যে কোনও কর্মেই একটু বাধা থাকবে। তবে উপার্জন মন্দ হবে না। ললিতকলায় ব্যুৎপত্তি ও স্বীকৃতি। ... বিশদ
লিঙ্গ-বৈষম্যের বেড়াজাল ভেঙে এবছর মায়ের হাতেই মায়ের আরাধনায় মেতে উঠেছে উল্টোডাঙার বিধান নিবাস আবাসন। পুজোর অন্যতম কর্ত্রী পত্রালি ঘোষ বললেন, ‘এবার আমাদের পুজোর ৩৯তম বর্ষ। এই প্রথম মহিলারা মিলে পুজোর আয়োজন করছি। তবে পুরুষদের সহযোগিতা অবশ্যই রয়েছে।’ বিধান নিবাসের পুজোর বেশ কয়েকটি বিশেষত্ব রয়েছে। যেমন, এখানে মা দুর্গাসহ প্রত্যেক দেবদেবীরই সোনা-রুপোর গয়না ও অস্ত্রশস্ত্র রয়েছে। আবাসিকরাই দিয়েছেন। পুজোর দিনগুলিতে আবাসনের ১১৮টি ফ্ল্যাটে ভোগ পাঠানো হয়। আর নাচ, গান, নাটকে জমজমাট পুজো সন্ধ্যা অবশ্যই বাড়তি পাওনা।
সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার আকর্ষণ রয়েছে কালিকাপুর মাদুরদহের দিশারী এস্টেট আবাসনেও। আবাসিকরা মিলেই তৈরি করেছেন কালচারাল সোসাইটি। আবাসনের ১২৫টি পরিবারের সদস্যরাই অনুষ্ঠানে অংশ নেন। এবছর তাদের শারদোৎসব ১২ বছরে পা দিল। গতবার অনুষ্ঠান ছিল ভার্চুয়াল। কিন্তু, এবার সেসব নেই। সোসাইটির কালচারাল আহ্বায়ক পার্থ দত্তবিশ্বাস জানালেন, ‘পুজোর চারদিনই ভোগ ও অন্যান্য খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা থাকবে।’ দক্ষিণ কলকাতায় গড়িয়ার প্রুডেন্ট প্রাণা আবাসনের দুর্গাপুজো এবার ষষ্ঠ বর্ষে পদার্পণ করছে। পঞ্চমীর দিন উদ্বোধনের পর প্রয়াত সংগীত শিল্পী কে কে, লতা মঙ্গেশকর, নির্মলা মিশ্র, সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের স্মরণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে। বাংলার পটশিল্পে সেজে উঠছে ই এম বাইপাসের ধারের অভিষিক্তা আবাসনের পুজো মণ্ডপ। অন্যতম উদ্যোক্তা জয়দীপ মিত্র জানিয়েছেন, আবাসিকদের পুজো হলেও এই আনন্দ ভাগ করে নেওয়া হবে সুন্দরবনের জয়গোপালপুর বিকাশ কেন্দ্রের পড়ুয়াদের সঙ্গে। গত বছরের মতো এবারও সপ্তমীর সকালে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন সেখানকার ছাত্রছাত্রীরা। পুজোর পাঁচদিন সকলের জন্য থাকছে খাওয়ার ব্যবস্থা।
পিছিয়ে নেই শহরতলির আবাসনও। বাঙালিয়ানার ছোঁয়া থাকছে সোদপুর বিটি রোডের মার্লিন ম্যাক্সিমাসের এবারের পুজোয়। এবছর তাদের ভাবনা ‘ঘরের মেয়ে’। তৈরি হয়েছে খড়ের মণ্ডপ। মাতৃ আরাধনা ঘিরে ষষ্ঠী থেকে দশমী পর্যন্ত একাত্মতার সুতোয় বাঁধা পড়েন আবাসনের ৪৭৪টি পরিবার। আবাসনের সাধারণ সম্পাদক অমিত গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘পুজোর দিনগুলিতে একসঙ্গে খাওয়াদাওয়ার পাশাপাশি থাকছে নাটক, আঁকা, ফ্যাশন শো, গানের আসর।’
যশোর রোডের ইমামি সিটি আবাসনের হাজারেরও বেশি পরিবার এবছর সাবেকিয়ানার আমেজে মাতৃ আরাধনায় ব্রতী হয়েছেন। মৃৎশিল্পী প্রদীপ রুদ্র পালের তৈরি মাতৃ মূর্তিতেও সাবেকিয়ানার স্পর্শ। কমিটির অন্যতম সদস্য গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘করোনার জন্য গত দু’বছর অনেক বিধিনিষেধ ছিল। এবার তা নেই। ষষ্ঠী থেকে অষ্টমী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন আবাসনের বাসিন্দারা। থাকবে ব্যান্ডের অনুষ্ঠানও। নবমীতে হবে ডান্ডিয়া নৃত্য।’ রঘুনাথপুরের সরকারবাগান দিশা আবাসনের পুজো এবার ১৫তম বর্ষে পা রাখল। সভাপতি পরিমল ভট্টাচার্য জানালেন, ‘চারদিন দারুণ আনন্দে কাটে। একসঙ্গে খাওয়াদাওয়া, গল্পগুজবের পাশাপাশি রয়েছে সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার আয়োজন।’