মানসিক অস্থিরতা দেখা দেবে। বন্ধু-বান্ধবদের থেকে দূরত্ব বজায় রাখা দরকার। কর্মে একাধিক শুভ যোগাযোগ আসবে। ... বিশদ
গ্রাহকের পাশাপাশি কর্মদাতার কাজ সহজ করার উদ্দেশ্যে দেশজুড়ে পিএফ গ্রাহকের জন্য একটি করে নম্বর বরাদ্দ করেছে এমপ্লয়িজ প্রভিডেন্ট ফান্ড অর্গানাইজেশন। সেই ইউনিভার্সাল অ্যকাউন্ট নম্বর প্রত্যেকের ক্ষেত্রে আলাদা। ওই নম্বরের সঙ্গে আধার নম্বর যোগ করার জন্য দেশজুড়ে উদ্যোগ নেয় পিএফ দপ্তর। কিন্তু তাতে এ রাজ্যে সিংহভাগ গ্রাহকই সাড়া দেননি। সর্বশেষ পাওয়া তথ্য বলছে, এ রাজ্যে ইউএএন আছে, এমন পিএফ গ্রাহকের সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৭০ লক্ষ। তার মধ্যে আধার সংযোগ হয়েছে সাড়ে ২৭ লক্ষ গ্রাহকের। অর্থাৎ আধার সংযোগ নেই প্রায় ৬০ শতাংশ গ্রাহকের।
আধার সংযোগের ক্ষেত্রে অবশ্য মোটামুটি ভালো জায়গায় আছে কলকাতা। এখানে প্রায় ৯ লক্ষ ৭৮ হাজার গ্রাহকের মধ্যে প্রায় ৭৬ শতাংশ গ্রাহক আধার সংযোগ করিয়ে নিয়েছেন। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সংযোগের হার ৭৫ শতাংশ। মোবাইল সংযোগ বাকি আছে ২২ শতাংশ, এমনটাই জানিয়েছেন কলকাতার আঞ্চলিক পিএফ কমিশনার নবেন্দু রাই। তবে জেলাগুলির অবস্থা বেশ খারাপ। সবচেয়ে কম আধার সংযোগ হয়েছে দার্জিলিংয়ে। দার্জিলিং পিএফ অফিসের আওতায় থাকা প্রায় ৫৪ শতাংশ গ্রাহকের আধার সংযোগ বাকি। গোটা উত্তরবঙ্গেই খারাপ অবস্থা। জলপাইগুড়ি, শিলিগুড়ি এবং বহরমপুরে আধার সংযোগ বাকি আছে বেশ খানিকটা। দপ্তরের কর্তারা বলছেন, উত্তরবঙ্গে চা শ্রমিকদের মধ্যে সচেতনতা না থাকা এবং মুর্শিদাবাদ ও সংলগ্ন এলাকার বিড়ি শ্রমিকদের গাছাড়া ভাবের কারণে আধার সংযুক্তিকরণ পিছিয়ে পড়ছে। এ রাজ্যের আওতায় থেকে কাজ করে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ। সেখানেও পরিস্থিতি যথেষ্ট খারাপ বলে জানাচ্ছেন দপ্তরের কর্তারা।
একটা সময় ছিল, যখন পিএফের কোনও পরিষেবা পেতে হলে জুতোর সুখতলা খোয়াতে হতো। সেই যুগের অবসানে উদ্যোগ নেয় কেন্দ্রীয় শ্রমমন্ত্রক। তারা এমপ্লয়িজ প্রভিডেন্ট ফান্ড অর্গানাইশেনকে আরও বেশি করে স্বচ্ছ এবং গ্রাহকমুখী করে তোলার কথা ঘোষণা করে। সেই উদ্দেশ্যেই চালু হয় ইউএএন। একসময় অবসর নেওয়া বা ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রেই কর্মীরা পিএফ নেওয়ার কথা কথা ভাবতেন। কিন্তু সেই দিন আর নেই। চাকরি করার সময়ই পিএফ তোলা থেকে শুরু করে একগুচ্ছ নতুন পরিষেবাও চালু হয়েছে দপ্তরে।
সেই পরিষেবা নেওয়ার ক্ষেত্রে ঝঞ্ঝাট এড়াতেই আধারের সঙ্গে ইউএএন যোগ করার বিষয়টিকে বাড়তি গুরুত্ব দিতে চেয়েছে দপ্তর। নবেন্দু রাইয়ের কথায়, দপ্তরে দুর্নীতি রুখতে এবং স্বচ্ছতা আনতে আমরা গ্রাহকের সব পাওনা অনলাইনে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তাছাড়া ইউএএনের সঙ্গে আধার সংযোগ এমন কিছু কঠিন ব্যাপার নয়। সেই কাজ কর্মচারীরা সহজেই করতে পারেন। তাতে সমস্যাগুলি এড়িয়ে যাওয়া যাবে।
পিএফের সঙ্গে আধার সংযোগে কেন এতটা পিছিয়ে রাজ্য? দপ্তরের কর্তারা বলছেন, প্রথমত, এই সমস্যা শুধু রাজ্যের নয়, দেশের প্রায় সর্বত্রই। তাছাড়া পিএফের নথিতে গ্রাহকের যে বয়স জানানো আছে, বহু ক্ষেত্রেই আধারের সঙ্গে তা মিলছে না। তাতে বহু গ্রাহক আধার সংযোগ করাতে পারছেন না। বর্তমানে সেই সমস্যার সমাধানে অবশ্য নিয়ম অনেকটাই শিথিল করেছে দপ্তর, বলছেন কর্তারা।