যে কোনও ব্যবসায় শুভ ফল লাভ। বিশেষ কোনও ভুল বোঝাবুঝিতে পারিবারিক ক্ষেত্রে চাপ। অর্থপ্রাপ্তি হবে। ... বিশদ
আসলে মোদির রাজত্বের দ্বিতীয় ইনিংসের শুরু থেকেই সরকারের রথের চাকা মাটিতে বসে যেতে শুরু করেছে। যত দিন যাচ্ছে মোদি সরকারের প্রতি মোহভঙ্গ হচ্ছে মানুষের। এর পুরো ফায়দা তুলতে জোট বেঁধেছে বিরোধীরা। তাই তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় ফিরতে দাঁত-নখ বের করেছে ‘পদ্মশিবির’। আর শুধু কেন্দ্রীয় এজেন্সি দিয়ে বিরোধীদের চমকানো নয়, মোদি সরকারের রোষের বলি হচ্ছে বিরোধী-শাসিত রাজ্যের অর্থনীতিও। নানা অছিলায় বিরোধী-শাসিত রাজ্যে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি আক্রমণ শানানো হয়েছে মমতার সরকারের বিরুদ্ধে। গত প্রায় দু’বছর ধরে ১০০ দিনের কাজ, গ্রামের গরিব মানুষের আবাস যোজনা-সহ মোট ১০৬টি প্রকল্পের টাকা আটকে রেখেছে কেন্দ্র। টাকার অঙ্কে সেটা ১ লক্ষ ১৫ হাজার কোটি। এর মধ্যে ১০০ দিনের কাজে ৭ হাজার কোটি টাকা ও আবাস যোজনায় ২,৮০০ কোটি টাকা কেন্দ্রের কাছে পাওনা হয়েছে বলে রাজ্যের দাবি। টাকা চেয়ে দিল্লিতে ধর্নায় বসেছে রাজ্যের শাসক দল। কিন্তু কাকস্য পরিবেদনা! সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে রাজ্যের প্রাপ্য টাকা বন্ধের কারণ জানতে চেয়ে চিঠি দিয়েছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। মোদি সরকারের বিরুদ্ধে অনৈতিক আর্থিক অবরোধের অভিযোগ তুলে বিরোধী জোট শরিকরা ক্রমশ সরব হচ্ছে।
অবশ্য টাকা বন্ধ করার সাফাই হিসেবে বিজেপির শীর্ষমহল বলছে, মমতার সরকার নাকি কেন্দ্রের টাকার হিসেব দিচ্ছে না। তাদের অভিযোগ, এজন্য মোদি সরকারের টাকা নয়ছয় হচ্ছে। এই বিতর্কে না-ঢুকেও যে সত্যিটা সামনে আসছে তা হল, যেসব শ্রমিক সত্যিকারের ১০০ দিনের প্রকল্পে কাজ করেছেন, যে গরিব পরিবার আবাস যোজনা প্রকল্পে পাকা বাড়ি পাওয়ার যোগ্য, তাঁদের কোন যুক্তিতে বঞ্চিত করে রেখেছে মোদি সরকার? বস্তুত শুধু বিরোধীরা নয়, এই প্রশ্ন এখন তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে বঙ্গ বিজেপির অন্দরেও। তৃণমূলকে জনসমক্ষে দায়ী করার চেষ্টা করলেও কেন গরিব মানুষের টাকা দেওয়া হচ্ছে না, সেই প্রশ্ন তুলছেন বিজেপির বঙ্গ নেতাদের একাংশ। কারণ বিষয়টি নিয়ে মানুষের তোলা প্রশ্নের সদুত্তর তাঁরা দিতে পারছেন না। শুধু তাই নয়, বাংলাকে বঞ্চনার প্রসঙ্গে ধর্মতলার সভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ কিছু না-বলায় রীতিমতো বিভ্রান্ত বিজেপির ওই নেতারা। লোকসভা ভোটের আগে তৃণমূলের বিরুদ্ধে তোলা ‘বেনিয়মের’ অভিযোগ ব্যুমেরাং হয়ে তা কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগে পর্যবসিত হতে পারে বলে তাঁদের অনেকেই মনে করছেন। যাই হোক, রাজ্যের ন্যায্য প্রাপ্য বন্ধ করতে আরও কোনও বেড়াল ঝোলা থেকে বেরবে কি না, সেটাই এখন দেখার।