সংবাদদাতা, গঙ্গারামপুর: খনদাদু, খনদিদার মতো চরিত্রকে জেলার নির্বাচনী ম্যাসকট করায় আপত্তি তুলে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানালেন জেলার খন গবেষকরা। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা নির্বাচন দপ্তর নতুন ভোটারদের উজ্জীবিত করতে ও গ্রাম থেকে শহরের ভোটারদের ভোটদানের বিষয়ে সচেতন করতে জেলার খনপালা গানের চরিত্র খনদাদু, খনদিদাকে ম্যাসকট করে প্রচার শুরু করে। এনিয়ে জেলার লোকশিল্পীদের একাংশ সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হয়ে অভিযোগ তোলেন, নির্বাচন দপ্তর খন চরিত্র বিকৃতভাবে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরছে। এর পরই জেলা নির্বাচন দপ্তরের তরফে বিভিন্ন জায়গায় খনদাদু, খনদিদাকে সামনে রেখে যে সেলফি জোন তৈরি করে নতুন ভোটারদের উৎসাহিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, সেখানে আর দেখা যাচ্ছে না খনদাদু, খনদিদা লেখা। বুড়ো ও বুড়ির ম্যাসকট থাকলেও আচমকা খনদাদু ও খনদিদা লেখা উধাও। কী কারণে সেই লেখা তুলে নেওয়া হল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে সাধারণের মনে। তাহলে কি নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানাতেই জেলা নির্বাচনের দপ্তর সরিয়ে দিল ম্যাসকটের পরিচয়? এ বিষয়ে জেলা নির্বাচন দপ্তরের তরফে বিস্তারিত কিছু জানানো না হলেও তাদের তরফে বলা হয়েছে, ভোট সংক্রান্ত বিষয়ে জেলায় সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে বুড়ো-বুড়িকে সামনে রেখেই লোকগানের মাধ্যমে প্রচার চলবে। জেলাশাসক নিখিল নির্মল বলেন, আমরা ম্যাসকট করেছি নির্বাচনে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে। খনদাদু ও খনদিদাকে সামনে রেখে আমাদের সেই সচেতনতা চলছে। এক গবেষক অভিযোগ করেছেন খনদাদু, খনদিদার চরিত্র নিয়ে তাঁর আপত্তি রয়েছে। আমরা লিখিতভাবে ওই গবেষককে সম্পূর্ণ তথ্য জানিয়েছি। সাধারণ মানুষকে বুথমুখি করার লক্ষ্যে গ্রাম থেকে শহর পথনাটিকার মাধ্যমে জেলার লোকশিল্পীদের দিয়ে আমরা জেলাজুড়ে প্রচার চালাব।
জেলার খন গবেষক সুদেব সরকার বলেন, মার্চ মাসের ৩ তারিখ জেলা নির্বাচন দপ্তর খনপালা গানকে সামনে রেখে ম্যাসকট করে সাধারণ মানুষকে সচেতন করে বুথমুখি করার লক্ষ্যে। সেখানে খনপালার চরিত্র পরিচয় দিয়ে বুড়ো ও বুড়িকে সামনে রেখে নামকরণ হয় খনাদাদু, খনাদিদা। আমি দীর্ঘদিন ধরে দিনাজপুরের খনপালা নিয়ে গবেষণা করছি। সেখানে মহিলা ও পুরুষ চরিত্রে রয়েছেন বাউদিয়া ও সরি। ম্যাসকট হিসেবে খনপালার চরিত্রে মুখোশ পরে এখন যে বুড়ো ও বুড়ি রয়েছে, সেটি হল দিনাজপুরের গমিরা নাচের এক বিশেষ চরিত্র। খনের সঙ্গে কোনওভাবে সম্পর্কিত নয়। ৫০০ বছরের রাজবংশী সমাজের খনপালার চরিত্রকে বিকৃত করে উপস্থাপনা করা হয়েছে যা আগামী প্রজন্মের কাছে ভুলবার্তা যাবে। সে কারণে আমি একাধিক খনপালা গবেষক শিক্ষক ও শিল্পীর সঙ্গে এবিষয়ে মতামত নিয়ে অভিযোগ জানিয়েছি। জেলা প্রশাসন এখনও আমাকে কোনও সুনির্দিষ্ট তথ্য দিতে পারেনি কোথা থেকে তারা এই চরিত্র পেয়েছে। আমরা চাই, নির্বাচন কমিশন সঠিকভাবে প্রচার করুক।