নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি, ২৬ মার্চ: লোকসভা ভোটে টিকিট না পেয়ে বিজেপির চার প্রবীণ নেতা কতটা অপমানিত, অসম্মানিত এবং অসন্তুষ্ট হয়েছেন তার প্রমাণ দিলেন একাই মুরলীমনোহর যোশী। বিজেপির এই প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ২০১৪ সালে কানপুর থেকে জয়ী হয়েছিলেন। তাঁকে এবার প্রার্থী করা হয়নি। তিনি কানপুরের ভোটারদের উদ্দেশ্যে কয়েক লাইনের একটি চিঠি লিখে বিজেপির বর্তমান নেতৃত্বকে চরম অস্বস্তিতে ফেলেছেন। ওই চিঠিতে তিনি লিখেছেন, আমাকে বিজেপির সাধারণ সম্পাদক রামলাল বলেছেন, ভোটে প্রার্থী না হতে। তাই আমার এবার কানপুর থেকে প্রার্থী হওয়া হল না। বিজেপি সূত্রের খবর, লালকৃষ্ণ আদবানি, মুরলীমনোহর যোশী, শান্তাকুমার এবং কলরাজ মিশ্র, এই চার প্রবীণ নেতাকে এবার আগাম জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল তাঁদের প্রার্থী করা হবে না। শোনা যাচ্ছে, তাঁদের সঙ্গে দেখা করে নয়, টেলিফোনে প্রাথমিকভাবে বলা হয়েছিল প্রার্থী না করার কথা। এবং একই সঙ্গে এই অনরোধও করা হয় যাতে তাঁরা নিজেরাই সেই ঘোষণা করে দেন যে তাঁরাও প্রার্থী হতে চাইছেন না। এই শর্তে আদবানি রাজি হননি। কিন্তু মুরলীমনোহর যোশী কৌশলী পন্থা নিয়ে আদতে দলকেই চরম অস্বস্তিতে ফেললেন। দলের কথামতোই তিনি নিজেই ঘোষণা করলেন যে প্রার্থী হবেন না। কিন্তু নিজের ইচ্ছা অনিচ্ছার কথা না বলে দলের বর্তমান নেতৃত্বের ইচ্ছানুসারেই যে তাঁকে সরে যেতে হচ্ছে এটাই তিনি বার্তা দিয়ে দিয়েছেন সরাসরি চিঠি লিখে। লালকৃষ্ণ আদবানিও অসন্তুষ্ট এভাবে তাঁকে সম্পূর্ণ নীরবে সংসদীয় রাজনীতি থেকে সরে যেতে হল বলে।
নরেন্দ্র মোদি ও অমিত শাহ বিজেপির নতুন দুই সেনাপতি ক্ষমতাশালী হওয়ার পরই স্থির হয়ে যায় ৭৫ বছরের উর্ধে কাউকেই আর প্রার্থী কিংবা মন্ত্রী করা হবে না। সেই হিসাবেই এই চারজন বাদ পড়েছেন তালিকা থেকে। কিন্তু এভাবে অত্যন্ত উদাসীনভাবে তাঁদের সরিয়ে দেওয়ায় দলের অন্দরে অন্য কিছু নেতানেত্রীও ক্ষুব্ধ। যদিও অন্য আর একটি অংশের বক্তব্য এখন যুব সম্প্রদায়কে বেশি করে জায়গা করে দিতে হবে। যে দলে যত বেশি যুব নেতানেত্রী থাকবে সেই দলের জনপ্রিয়তাও যুব সমাজের মধ্যে বেশি ছড়াবে। আদবানির কেন্দ্র গান্ধীনগরে এবার প্রার্থী হয়েছেন অমিত শাহ। বস্তুত অমিত শাহ যেভাবে রাজ্যসভা সদস্য হওয়া সত্ত্বেও লোকসভাতেও প্রার্থী হয়েছেন, তা থেকে স্পষ্ট মোদি পরবর্তী বিজেপির ভবিষ্যতের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থীও তিনিই হবেন। অর্থাৎ বিজেপি আগামীদিনের সেনাপতির নামও পরোক্ষে চূড়ান্ত করে রাখল এখন থেকেই।