বিদ্যার্থীরা শুভ ফল লাভ করবে। মাঝে মাঝে হঠকারী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করায় ক্ষতি হতে পারে। নতুন ... বিশদ
এদিন বিকেলে শহরের হিন্দু মিলন মাঠ থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের সুসজ্জিত পদযাত্রা বের হয়। প্রায় তিন কিলোমিটার পথ হেঁটে জামদা ধর্মশালার মাঠে এসে মিছিল শেষ হয়। শুভেন্দুবাবু মিছিলের একেবারে শেষে ছিলেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, দেশমাতৃকার প্রতি ভক্তি, শ্রদ্ধা, লক্ষ্যে অবিচল থেকে সংগ্রাম করিছিলেন ক্ষুদিরাম। তাঁকে মনে রাখা, স্মরণ করিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব এই প্রজন্মের সমস্ত দায়িত্বশীল মানুষের। আমরা একটি দায়িত্বশীল, দেশপ্রেমিক দল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৈনিক। তাই আজকের দিনটা আমরা আত্মোৎসর্গ দিবস হিসেবে পালন করছি। তিনি বলেন, ব্যক্তি কেউ নয়। লক্ষ্য ঠিক থাকলে সবাই সেই লক্ষ্যে পৌঁছায়। আমার লক্ষ্য সব সময়ে নির্দিষ্ট। আর নেত্রী আমায় বলেছেন, সবাইকে নিয়ে সেই লক্ষ্যে পৌঁছাতে হবে। আমি সেই দায়িত্ব পালন করে চলেছি।
এদিন কেশপুর ও কাঁথিতেও দু’টি অনুষ্ঠানে তিনি যোগ দেন। কেশপুরের মোহবনীতে ক্ষুদিরামের জন্মস্থানে সরকারি উদ্যোগে দিনটি পালন করা হয়। এখানে ক্ষুদিরামের মূর্তিতে মাল্যদান করে শ্রদ্ধা জানান শুভেন্দুবাবু। কাঁথি শহিদ ক্ষুদিরাম বসু স্মৃতিরক্ষা সমিতির উদ্যোগে শহরের কিশোরনগরে ক্ষুদিরামের পূর্ণাবয়ব মূর্তির পাদদেশে এই উপলক্ষে শ্রদ্ধাঞ্জলি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ক্ষুদিরামের মূর্তিতে মাল্যদান করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন শুভেন্দুবাবু। এছাড়া শহরের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে মাল্যদান করা হয়। বহু মানুষ মাল্যদান করে শ্রদ্ধা জানান।
শ্রদ্ধাঞ্জলি অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে শুভেন্দুবাবু বলেন, ক্ষুদিরামের দেশপ্রেম, আত্মত্যাগ, সংগ্রামী মনোভাব যুব সম্প্রদায়ের কাছে অনুপ্রেরণার বিষয়। তাঁর জীবন সংগ্রাম চর্চা আজ অত্যন্ত জরুরি। কাঁথিতে ক্ষুদিরামের স্মৃতি রক্ষার জন্য নানা উদ্যোগ গ্রহণের ক্ষেত্রে মন্ত্রী হিসেবে সবসময়ের জন্য পাশে থাকবেন বলে জানান শুভেন্দুবাবু। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সমিতির সম্পাদক বিশ্বজিৎ রায়, সভাপতি দেবকুমার রায়, কাঁথি প্রভাত কুমার কলেজের প্রাক্তন অধ্যাপক গৌরহরি গিরি সহ অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। এদিন ক্ষুদিরাম বসু স্মরণে সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতাও অনুষ্ঠিত হয়। প্রায় ৩০০জন কচিকাঁচা অঙ্কন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। এছাড়া প্রবন্ধ, আবৃত্তি প্রতিযোগিতাও অনুষ্ঠিত হয়। বিকেলে ক্ষুদিরামের আত্মবলিদান ও জীবন সংগ্রামের নানা দিক নিয়ে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। বিশিষ্ট ব্যক্তিরা আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন।
মোহবনীতে এদিন সকাল থেকেই নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তরা সিং, সহ সভাধিপতি অজিত মাইতি, জেলাশাসক রশ্মি কমল, পুলিস সুপার দীনেশ কুমার, রাজ্যসভার সদস্য মানস ভুঁইয়া সহ জেলা প্রশাসনের অন্যান্য অধিকারিক, বিধায়ক ও পঞ্চায়েতের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। শুভেন্দুবাবু তাঁর বক্তব্যে ক্ষুদিরামের জীবন সংগ্রাম ছাত্রছাত্রী, যুব সমাজের কাছে তুলে ধরার কথা বলেন। তিনি ক্ষুদিরামের জন্মস্থানে একটি অডিটোরিয়াম গড়ে তোলার জন্য সামাজিক দায়বদ্ধতা প্রকল্পে ২৫ লক্ষ টাকা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন। তার জন্য জেলাশাসকের মাধ্যেমে পরিকল্পনা পাঠাতে বলেন।
এই অনুষ্ঠানেকে ঘিরে সকাল থেকে শহিদের জন্মস্থানে মানুষের ঢল নামে। বিভিন্ন সংগঠন, রাজনৈতিক দল, ব্যক্তিগত উদ্যোগেও ক্ষুদিরামের মূর্তিতে মাল্যদান করে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
শুভেন্দুবাবু এদিন দখলের রাজনীতি বন্ধে শপথ নেওয়ার ডাক দেন। তিনি বলেন, যেখানে ক্ষুদিরাম জন্মগ্রহণ করেছেন, তার পাশেই বিদ্যাসাগরের জন্মস্থান। সেখানে দখলের রাজনীতি হবে কেন? মানুষ বাড়িছাড়া বলে শুনতে হবে কেন? কেন পুলিস দিয়ে এলাকার শান্তি রক্ষা করতে হবে? আজ আমাদের শপথ নিতে হবে, সবাই রাতে বাড়িতে থাকবেন। সব দল থাকবে। সবাই ভালো কাজ করবে। মানুষ যাকে গ্রহণ করার করবেন, যাকে বর্জন করার করবেন। প্রতিযোগিতা হোক উন্নয়ন নিয়ে।
মেদিনীপুর শহরের হবিবপুরে ক্ষুদিরামের বাসস্থানেও এদিন তাঁর মূর্তিতে মাল্যদান করে শ্রদ্ধা জানানো হয়। বিভিন্ন সংগঠন, রাজনৈতিক দল, সংস্থার পক্ষ থেকে দিনটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়।