প্রায় সম্পূর্ণ কাজে শেষ মুহূর্তে বাধা পড়ায় বিচলিত হয়ে পড়তে পারেন। সন্তানের বিদ্যা শিক্ষার বিষয়ে ... বিশদ
আনমোলের বাবা অমলবাবু মেচপাড়া চা বাগানের স্টাফ। মা গীতাদেবী গৃহবধূ। তিনি অবশ্য মাঝেমধ্যে চা পাতা তোলার কাজ করেন। বাগানের ফ্যাক্টরির কাছে বাসা লাইনে চা শ্রমিক আবাসেই মা বাবা ও এক দাদার সঙ্গে বড় হয়ে উঠেছেন আনমোল।
অভাবের সংসারে স্বাভাবিকভাবেই আনমোলের ডাক্তার হওয়ার জার্নিটা মোটেও মসৃণ ছিল না। ২০২২ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষার সময় ঠাকুমা বিষ্ণুমায়া লামা উপযুক্ত চিকিৎসার অভাবে মারা যান। তখনই জেদ চেপে যায় আনমোলের ডাক্তার হওয়ার। চিকিৎসার অভাবে ঠাকুমার মৃত্যুর ঘটনা বদলে দেয় আনমোলকে।
হ্যামিল্টগঞ্জের একটি ইংরেজিমাধ্যম স্কুলের মেধাবী পড়ুয়া আনমোল মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাশ করে একাদশে ভর্তি হন। দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে নিটের কোচিং নেওয়া শুরু করেন। বাড়িতে বিভিন্ন বিষয়ের বই এনে বইয়ের মধ্যে ডুবে যান। তারপর নিট পরীক্ষায় ভালো ফলে করে মালদহ সরকারি মেডিক্যাল কলেজে ডাক্তারি পড়ার সুযোগ পেয়েছেন আনমোল।
চা বাগানের ছেলে আনমোলের এই সাফল্যে মেচপাড়া বাগানের শ্রমিক মহল্লায় এখন খুশির হাওয়া। প্রত্যেকেরই বক্তব্য, মেধা ও ইচ্ছাশক্তি থাকলে চা বাগানে বসবাস করেও যে ডাক্তার হওয়া যায় তা দেখিয়ে দিলেন আনমোল।
বাবা অমলবাবু বলেন, আনমোল এমনিতেই শান্ত-লাজুক স্বভাবের। ছোট থেকেই পড়াশোনাতে ও ভালো। কিন্ত অসম্ভব জেদি। যেটা ধরবে সেটার শেষ দেখে ছাড়বে। ছেলে ওর লক্ষ্যে পৌঁছবে, আমরা আশাবাদী।
আনমোল বলেন, উপযুক্ত চিকিৎসার অভাবে ঠাকুমা মারা যান। চা বাগান বনবস্তি এলাকায় তো চিকিৎসকও নেই। তাই জেদ চেপেছিল চিকিৎসক হওয়ার। ইচ্ছে আছে ডাক্তার হওয়ার পর চা বাগান এলাকায় চিকিৎসা শুরু করার।