কাপড়ের ব্যবসায় অগ্রগতি। পেশাদার শিল্পীদের পক্ষে দিনটি শুভ। উচ্চ/উচ্চতর শিক্ষায় উন্নতি। ... বিশদ
সোমবার ঘটনাটি ঘটছে নিত্যানন্দ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। অশোকনগর পুরসভার সাত নম্বর ওয়ার্ডে রয়েছে স্কুলটি। পড়ুয়ার অভাবে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ। ফলে এক প্রভাবশালী ঠিকাদার তাঁর অধীনে কাজ করা শ্রমিকদের বলে দিয়েছেন, ‘স্কুলে থাক’। এ জন্য কারও অনুমতি নেননি তিনি। ঘটনাটি গোপনে হচ্ছে এমনটাও নয়। অশোকনগর-কল্যাণগড় পুরসভার চেয়ারম্যান প্রবোধ সরকার পর্যন্ত ওয়াকিবহাল। তিনি বলেন, ‘বিদ্যালয়টি বন্ধ হয়ে রয়েছে। সেখানে রাস্তার কাজ করা কিছু শ্রমিক থাকছেন।’
নিত্যানন্দ স্কুল প্রতিষ্ঠা হয় ১৯৫৯ সালে। পড়ুয়ার অভাবে ২০ বছর ধরে বন্ধ। স্কুলের টিনের ছাউনি নষ্ট হয়ে গিয়েছে। শ্রমিকদের বসবাসের জন্য সেই নষ্ট হওয়া টিনে দেওয়া হয়েছে ত্রিপল। ভেতরের তিনটি ঘরে চেয়ার-টেবিল কিছু নেই। কেবল রয়েছে রান্নার সরঞ্জাম। পাশাপাশি ঘুমনোর জন্য রয়েছে মশারি আর বালিশ। সবুজ রঙের দরজা ভেঙে গিয়েছে। ঠিকাদার নিজের উদ্যোগেই বিদ্যুতের সংযোগ করেছেন। তিনটি ঘরেই ঝুলছে ইলেকট্রিকের তার। পাখা বসেছে। সিমেন্টের মেঝেতে ইট দিয়ে তৈরি হয়েছে উনুন। বিদ্যালয়ের সামনে ফেলে রাখা স্টোন চিপ-বালি। বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রশাসন সব জেনেও মুখ বন্ধ করে রাখায় সরকারি একটি সম্পত্তি প্রায় বেহাত হতে বসেছে। আস্ত একটি স্কুল হয়ে উঠেছে বসতবাড়ি। রোজ ভাত-ডাল-মাছ রান্না হয়। ছুটিছাটায় মাংস হয়। এই শ্রমিকরা পুরসভা এলাকার রাস্তার কাজ করেন। দিনের পর দিন ধরে তাঁরা বসবাস করছেন। ঝাড়খণ্ড থেকে কাজ করতে এসেছেন শ্রমিক মুন্না কর্মকার। তিনি বলেন, ‘আমরা অত বুঝি না। ঠিকাদার থাকতে দিয়েছে। তাই থাকছি।’ পাশে ছিলেন আর একজন। তিনি নিজের নাম বললেন না। উল্টে প্রায় চেঁচিয়ে উঠলেন, ‘এটা স্কুল হলে তো পড়াশোনা হওয়া উচিত। তা হচ্ছে কী? এটাই আমাদের বাড়ি। আপনি এবার যান।’
নবান্ন থেকে সরকারি জমি ও সম্পত্তির দখলদারি নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং। তারপরও দখলদারি সরাতে যে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না, এই চিত্র তার হাতেগরম প্রমাণ। এলাকার নাগরিকরা অবশ্য সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীর বার্তার পর। তাঁদের বক্তব্য, ‘জবরদখলের বিরুদ্ধে পুরসভা ও শিক্ষাদপ্তরের অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।’ পুরসভার চেয়ারম্যান অবশ্য শেষে বলেছেন, ‘সরকারি সম্পত্তিতে এই ধরনের দখলদারি যাতে না হয় তার জন্য পুরসভা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে। দপ্তরের সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলব।’