মানসিক অস্থিরতা দেখা দেবে। বন্ধু-বান্ধবদের থেকে দূরত্ব বজায় রাখা দরকার। কর্মে একাধিক শুভ যোগাযোগ আসবে। ... বিশদ
জল্পনা চলছে, বিলটিতে নতুন কী কী সংশোধনী আনা হয়েছে? সরকারি সূত্রের খবর, এই বিলে বলা হয়েছে নাগাল্যান্ড, মণিপুর, অরুণাচল প্রদেশের মতো যে রাজ্যগুলিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে ইনার লাইন পারমিট প্রথা চালু রয়েছে, সেই রাজ্যের ওইসব এলাকায় নাগরিকত্ব বিল কার্যকর হবে না। আবার একইভাবে অসম, ত্রিপুরাসহ উত্তর পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলির যে অংশকে ষষ্ঠ তফসিলভুক্ত বিশেষ সুরক্ষা দেওয়া হয়েছে, সেখানেও বলবৎ হবে না নাগরিকত্ব বিলের বিধি। নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের প্রধান প্রতিপাদ্য হল, ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত পাকিস্তান, বাংলাদেশ, আফগানিস্তান থেকে হিন্দু, জৈন, শিখ, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ও পার্সি সম্প্রদায়ের যে মানুষেরা ভারতে চলে এসেছে, তাদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। কারণ, তাদের বিবেচনা করা হবে শরণার্থী হিসাবে। এই ৬ সম্প্রদায়ের বাইরে কাউকে ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়া হবে না। অর্থাৎ পরোক্ষে এই বিলের অর্থ হল মুসলিমরা এই সুযোগ পাবে না। প্রসঙ্গত, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ দফায় দফায় জানিয়েছেন যে, নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের পাশাপাশি এনআরসি গোটা ভারতেই কার্যকর করা হবে।
সুতরাং আজ কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল অনুমোদনের পর সংসদে বিল পাশ হয়ে গেলে, এরপর এই আইন চালুর পর এনআরসি প্রক্রিয়াও শুরু হবে। অসমের এনআরসির ক্ষেত্রে বলা হয়েছিল ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের পরে ভারতে আসা অনুপ্রবেশকারীদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে না। সেইমতোই অসমের এনআরসি থেকে সাড়ে ১৯ লক্ষ মানুষ বাদ গিয়েছেন।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল আজ অনুমোদিত হওয়ার সংবাদ ছড়াতেই অসম ও উত্তর পূর্ব ভারতে প্রবল বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। কারণ অসমের অনুপ্রবেশ বিরোধী আন্দোলনকারীদের অভিযোগ হল, অসম চুক্তির সম্পূর্ণ বিপরীত এই নাগরিকত্ব বিল। অসমে সত্তরের দশকে যে অনুপ্রবেশ বিরোধী আন্দোলন শুরু হয়, সেই আন্দোলনের মূল অভিমুখই ছিল হিন্দু মুসলমান বাছাই করে নয়, যে কোনও বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীকেই অসম থেকে বহিষ্কার করতে হবে। ওই আন্দোলন ও দাবির ভিত্তিতেই রচিত হয় অসম চুক্তি ১৯৮৫ সালে।
অসমে যে এনআরসি তালিকা অবশেষে চূড়ান্ত হয়েছে সেখানেও তাই দেখা যাচ্ছে সাড়ে ১৯ লক্ষ বেআইনি নাগরিকের তালিকায় সাড়ে ১২ লক্ষই হিন্দু। এর ফলে দেশের অন্যত্র আতঙ্ক ছড়ায় যে হিন্দুরাও বাদ চলে যাচ্ছে এনআরসি থেকে। অসমের এনআরসির ক্ষেত্রে নিয়ম ছিল অসম-চুক্তির ভিত্তিতে। অর্থাৎ ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের আগে যারা বাংলাদেশ থেকে এসেছে একমাত্র তারাই নাগরিক হিসাবে স্বীকৃতি পাবে। এই কারণেই অসমে নাগরিকত্ব বিল নিয়ে প্রতিবাদ, বিক্ষোভ শুরু হয়েছে আগেই। গত কয়েকদিন ধরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, রাজনৈতিক দল, সমাজসেবী সঙ্ঘ, বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। তারপরই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পেশ করা হবে। যদিও আজ থেকেই কংগ্রেস, তৃণমূল, সিপিএম জানিয়ে দিয়েছে, এই বিল অসাংবিধানিক। সুতরাং তীব্র বিরোধিতা করা হবে সংসদে। রাজ্যসভায় সরকারের গরিষ্ঠতা নেই। পাশাপাশি অসম কংগ্রেস জানিয়েছে, এই বিল পাশ করা হলে সুপ্রিম কোর্টে যাবে তারা।