকদের কেউ কেউ। কংগ্রেসের ‘দাদাগিরি’ নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। একথা ঠিক, একে অপরের বিরুদ্ধে কাদা ছোড়াছুড়ি করে নিজেদের পায়ে কুডুল না মেরে আশা করা যায় ইন্ডিয়া জোট পরিস্থিতি পর্যালোচনা করবে। কারণ মহাজোটের যে শক্তি আছে তার নিরিখেই ২০২৪-এ তারা লড়াই করে উঠে আসারও ক্ষমতা ধরে। এর জন্য সবার আগে চাই জনগণের আস্থা অর্জন। ৩৪ বছরের সিপিএম শাসন থেকে বাংলাকে মুক্ত করার জন্য লড়াকু নেত্রী মমতার লড়াই ভোলবার নয়। সে পথেই হেঁটে সত্যিই ইন্ডিয়া জোট মোদিবাহিনীকে একটা সত্যিকারের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে পারবে কি না—সময়ই তা বলবে।