নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ‘ন্যায়বিচার’-এর দাবি তুলে আন্দোলন জিইয়ে রাখার বাধ্যবাধকতা, নাকি মরণাপন্ন রোগীদের বাঁচাতে শেষ চেষ্টা করার বিবেকবোধ— সোমবার এ নিয়ে গভীর রাতের জিবি বৈঠকে আর জি করের আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তাররা প্রায় আড়াআড়ি বিভক্ত হয়ে গিয়েছিলেন। জিবিতে উপস্থিত একদল জুনিয়র ডাক্তার আবেগের সঙ্গে বলেন, এই মুহূর্তে হাসপাতালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সত্তরেরও বেশি রোগী ভর্তি আছেন, আমরা কর্মবিরতি করায় তাঁদের প্রাণ সংশয় হতে পারে। বেশ কয়েকজন এমন রোগী আছেন, যাঁরা ভেন্টিলেশনে রয়েছেন। সিনিয়রদের পক্ষে আর চাপ নেওয়া অসম্ভব। আমরা ফলো আপ না করলে যে কোনও সময় এইসব রোগীর মৃত্যু হতে পারে। অন্যদিকে, একটি অংশ আন্দোলন জিইয়ে রাখা আর কর্মবিরতি চালু রাখার পক্ষে মত দিতে থাকে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মানা জরুরি, অভয়ার ন্যায়বিচারের জন্য কর্মবিরতি চালাতেই হবে, শুধুমাত্র ইমার্জেন্সি চালু থাক— এমন অসংখ্য মত তৈরি হয়। তখনই আন্দোলনকারীদের একাংশ বলে, ৭৪ জন মরণাপন্ন রোগী আছেন। তাঁদের মধ্যে পিকুতে আছে ১৯টি বাচ্চা। এসএনসিইউতে ২৬ জন, ট্রমা কেয়ারের সিকুতে ১০ জন। এছাড়াও কার্ডিওলজির আইটিইউতে ৪ জন, আইসিসিইউতে ৩ জন, নিউরো এইচডিইউতে ৭ জন, সিসিইউতে ৩ জন, গাইনি এইচডিইউতে ২ জন রোগী আছেন। তাঁদের বাঁচাবে কে? ছোট বাচ্চাগুলির কথা আমরা ভাবব না? একদল বলে, যাঁদের অবস্থা তুলনামূলক ভালো, তাঁদের কিছুটা সুস্থ করে ছুটির কথা ভাবতে হবে। আর বাকি যাঁদের আরও ৭-১০ দিন থাকা জরুরি, যে যাই ভাবুক, তাঁদের চিকিৎসা চালাতে হবে।
এই ধরনের পরিস্থিতিতে কী করা উচিত, সেই উত্তর পেতে আগামীকাল আর জি করে কনভেনশনের ডাক দেওয়া হয়েছে। আহ্বান জানানো হয়েছে সিনিয়র ডাক্তারদেরও। জানতে চাওয়া হবে, তাঁদের কী মত? যদি তাঁরা বলেন কর্মবিরতি প্রত্যাহার করা উচিত, জানতে চাওয়া হবে কেন। না হলে কর্মবিরতি চলবে। তেমন হলে কর্মবিরতি প্রত্যাহারও করা হতে পারে। তখন খোঁজা হবে আন্দোলনের অন্য পথ। এদিকে, এদিন পিজি হাসপাতালের জুনিয়র ডাক্তাররা দাবি আদায়ে সিনিয়রদের গণ ইস্তফা দিতে অনুরোধ করবেন বলে জানা গিয়েছে। জুনিয়র ডাক্তারদের মুখপাত্র ডাঃ অনিকেত মাহাত বলেন, আমাদের স্বাস্থ্য পরিষেবার অন্যতম স্তম্ভ হলেন সিনিয়র ডাক্তাররা। আমাদের স্যররা। তাঁদের মতামত জানতে কনভেনশন ডাকা হয়েছে। এদিকে, সিবিআই স্ক্যানারে থাকা বিতর্কিত ডাঃ বিরূপাক্ষ বিশ্বাসের আইএমএ’র প্রাথমিক সদস্যপদ খারিজ করা হয়েছে।