মানসিক অস্থিরতা দেখা দেবে। বন্ধু-বান্ধবদের থেকে দূরত্ব বজায় রাখা দরকার। কর্মে একাধিক শুভ যোগাযোগ আসবে। ... বিশদ
বেশ কয়েকটি জেলায় সমীক্ষা চালিয়েছেন কমিশনের কর্তারা। সঙ্গে দু’টি বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাও কাজ করেছে। যেসব বাচ্চার সঙ্গে কথা বলেছে সমীক্ষক দল, তাদের বেশিরভাগই জানিয়েছে, তারা স্কুল ছেড়ে দিয়েছে। তার মূল কারণ পারিবারিক অশান্তি। যার জন্য বাচ্চারা কার্যত অবহেলিত হচ্ছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এই প্রবণতা কমবয়সি শিশুদের মধ্যে দেখা গিয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, অশান্তির জেরে বাবা বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছেন। আর্থিক দায়িত্ব পালনেও অস্বীকার করেন। সংসার চালানোর জন্য একটু বেশি বয়সে ছেলেরা স্কুল ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। বাড়িতে ঝগড়াঝাটির সময় রাগের বশে বাচ্চাদের বইখাতা আগুনে ফেলে দেওয়ার ঘটনাও ঘটে। সেজন্য পড়াশুনা ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছে, এমন বাচ্চাদেরও দেখা পেয়েছে সমীক্ষক দল।
সমীক্ষায় আরও বলা হয়েছে, অনেক সময় পারিবারিক অশান্তি এমন পর্যায় চলে যায়, যার ফলে বাড়িতেই থাকতে চায় না বাচ্চারা। কিছু ক্ষেত্রে একেবারে গুটিয়ে না থেকে আগ্রাসী হয় এবং বদ মেজাজি হয়ে ওঠে তারা। বাড়িতে রোজকার ঝামেলার কারণে পঠনপাঠনে মনযোগী হতে পারে না শিশুরা। ফলে স্কুলে পরীক্ষার ফল খারাপ হয়। কিছু বাচ্চা জানিয়েছে, যেদিন বাবা-মায়ের মধ্যে চরম ঝগড়া হয়, সেদিন তারা স্কুলে যেতে পারে না। গুরুত্বপূর্ণ ক্লাস মিস হয়ে যাওয়ায় পড়াশুনা ব্যাহত হচ্ছে।
পুরুলিয়ায় একটি পরিবারে অশান্তির জেরে সাংসারিক খরচ দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলেন বাবা। মা কর্মরত হওয়ায় আর্থিক সঙ্কট না হলেও, তাঁদের দুই বাচ্চার পড়াশুনা ব্যাহত হয়। বিভিন্ন পরীক্ষায় তাদের ফল আরও খারাপ হয়েছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার একটি বেসরকারি স্কুলের ছাত্র এমন গার্হস্থ্য অশান্তির শিকার হয়েছে। বাবা-মায়ের ঝগড়ার জেরে তার আচরণে পরিবর্তন এসেছে। বাড়ির ঝগড়াঝাটির জন্য পাড়ায় অনেক কিছু শুনতে শুনতে ঘরকুনো হয়ে পড়েছে সে। পড়াশুনায় আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে।
এমন পরিস্থিতিতে শিশু সুরক্ষা কমিটিগুলির ভূমিকা এবং ক্ষমতা বৃদ্ধি করা দরকার বলে মত সমীক্ষা রিপোর্টের। গ্রাম এবং ওয়ার্ড ভিত্তিক এমন কমিটির সংখ্যা বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার কথাও বলা হয়েছে। লাগাতার প্রচার এবং সচেতনতামূলক কর্মসূচি নেওয়ারও প্রয়োজন রয়েছে বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, পারিবারিক হিংসার ক্ষেত্রে যে আইন রয়েছে, তাতে শিশুদের বিষয়টি কিছুটা উপেক্ষিত। তাই সেখানে কিছু সংশোধন করার দরকার আছে। বাচ্চাদের মানসিক অবস্থা দেখার জন্য কাউন্সেলিংয়ের প্রয়োজন রয়েছে। স্কুলগুলিতে এমন ব্যবস্থা রাখার কথা বলা হয়েছে ওই রিপোর্টে।