মানসিক অস্থিরতা দেখা দেবে। বন্ধু-বান্ধবদের থেকে দূরত্ব বজায় রাখা দরকার। কর্মে একাধিক শুভ যোগাযোগ আসবে। ... বিশদ
অন্যদিকে, শিল্পাঞ্চলের ভাঙাচোরা শ্রমিক সংগঠনকে গোছাতে সঞ্জীবনী সুধা হিসেবে ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচিকে সামনে আনতে চাইছে তৃণমূল। আজ, ডিএসপিতে তৃণমূলের শ্রমিক নেতারা শ্রমিকদের দিদিকে বলো কার্ড বিলি করবেন। এদিকে, মঙ্গলবার পশ্চিম বর্ধমানের ব্লক স্তর থেকে জেলা স্তরের নেতাদের নিয়ে বৈঠকে করেছে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। সেখানে প্রশান্ত কিশোরও হাজির ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। সর্বস্তরে সমন্বয় বাড়ানোর পাশাপাশি ধারাবাহিক বৈঠক ও রাজনৈতিক কর্মসূচি নেওয়ার উপর জোর দেওয়া হয়েছে।
তৃণমূলের জেলা সভাপতি জিতেন্দ্র তেওয়ারি বলেন, জেলা কো-অর্ডিনেটর সহ জেলার নেতাদের নিয়ে আমরা বিধানসভা ভিত্তিক রিভিউ মিটিং শুরু করছি। কুলটি বিধানসভা এলাকা থেকে সেই বৈঠক শুরু হচ্ছে। একমাসের মধ্যে ন’টি বিধানসভা এলাকায় রিভিউ মিটিং করা হবে। দিদিকে বলো কর্মসূচি কতটা সফল তা উপনির্বাচনের ফল থেকেই পরিষ্কার। নেতারা শ্রমিকদের কার্ড বিতরণ করতেই পারেন।
নিয়ম করে জেলা সফরে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক বৈঠক অত্যন্ত সফল। মুখ্যমন্ত্রীর সেই মডেলকে অনুসরণ করে জেলা প্রশাসনের আমলারাও ব্লকে ব্লকে গিয়ে প্রশাসনিক কাজের তদারকি করছেন। এমনকী, এই উদ্যোগকে গ্রামে গ্রামে ছড়িয়ে দিতে মরিয়া তাঁরা। মানুষ সমস্ত সরকারি সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন কি না তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এবার একই পথে হাঁটতে চলেছে তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব। ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিম বর্ধমান জেলায় শাসক দলের বিপর্যয় নেমে এসেছিল। মন্ত্রী থেকে মেয়র প্রত্যেকের বিধানসভা এলাকাতেই বিজেপি প্রার্থী তৃণমূল প্রার্থীর থেকে বেশি ভোট পেয়েছিলেন। এমনকী, দুর্গাপুরের দু’টি আসনে শাসক দলের থেকে বিপুল ভোটে এগিয়ে থাকার সুবাদে এসএস আলুওয়ালিয়া দুর্গাপুর-বর্ধমান আসন থেকে জয়লাভ করেন। এই পরাজয়ের পিছনে একদিকে যেমন বিজেপি হাওয়ার প্রভাব ফেলেছিল, তেমনই শাসক দলের নেতাদের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব সামনে এসেছিল। লোকসভা ভোটে হোঁচট খাওয়ার পরেও যে সেই দূরত্ব কমেছে, এমন দাবি তৃণমূল নেতারাও করেন না। বিষয়টি জানে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বও। তাই এবার বিধানসভা এলাকা ধরে ধরে রিভিউ মিটিংয়ের আয়োজন করে নিজেদের মধ্যে সম্পর্ক আরও দৃঢ় করতে চাইছে তারা।
পাশাপাশি কোনও সমস্যা থাকলে তা অনুধাবন করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপও নিতে চাইছে তারা। কুলটির বিধায়ক উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে শাসক দলের একটি অংশের বিরোধ বলে অভিযোগ। এদিনের বৈঠকে বিধায়ক ছাড়াও সেখানকার কাউন্সিলার থেকে শুরু করে সব জনপ্রতিনিধিরাই হাজির থাকবেন।
অন্যদিকে, তৃণমূলের মাথাব্যথার আর এক কারণ জেলার শ্রমিক সংগঠন। দীর্ঘ আট বছরেরও বেশি সময়ে তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় থাকলেও এখনও আসানসোল-দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে শ্রমিক সংগঠনের ঐক্যবদ্ধ চেহারা তুলে ধরতে ব্যর্থ শাসক শিবির। ডিএসপিই হোক বা ইস্কো সর্বত্রই সমস্যা রয়েছে। ঐক্যবদ্ধ চেহারা না থাকায় বাড়তি সুবিধা পায় বিরোধী দলগুলি। এমনকী, এএসপি, সিএলডব্লুর বিলগ্নিকরণ সহ বিভিন্ন কারখানা বন্ধ হয়ে গেলেও কেন্দ্রের বিজেপির বিরুদ্ধে যে পরিমাণ আন্দোলন সংগঠিত করা সম্ভব হতো, তা হয়নি। বাম, কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠন সেখানে লং মার্চের মতো কর্মসূচি শুরু করেছে, তখনও কিছু বিক্ষিপ্ত কর্মসূচি নিয়েই দায় সেরেছেন তৃণমূলের শ্রমিক নেতারা। তাই এবার শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের দিয়ে দিদিকে বলো কর্মসূচি করে ঘুরে দাঁড়াতে চাইছে শাসক দল।
আজ, বৃহস্পতিবার ডিএসপিতে শ্রমিকদের দিদিকে বলো কার্ড বিলি করবেন তৃণমূলের শ্রমিক নেতারা। ডিএসপির কর্মচারী তথা দুর্গাপুর-১ ব্লকের যুগ্ম আহ্বায়ক জয়ন্ত রক্ষিত বলেন, আমরা আজ থেকে দিদিকে বলো কার্ড শ্রমিকদের দেব। তাঁদেরও অনেক সমস্যা আছে। তা তাঁরা সরাসরি দিদিকে জানাবেন।