বিদ্যায় অধিক পরিশ্রম করতে হবে। ব্যবসায় যুক্ত ব্যক্তির পক্ষে দিনটি শুভ। প্রেম-প্রীতিতে আগ্রহ বাড়বে। নতুন ... বিশদ
ঘটনা (২): কলকাতার হেস্টিংস থানা এলাকায় গঙ্গা লাগায়ো একটি বিশাল বাগানবাড়িতে এক বৃদ্ধ একাই থাকতেন। কর্মসূত্রে তাঁর ছেলে বিদেশে ছিলেন। ওই বৃদ্ধ কলকাতায় কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ একটি সংস্থায় কাজ করতেন। অবসর নেওয়ার কয়েক বছর পরের কথা। বিদেশ থেকে ছেলে বহুবার বাবাকে ফোন করেও না পাওয়ায় তিনি আত্নীয়স্বজনকে বিষয়টি জানান। কলকাতায় ফিরে বৃদ্ধের পুত্র জানতে পারেন, তাঁর বাবা রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছেন। তিনি থানায় অভিযোগ জানান। কিন্তু বৃদ্ধের খোঁজ মেলেনি। পুলিস তদন্তে নেমে জানতে পারে, ওই বৃদ্ধের নিখোঁজ হওয়ার পিছনে রয়েছে জমি হাঙরদের একাংশের হাত। সেই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত আজও ‘ফেরার’।
সংবাদপত্রের পাতায় এই ধরনের ঘটনার খবর মাঝেমধ্যেই দেখা যায়। সেই কারণেই শহরের প্রবীণ নাগরিকদের সতর্ক করতে কলকাতা পুলিস তাদের প্রচার পুস্তিকায় এই নিয়ে একগুচ্ছ সুপরামর্শও দিয়েছে। সেখানে প্রবীণ নাগরিকদের জন্য পুলিসের প্রস্তাব— (১) সদর দরজায় ম্যাজিক আই, নিরাপত্তা চেন এবং স্বয়ংক্রিয় তালা যেন লাগানো হয়। সম্ভব হলে যেন বাড়িতে একটি কুকুর রাখা হয়। (২) দরজা খোলার আগে যেন ম্যাজিক আই দিয়ে অবশ্যই দেখে নেওয়া হয়। (৩) সকাল ও সন্ধ্যায় ভ্রমণের সময় বৃদ্ধ বৃদ্ধারা যেন কয়েকজন মিলে একত্রে চলাফেরা করেন। (৪) টেলিফোনে যেন ‘সিএলআই’ ব্যবস্থা রাখা হয়। (৫) গুরুত্বপূর্ণ ফোন নম্বরগুলি যেন হাতের কাছে রাখা হয়। (৬) বাড়ির আশপাশে যদি কোনও সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে দেখা যায়, তাহলে যেন অতি অবশ্যই স্থানীয় থানা ও প্রতিবেশীদের নজরে আনা হয়। (৭) ঘুমনোর সময় দরজা যেন ভিতর থেকে বন্ধ রাখা হয়। (৮) যথাযথ পুলিসি পরীক্ষার পর যেন বাড়ির পরিচারক, ড্রাইভার, নিরাপত্তারক্ষী এবং ভাড়াটিয়াকে রাখা হয়। (৯) পরিচিত অথবা আবাসন সমিতির অনুমোদিত কলের মিস্ত্রি, ইলেকট্রিক মিস্ত্রি, ছুতোর সহ অন্যান্য শ্রমিকদেরই যেন কাজে লাগানো হয়।
প্রবীণ নাগরিকেদের প্রতি কলকাতা পুলিসের আরও পরামর্শ— বাড়িতে মূল্যবান সামগ্রী যেন বেশি রাখা না হয়। অন্য লোক দেখতে পায়, এমনভাবে টাকা ও সোনার গয়না বাড়িতে না রাখাটাই শ্রেয়। অপরিচিত ব্যক্তি, ক্যুরিয়ারের লোক, হকার প্রমুখদের বাড়ির ভিতরে যেন প্রবেশ করতে না দেওয়া হয়। কোনও অন্ধকার বা নির্জন স্থানে চলাফেরা না করা। বাড়ির কাজের লোকের কাছে যেন নিজের গতিবিধি প্রকাশ না করা হয়। কোনও অপরিচিতের কাছ থেকে কোনও খাবার গ্রহণ না করা।
এ বিষয়ে অবসরপ্রাপ্ত বিচারক ডঃ নীরদরঞ্জন ঘোষের মন্তব্য, কলকাতা পুলিসের তরফে যে সর্তকবার্তা দেওয়া হয়েছে, তা যদি প্রবীণ নাগরিকরা মেনে চলেন, তাহলে তাঁরা অনেকাংশেই উপকৃত হবেন। নানা অপরাধ রোখা সম্ভব হবে।