যে কোনও ব্যবসায় শুভ ফল লাভ। বিশেষ কোনও ভুল বোঝাবুঝিতে পারিবারিক ক্ষেত্রে চাপ। অর্থপ্রাপ্তি হবে। ... বিশদ
অন্যদিকে, যেসব রাজ্যে বিরোধী দল বুক চিতিয়ে দাঁড়াবার হিম্মতসহ সরকার অটুট রেখেছে সেখানেই চলছে ‘আমরা-ওরা’র চূড়ান্ত খেলা। একদিকে চলছে সাংবিধানিক স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলির দলীয়করণ এবং সেগুলির অপব্যবহার, অন্যদিকে কেন্দ্রীয় তহবিল নিয়ে যথেচ্ছাচার। রাজ্যের অবিজেপি শাসক দলের নেতাদের পিছনে লেলিয়ে দেওয়া হচ্ছে সিবিআই, ইডি কিংবা আয়কর দপ্তরকে। অবিজেপি এমএলএ, মন্ত্রী, এমপি প্রভৃতিকে পাইকারি হারে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এরপর তদন্তের নামে চলছে চূড়ান্ত অপদার্থতা। স্বভাবতই বেনজির প্রহসনে পরিণত হচ্ছে সংশ্লিষ্ট মামলাগুলির বিচার প্রক্রিয়া। সংশয় এটাই ঘনীভূত হয় যে, সবটাই গেরুয়া প্ল্যানের অঙ্গ নয় তো? সত্যিই তো, কোর্টে নিষ্পত্তি হয়ে গেলে জলের মধ্য দুধ না দুধের মধ্যের জলের মিশ্রণ ঘটেছে পরিষ্কার হয়ে যাবে। তখন কেন্দ্রীয় শাসকের পক্ষে নির্দিষ্ট কয়েকটি বিরোধী দলের গায়ে কালি ছিটানোর খেলা থমকে যাবে না কি? অবিজেপি রাজ্য সরকারকে জব্দ করতে ওইসঙ্গে যোগ করা হচ্ছে কেন্দ্রীয় বরাদ্দ বণ্টনে দাদাগিরি। কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা নানা অছিলায় আটকে দেওয়া, এমনকী বন্ধও করে দেওয়া হচ্ছে। এই অন্যায় রাজনীতির সবচেয়ে বড় শিকারের নাম পশ্চিমবঙ্গ। মোদিবাবুদের চোখে বাংলার মানুষের সবচেয়ে বড় ‘অপরাধ’ তারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজ্যের বাসিন্দা। ১০০ দিনের কাজ (মনরেগা) এবং গরিবের জন্য বাড়ি তৈরির (আবাস যোজনা, আবাস প্লাস) টাকা প্রথমে আটকে দেওয়া হল। কারণ কী? প্রকল্প রূপায়ণে কেন্দ্রীয় নির্দেশ নাকি ঠিকঠাক মানা হচ্ছে না। দফায় দফায় এল দিল্লির টিম। তারা তাদের ইচ্ছেমতো বাংলার গ্রাম, গ্রামান্তরে ঘুরেও আপত্তি জানাবার মতো উল্লেখযোগ্য কিছু পেল না। দিল্লির চাহিদামতো নবান্নও দিয়েছে পরের পর রিপোর্ট এবং নতুন নতুন দাবিপত্র। রাজ্যের এমপিরা তো বটেই, স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীও কথা বলেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের সঙ্গে। চিঠি দেওয়া হয়েছে প্রধানমন্ত্রীকেও। বছর ঘুরে গিয়েছে, আর একটা লোকসভার ভোটও দোরগোড়ায়, তবু টাকা আসেনি।
বরং বঞ্চনার ফিকিরের তালিকাই হচ্ছে দীর্ঘ। যেমন নয়া ফরমান জারি হয়েছে সুস্বাস্থ্য কেন্দ্রের রং এবং নাম বদলের। রাজ্য কী সিদ্ধান্ত নেবে, সেটা তাদের ব্যাপার। কিন্তু অভিজ্ঞতা কী বলে—কেন্দ্রের নির্দেশ মেনেও কি প্রাপ্য অর্থ মিলবে? এই তুঘলকি ফরমান সিরিজের ভিতরে ডুবুরি নামিয়েও স্বচ্ছতার নীতির হদিশ মিলছে না। পদে পদে যে জিনিসটা পাওয়া যাচ্ছে তার নাম সঙ্কীর্ণ রাজনীতি। এই রাজনীতির রং গেরুয়া হলেও এর সঙ্গে পবিত্র ত্যাগধর্মের সামান্যতম ছোঁয়াও নেই। ‘এক দেশ এক নীতি’র নামে সংবিধান-নির্দিষ্ট বহুত্বের ধারণার মূলেই করা হচ্ছে কুঠারাঘাত। ধ্বংস হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রীয় ধারণা, রাজ্য এবং স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলির পৃথক স্পষ্ট অস্তিত্ব। দুর্নীতি নির্মূলকরণের নামে যে ডিকটেটরশিপ বা একনায়কতন্ত্রের আমদানি করা হয়েছে, প্রকারান্তরে সেটাই এক ভয়াবহ দুর্নীতি। কারণ বহুদলীয় গণতন্ত্রের ধারণা এবং ভারতের সংবিধান এই অনাচার কোনওভাবেই সমর্থন করে না।