যে কোনও কর্মেই একটু বাধা থাকবে। তবে উপার্জন মন্দ হবে না। ললিতকলায় ব্যুৎপত্তি ও স্বীকৃতি। ... বিশদ
হুগলির মানকুণ্ডু সিগনাম পার্কউডস এস্টেটের আবাসিকদের পুজো এবার চতুর্থ বর্ষের। এই আবাসিকদের প্রথম থেকেই লক্ষ্য ছিল, পুজো মানে মহামিলনের উৎসব। তাই পুজোর সঙ্গে জুড়েছে সাংস্কৃতিক উৎসব। চন্দননগরের জগদ্ধাত্রীর আদলে এখানকার পুজো মৃন্ময়ী এবং ডাকের সাজে সজ্জিতা সনাতনী। প্রতিদিনই বেদমন্ত্রের উচ্চারণ যেমন রীতি তেমনি নানা আদলের সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা হচ্ছে রেওয়াজ। নতুনত্ব আনতে এসেছে প্রতিযোগিতামূলক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। শ্রীমান-শ্রীমতী, ধুনুচি নাচ, ফ্যাশন শোয়ের আয়োজন থাকছে। পুজো সম্পাদক শুভাশিস বসুরায় বলেন, পুজো আমাদের সনাতনী। নিজস্ব আনন্দ খুঁজে তার সঙ্গে থাকে নানা আয়োজন আর পংক্তিভোজন, যা অনুষ্ঠানকে সার্থক মিলন মেলা করে তোলে।
শ্রীরামপুরের মাহেশ জগন্নাথঘাট লেনের পুজো এবার থিমের। স্থায়ী মন্দিরে থাকবেন সনাতন সাজে দেবী দশভুজা। আর তার পাশেই গড়ে তোলা হচ্ছে এক চিলতে মিশর। ফ্যারাও ইমহোটেপের তৈরি ধাপযুক্ত পিরামিডের বাহার দেখা যাবে মণ্ডপে। আদিগন্ত বালুরাশির মধ্যে মুখ তুলবে মডেল উট আর আনুবিস, মিশরের শেয়ালমুখো দেবতা। আর থাকবে হায়ারোগ্লিফিক লিপির মডেল। ক্লাবকর্তা দিব্যেন্দু বালিয়াল বলেন, সনাতনী পুজো আর আধুনিকতার এক অনবদ্য যুগলবন্দি।
স্বাধীনতা ক্রমশ এগিয়ে চলছে শতবর্ষের দিকে। আর সেই সময়েও মাটির ঠাকুর ঘরে পুজিতা হন একদা বিপ্লবীদের আত্মশক্তির উৎস দেবী দশভুজা। উত্তরপাড়ার চট্টোপাধ্যায় পরিবারের পুজোর গায়ে আজও লেগে আছে গর্বের অনেক স্মৃতি। ১৭২১ সালে শুরু হয়েছিল পুজো। সেই ইস্তক মাটির ঠাকুরঘর এখনও বর্তমান। এই বাড়িরই দুই প্রথিতযশা সন্তান বিপ্লবী অমরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায় আর ননীবালা দাসী। বলা হয়, এই পুজোমণ্ডপে বিপ্লবীদের অনেকেই পা রেখেছেন। সেই তালিকায় বাঘাযতীন থেকে সুভাষচন্দ্র বসুর নামও আছে। এই মাটির ঠাকুরঘরে বসে ভক্তি গদগদ চিত্তে গান গেয়েছেন নজরুল ইসলাম। সেসব দিনের কথা এখনও পুজো এলেও যেন স্মৃতির ডালি উপচে সুগন্ধী ফুলের মতো নেমে আসে। আর মহামিলনের নানাবর্ণের সমাবেশে এক বিচিত্র কোলাজ হয়ে ভাস্বর হয় গঙ্গাপাড়ের প্রাচীন জনপদ, হুগলি।