বিদ্যার্থীরা শুভ ফল লাভ করবে। মাঝে মাঝে হঠকারী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করায় ক্ষতি হতে পারে। নতুন ... বিশদ
অন্যদিকে কেন্দ্রীয়, রাজ্যের শীর্ষ নেতৃত্ব, মন্ত্রী ও এমপিদের উপস্থিতিতে দু’দিনের চিন্তন বৈঠকের দ্বিতীয়দিনে পশ্চিম বর্ধমানের জেলা সভাপতি বদলের দাবিতে বিক্ষোভ দেখান আদি বিজেপি কর্মীরা। এনিয়ে জেলা সভাপতির অনুগামীদের সঙ্গে তাঁদের খণ্ডযুদ্ধও বেধে যায়। দু’দিনের এই চিন্তন শিবিরে ২০২১সালের বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে তৃণমূলের বিরুদ্ধে রণকৌশল ঠিক করতে গিয়ে নিজেদের প্রকাশ্য কোন্দল গেরুয়া শিবিরের যথেষ্ট অস্বস্তি বাড়িয়েছে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
দুর্গাপুরের সিটি সেন্টারের একটি বেসরকারি হোটেলে আয়োজিত হয়েছিল দু’দিনের চিন্তন বৈঠক। বৈঠক শেষে রাজ্য ও কেন্দ্রের শীর্ষ নেতৃত্ব, কেন্দ্রীয়মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়র উপস্থিতিতে জনসভা হওয়ার কথা ছিল। পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি মেনে বৃষ্টিবিঘ্নিত পরিবেশে সভা শুরু করে বিজেপি নেতৃত্ব। যদিও বেশিরভাগ শীর্ষ নেতৃত্ব সভাস্থলে অনুপস্থিত ছিলেন। কিন্তু, বৃষ্টি উপেক্ষা করেই বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা সভাস্থলে হাজির হন। এরপর মলয় উপাধ্যায়কে বিজেপিতে যোগদান করানোর পরই সভার ছন্দপতন হয়। কর্মী-সমর্থকরা চরম ক্ষুব্ধ হয়ে চেয়ার ছোঁড়াছুঁড়ি এবং ব্যরিকেড ভাঙার চেষ্টা করেন।
বিজেপি কর্মী বিকাশ মণ্ডল, সুদীপ দাস, বাপ্পা মাঝিদের অভিযোগ, মলয়বাবু তৃণমূলের হয়ে বুথ দখল করেছেন। আমাদের কর্মীদের মেরেছেন। তাতে কারও চোখ নষ্ট হয়েছে, কারও পা ভেঙেছে। আমরা কোনওমতেই মানব না। এই যোগদান মানতে না পেরেই বাবুল সুপ্রিয় এখানে আসেননি।
অন্যদিকে, এই যোগদান দিয়ে তৃণমূল বিধায়ক বিধান উপাধ্যায় বলেন, উনি বরাবরই সুবিধাবাদী। ওঁকে এলাকার বিজেপি কর্মীরাও চেনেন, তাই বিক্ষোভ দেখিয়েছেন।
যদিও মলয়বাবু বলেন, আমি বিজেপিতে যোগদান করায় ওঁদের পায়ের তলায় মাটি সরে গিয়েছে। তাই বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। সাধারণ মানুষ আমাকেই চায়।
এনিয়ে বিজেপির জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুই বলেন, নিয়ম মেনেই যোগদান করানো হয়েছে। যদি কোনও ক্ষোভ থাকে তা মিটিয়ে নেওয়া হবে। আর বাবুল সুপ্রিয়র হুগলিতে কর্মসূচি রয়েছে বলেই তিনি হাজির হতে পারেননি। যদিও একদিন আগেই যোগদান নিয়ে সোশ্যাল সাইটে নিজের আপত্তি প্রকাশ করলেও এদিনের ঘটনা নিয়ে বাবুল সুপ্রিয়র কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
তবে, শুধু জনসভা নয়, বিজেপির চিন্তন বৈঠকেও বিতর্ক পিছু ছাড়ল না গেরুয়া শিবিরের। রবিবার সকাল থেকেই বিজেপির নেতা, মন্ত্রী, এমপিরা বৈঠকে যোগ দিতে হাজির হন বেসরকারি হোটেলে। সকাল থেকে ম্যারাথন বৈঠকও শুরু হয়। সংগঠিত দল বিজেপির সেই মহাগুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের বাইরেও শুরু হয়ে যায় বিশৃঙ্খলা। আদি বিজেপি কর্মীরা দলীয় পতাকা হাতে জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন। এমনকী, অবিলম্বে জেলা সভাপতির অপসারণ দাবি করেন। দু’বার বিজেপির টিকিটে পুরসভা ভোটে লড়াই করা পিন্টু সেন বলেন, জেলা সভাপতি তাঁদের কোনও বৈঠকের খবর দিচ্ছেন না। স্থানীয় কিছু হোটেল ব্যবসায়ী, কম্পিউটার দোকানের মালিকদের নিয়ে দল পরিচালনা করছেন। এমনকী, আর্থিক বেনিয়মের অভিযোগ তোলেন লক্ষ্মণ ঘোড়ুইয়ের বিরুদ্ধে। তাঁদের বাধা দিতে গেলে হোটেলের সামনেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। তাঁদের মধ্যে ধস্তাধস্তি ও হাতাহাতি শুরু হয়ে যায়। এরপর দফায় দফায় হোটেলের সামনে একই ঘটনা ঘটতে থাকে। নিজেদের মধ্যে অকথ্য গালিগালাজও চলে।
এব্যাপারে বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, বিজেপি কর্মীরা এভাবে কখনও পার্টির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখায় না। এরকম করলে তাঁরা পার্টিতে থাকতে পারবেন না।
অন্যদিকে, শিল্পাঞ্চলে বৈঠক করতে এসে কেন্দ্রের বিলগ্নিকরণ নীতিকে সমর্থন করে দিলীপবাবু বলেন, যারা আজ আন্দোলন করছে, তারাই এই ক্ষতির জন্য দায়ী। তাদের আমলে কেন সংস্থাগুলি ক্ষতির মুখে পড়ল। সাধারণ মানুষের ট্যাক্সে কিছু মানুষকে পুষতে হবে এধরনের নীতিতে বিজেপি বিশ্বাস করে না। সরকার ব্যবসা করতে আসেনি। যেটা চলবে সেটা চালাবে। যেটা চলবে না সেটা না চালিয়ে বিকল্প ব্যবস্থা করবে।