শরীর-স্বাস্থ্যের আকস্মিক অবনতি। বিদেশ ভ্রমণের সুযোগ আসতে পারে। সম্পত্তি নিয়ে পারিবারিক বিবাদ, ব্যবসায় নতুন সুযোগ ... বিশদ
এদিন কর্মিসভায় প্রার্থীর সঙ্গে বাঁকুড়া জেলা তৃণমূলের সভাপতি অরূপ খাঁ, কার্যকরী সভাপতি জয়ন্ত মিত্র, জেলা তৃণমূলের যুব সভাপতি রাজীব ঘোষাল, রাইপুরের ব্লক তৃণমূলের যুব সভাপতি রাজকুমার সিংহ, তৃণমূল নেতা জগবন্ধু মাহাত, সারেঙ্গার তৃণমূলের ব্লক সভাপতি ধীরেন্দ্রনাথ ঘোষ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এদিন কর্মিসভায় সুব্রতবাবু বলেন, জঙ্গলমহলে সেই বারুদের গন্ধ আর নেই। এখন একটা শান্তির পরিবেশ তৈরি হয়েছে। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, জঙ্গলমহল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অত্যন্ত প্রিয় জায়গা। আমরা যে সব জায়গায় আশীর্বাদধন্য হব বলে দাবি করি জঙ্গলমহল তার মধ্যে একটি।
উল্লেখ্য, বাঁকুড়ার তৃণমূল প্রার্থী সুব্রত মুখোপাধ্যায় মঙ্গলবার প্রথম জঙ্গলমহলে প্রচার শুরু করেন। ওইদিন মাওবাদীদের আঁতুড়ঘর বলে পরিচিত রানিবাঁধে তিনি কর্মিসভা করেন। তার আগে একটি মন্দিরে পুজো দিয়ে জনসংযোগ সারেন। কড়া রোদ উপেক্ষা করে সুব্রতবাবু জঙ্গলমহলে প্রচারের প্রথমদিনেই ঝাঁঝ বাড়ান। সিপিএমকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করার পাশাপাশি বিজেপিকেও একহাত নেন। বিরোধীরা ময়দানে নামার আগেই পোড়খাওয়া নেতা সুব্রতবাবু জঙ্গলমহলে প্রচারে বাজিমাত করতে সচেষ্ট হন। হাঁসফাঁস করা গরমের মধ্যেই ওই প্রবীণ তৃণমূল নেতা হুডখোলা জিপে ‘রোড-শো’ করেন। তৃণমূল নেতাদের নিয়ে খাতড়ার একটি শবর গ্রামে ছুটে যান। সেখানকার বাসিন্দাদের সুখ-দুঃখ নিয়ে কথা বলেন। জঙ্গলমহলের গরিব মানুষের অভাব-অভিযোগ মন দিয়ে শোনেন। ভোটে জিতলে যতটা সম্ভব সমস্যা সমাধান করার আশ্বাসও দেন।
প্রসঙ্গত, একসময় জঙ্গলমহল সিপিএমের শক্ত ঘাঁটি ছিল। বর্তমানে সিপিএমের ভোট ব্যাঙ্কে বিজেপি থাবা বসাচ্ছে। ফলে বাঁকুড়ার জঙ্গমহলে রাস্তা ও জলপ্রকল্প রূপায়ণের ক্ষেত্রে সিপিএমকে ‘উন্নয়ন বিরোধী’ এবং বিজেপিকে ‘উন্নয়নের বাধাদানকারী’ বলে সুব্রতবাবু অবিহিত করেন। সুব্রতবাবু বলেন, সিপিএম সরকার জঙ্গলমহলের সমস্ত রাস্তা তৈরি হয়ে গিয়েছে বলে কেন্দ্রের কাছে রিপোর্ট পাঠিয়েছিল। অথচ বাস্তবে বাম আমলে রাস্তাঘাটের কী হাল ছিল তা সকলেই জানেন।
তিনি বলেন, বাঁকুড়ায় পানীয় জল প্রকল্প রূপায়ণের সময় কেন্দ্রের বিজেপি সরকার ডিভিসি থেকে জল উত্তোলনের অনুমতি আটকে দিয়েছিল। সিপিএম এবং বিজেপি প্রার্থীরা বাড়ি বাড়ি গেলে ভোটাররা তাঁদের কাছে এব্যাপারে জবাব চাইবেন। আমি উন্নয়ন করার পর জঙ্গলমহলে ভোট চাইতে এসেছি। আর বাকি প্রার্থীরা উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোটে বাজিমাত করার চেষ্টা করবে। সুব্রতবাবুর ওই অভিযোগ অবশ্য সিপিএম এবং বিজেপি ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে। ভোটের মুখে মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্যই তিনি ওই ধরনের মন্তব্য করছেন বলে বাঁকুড়ার সিপিএম প্রার্থী অমিয় পাত্র পাল্টা তোপ দাগেন।
এদিকে, এদিন প্রথমে রাইপুরের ফুলকুসমায় প্রথম কর্মিসভাটি করেন সুব্রতবাবু। সেখান থেকে তিনি ওখানকারই হলুদকানালি মাঠে গিয়ে দ্বিতীয় সভাটি করেন। সেখান থেকে এদিন সন্ধ্যা নাগাদ তিনি সারেঙ্গার শুখাডালি গ্রামে গিয়ে আরও একটি কর্মিসভা করেন। এদিনের কর্মিসভাগুলিতে তিনি একদিকে যেমন রাজ্য সরকারের উন্নয়নের বার্তা তুলে ধরেন। তেমনই কেন্দ্রীয় সরকার গত লোকসভা ভোটের আগে একগুচ্ছ প্রতিশ্রুতি দিয়েও কোনও কাজ করেনি বলেও উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, বিজেপি ক্ষমতায় আসার আগে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, যারা দেশের টাকা নিয়ে বিদেশে পালিয়ে গিয়েছে তাদের সব ঘাড় ধরে টাকা সমেত নিয়ে আসা হবে। এখন জিজ্ঞেস করবেন, কত থলি টাকা নিয়ে এসেছে। পাশাপাশি পুলওয়ামার ঘটনা নিয়েও তিনি এদিন নরেন্দ্র মোদিকে কটাক্ষ করেন। কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্রের ওই তৃণমূল প্রার্থী। এদিন সারেঙ্গার কর্মিসভা থেকে নরেন্দ্র মোদিকে কটাক্ষ করেন।