অর্থকড়ি আয় বৃদ্ধির সঙ্গে সাংসারিক সুখ বাড়বে। জটিল কর্ম সম্পাদনে সাফল্য ও ওপরওয়ালার আস্থালাভ। ... বিশদ
এখন কাটোয়ায় ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ২০০ কার্তিকপুজো হয়। রাজা কার্তিক, জামাই কার্তিক, ন্যাংটা কার্তিক, সাহেব কার্তিক সহ নানা রকমের ঠাকুর থাকে। সেইসঙ্গে ধীরে ধীরে জায়গা করে নিয়েছে থিমের পুজো। তবে কার্তিক লড়াইয়ের প্রাচীন ঐতিহ্য এখনও বয়ে নিয়ে চলেছে থাকা।
কী এই থাকা? এটি বাঁশ দিয়ে তৈরি পিরামিডের আকৃতির একটি কাঠামো। সেই কাঠামোয় থাকে থাকে বসানো থাকে ২৫-৩০টি মাটির তৈরি মূর্তি। বড় থাকায় ৪২ পর্যন্ত মূর্তি থাকে। বিভিন্ন পৌরাণিক কাহিনীর চরিত্রের আদলে এসব মূর্তি তৈরি করা হয়। এরই নাম থাকা। যার মধ্যমণি হিসেবে থাকে দেবী কাত্যায়নী অথবা রাজা কার্তিকের মূর্তি।
কাটোয়ার গঙ্গাপাড়ের প্রাচীন চুনারিপাড়ার(এখন হরিসভা পাড়া) বারবণিতাদের হাত ধরেই কার্তিকপুজোর সূচনা হয়েছিল। আর সেই পুজোয় থাকা নিয়ে শোভাযাত্রার খরচ দিতেন ‘বাবু’রা। বেহারারা কাঁধে থাকা বইতেন। কার থাকা আগে যাবে, তা নিয়ে বাবুদের মধ্যে প্রতিযোগিতা চলত, যা দেখতে গ্রামাঞ্চল থেকে মানুষ ভিড় করতেন। এখন সেই বারবণিতারা না থাকলেও কার্তিক লড়াই থেকে গিয়েছে। তবে এখন আর কাঁধে নয়, বল বিয়ারিং লাগানো গাড়িতে থাকা নিয়ে যাওয়া হয়। চন্দননগরের আলোকসজ্জায় তা আরও সুন্দর হয়ে ওঠে।
যত দিন যাচ্ছে কাটোয়ায় কার্তিক লড়াইয়ের জৌলুস ক্রমশ বাড়ছে। বিভিন্ন পুজো কমিটির মধ্যে থিমের প্রতিযোগিতা বেড়ে যাওয়ায় কার্তিক লড়াইয়ে ‘থাকা’ এখন অনেকটা কোণঠাসা হয়ে পড়েছে। তবে এখনও কাটোয়ার কার্তিকপুজোর এই প্রাচীন ঐতিহ্য বজায় রাখতে বদ্ধপরিকর বেশ কিছু পুজো উদ্যোক্তা। খড়ের বাজার, বড়বাজার, ঝাউতলাগলি, চাউলপট্টি, কিশলয়, ঝঙ্কারের মতো পুজো উদ্যোক্তারা এখনও কার্তিকপুজোর থাকার ঐতিহ্য বয়ে নিয়ে চলেছেন। এবার ঝঙ্কার ক্লাবের থাকায় দেখা যাবে বিষ্ণুর দশাবতার। বাঁশের মাচায় থরে থরে সাজানো মূর্তির মাধ্যমে তা তুলে ধরা হবে।
কাটোয়া শহরের বিশিষ্ট গবেষক তুষার পণ্ডিত বলেন, থাক থাক করে পৌরাণিক কাহিনী অবলম্বনে মাটির মূর্তি সাজানো থাকে। আগে এগুলি কাঁধে করে শোভাযাত্রায় ঘোরানো হতো। তাই এর নাম থাকা।