আত্মীয়স্বজন, বন্ধু-বান্ধব সমাগমে আনন্দ বৃদ্ধি। চারুকলা শিল্পে উপার্জনের শুভ সূচনা। উচ্চশিক্ষায় সুযোগ। কর্মক্ষেত্রে অযথা হয়রানি। ... বিশদ
মঙ্গলবার বেলা গড়াতেই ঘনিয়ে আসে কালো আঁধার। ঝমঝমিয়ে শুরু হয় বৃষ্টি। সঙ্গে প্রবল হাওয়া। কলকাতায় সর্বত্র কার্যত এক ছবি। দেড় থেকে দু’ঘণ্টা ধরে চলে তুমুল বৃষ্টি। প্রথমে উত্তর কলকাতা, তারপর ভারী বৃষ্টি চলে দক্ষিণ এবং সংযুক্ত কলকাতাতেও। যার জেরে জলমগ্ন হয়ে পড়ে প্রায় গোটা শহর। উল্টোডাঙ্গা, বাগমারি, খান্না, মানিকতলা, বেলেঘাটা, সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ, ডালহৌসি, ধর্মতলা, বাইপাস, বেহালা, মোমিনপুর, গার্ডেনরিচ সহ বৃহত্তর কলকাতার কোথাও কার্যত হাঁটুজল, কোথাও তার থেকেও বেশি জল জমে যায়। বহু রাস্তাতেই গাড়ি প্রায় অর্ধেক ডুবে থাকতে দেখা গিয়েছে। উল্টোডাঙ্গা আন্ডারপাসে ডুবে যায় যাত্রীবোঝাই বাস। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান স্থানীয় ৩ নম্বর বরোর কো-অর্ডিনেটর অনিন্দ্য রাউত। একে একে যাত্রীদের বের করে উল্টোডাঙ্গা স্টেশনে নিয়ে আসা হয়। উত্তর কলকাতার একাধিক অলিগলিতেও ছিল হাঁটু সমান জল। জলমগ্ন হয়ে পড়ে রাজ্য বিধানসভা। টালিগঞ্জ ট্রাম ডিপোর কাছে এম এন সেন লেনে একটি গাছ কাত হয়ে পড়লে পুরকর্মীরা গিয়ে সেই গাছ কেটে রাস্তা পরিষ্কার করেন।
রাজভবনের সামনে যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে কলকাতা পুরসভার মুখ্য প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম বলেন, ওই লাইনে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ ছিল বলে জেনেছি। বাতিস্তম্ভে আলো জ্বলছিল না। তবে এটা ঠিক যে, ওই লাইনে হুকিং করা ছিল। এফআইআর করার নির্দেশ দিয়েছি। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে, নাকি বজ্রপাতে, তা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলেই জানা যাবে। আলো বিভাগের ডিজিকে এই ঘটনার তদন্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, পুরসভার পক্ষ থেকে মৃতের পরিবারকে দু’ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।
এদিন শহরের ৭৪টি পাম্পিং স্টেশনে ৩৭৭টি পাম্প চালিয়েছে পুর কর্তৃপক্ষ। একটানা পাম্প চালিয়েও দ্রুত জল নামানো যায়নি। নিকাশি বিভাগ সূত্রে খবর, মাত্রাতিরিক্ত বৃষ্টির কারণেই নাজেহাল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। পাম্প এক ঘণ্টায় গড়ে ২০ মিলিলিটার বৃষ্টির জল নামাতে পারে। কিন্তু এদিন গড়ে ঘণ্টায় ৬০-৬৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। মূলত, দুপুর ২টো থেকে ৩টে পর্যন্ত তুমুল বৃষ্টি হয়। উল্টোডাঙ্গা, মানিকতলা, বেলগাছিয়া অঞ্চলে মাত্রাতিরিক্ত বৃষ্টি হয়েছে। তারপর বৃষ্টি কমতে শুরু করে। তবে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বিক্ষিপ্তভাবে উত্তর ও দক্ষিণ কলকাতায় অল্পস্বল্প বৃষ্টি হয়েছে।
পুর কর্তাদের দাবি, ঘণ্টা তিনেকের মধ্যেই অনেকটা জল নামানো গিয়েছে। নিকাশি বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত তথা প্রশাসক বোর্ডের সদস্য তারক সিং জানিয়েছেন, শহরের বিভিন্ন পাম্পিং স্টেশনের যা ক্ষমতা, তার তুলনায় বহুগুণ বেশি বৃষ্টি হয়েছে। আবার বৃষ্টি চলাকালীন গঙ্গার লকগেট বন্ধ ছিল। ফলে সেই সময় জল নামেনি। সাড়ে ৩টের পর লকগেটগুলি গেট খুলে দেওয়া হয়। রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত সেগুলি খোলা ছিল। ওই সময়ের মধ্যে গোটা শহরের জল নেমে গিয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি।